চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পথচারীসহ এলাকাবাসী। জনমনে বিরাজ করছে আতংক।
ইতোমধ্যে বোয়ালখালী পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল মাঠে ছেড়ে দিতে পারছেন না বলে অনেকের অভিযোগ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের অবাধ বিচরণ দেখা গেলেও সম্প্রতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে স্কুলগামী কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না কুকুরের ভয়ে। কোন কোন সময় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়ার সময় তাদের হাতে খাবার থাকলে এসব কুকুর আক্রমণ করে এবং ভয়ে তাদের খাবার ফেলে পালাতে দেখা গেছে । এতে অভিভাবকরাও আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড এলাকার মুক্তা বড়ুয়া, কধুরখীল এলাকার তুম্পা দে পৌর সদরের সায়রা বেগম বলেন, প্রতিদিন ভোরে উঠে বাড়ির আশপাশে ১০-১২টি কুকুর দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করে। খেত খামার নষ্ট করে দেয়। এসব কুকুরগুলো কোত্থেকে আসে জানি না। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেশির ভাগ সময় ঘরের দরজা বন্ধ রাখতে হয়। একই কথা জানান ওই এলাকার একাধিক ভুক্তভোগী।
বিশেষ করে পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে কিংবা অলিতে-গলিতে এসব কুকুরের দল বেশি দেখা যায়। রাতে লোকজনের চলাচল একটু ফাঁকা হলেই কুকুরগুলো জড়ো হয় এবং পথচারীদের ওপর চিৎকার দিয়ে আক্রমণ করতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ১২ জুন থেকে ১৪ জুন শনিবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পশ্চিম গোমদ-ীর আবু তাহেরের ছেলে তাহসান (৪), পশ্চিম শাকপুরার নিজামের ছেলে তাকওয়া (১০), রাশেদের মেয়ে শেফা (৫), খিতাপচর সারোয়াতলীর জামালের ছেলে মুহিম (৯), শাকপুরা ২ নম্বর ওয়ার্ডের সওদাগরপাড়ার ওসমান গণির মেয়ে আরিফা আক্তার (১০), চরখিজিরপুর এলাকার আহাদ(৬) ও হুমায়রা (৪)।
তাছাড়া কুকুরের কারণে মোটরসাইকেল চালকরা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া যেখানে সেখানে কুকুরের মলত্যাগেও পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। কুকুর কামড়ালে রোগীর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা পৌরসভায়ও সরকারি বরাদ্দের কোন ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এ ভ্যাকসিন ঔষুধের দোকানে পাওয়া গেলেও দোকানিরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখনই বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী।
চরখিজিরপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক জানান, বৃহস্পতিবার আমি ঘরের পাশে বিদ্যুতের কাজ করছিলাম। সেই সুযোগে আমার ভাইয়ের ছেলে আহাদকে (৬) একটি কুকুর এসে কামড়ে দেয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটিকে আঘাত করতে গেলে কুকুরটি ছুটে গিয়ে আমার ভাগিনা হুমায়রাকেও (৪) কামড়ে দেয়।
ওসমান গণি জানান, তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে আরিফা আক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সঞ্জয় সেন বলেন, কুকুরের কামড়ে আহত ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের মুখ ও গলায় কামড় দিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রহমত উল্লাহ বলেন, বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে আইনগত বাধা থাকায় দিন দিন এদের বংশবৃদ্ধি পেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে কিনা তা আলোচনা করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কানিজ ফাতেমা বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন করতে পারছি না। তবে কুকুরের বন্ধ্যাত্বকরণের ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা এ ব্যাপারে আগামী মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পথচারীসহ এলাকাবাসী। জনমনে বিরাজ করছে আতংক।
ইতোমধ্যে বোয়ালখালী পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল মাঠে ছেড়ে দিতে পারছেন না বলে অনেকের অভিযোগ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের অবাধ বিচরণ দেখা গেলেও সম্প্রতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে স্কুলগামী কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না কুকুরের ভয়ে। কোন কোন সময় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়ার সময় তাদের হাতে খাবার থাকলে এসব কুকুর আক্রমণ করে এবং ভয়ে তাদের খাবার ফেলে পালাতে দেখা গেছে । এতে অভিভাবকরাও আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড এলাকার মুক্তা বড়ুয়া, কধুরখীল এলাকার তুম্পা দে পৌর সদরের সায়রা বেগম বলেন, প্রতিদিন ভোরে উঠে বাড়ির আশপাশে ১০-১২টি কুকুর দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করে। খেত খামার নষ্ট করে দেয়। এসব কুকুরগুলো কোত্থেকে আসে জানি না। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেশির ভাগ সময় ঘরের দরজা বন্ধ রাখতে হয়। একই কথা জানান ওই এলাকার একাধিক ভুক্তভোগী।
বিশেষ করে পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে কিংবা অলিতে-গলিতে এসব কুকুরের দল বেশি দেখা যায়। রাতে লোকজনের চলাচল একটু ফাঁকা হলেই কুকুরগুলো জড়ো হয় এবং পথচারীদের ওপর চিৎকার দিয়ে আক্রমণ করতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ১২ জুন থেকে ১৪ জুন শনিবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পশ্চিম গোমদ-ীর আবু তাহেরের ছেলে তাহসান (৪), পশ্চিম শাকপুরার নিজামের ছেলে তাকওয়া (১০), রাশেদের মেয়ে শেফা (৫), খিতাপচর সারোয়াতলীর জামালের ছেলে মুহিম (৯), শাকপুরা ২ নম্বর ওয়ার্ডের সওদাগরপাড়ার ওসমান গণির মেয়ে আরিফা আক্তার (১০), চরখিজিরপুর এলাকার আহাদ(৬) ও হুমায়রা (৪)।
তাছাড়া কুকুরের কারণে মোটরসাইকেল চালকরা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া যেখানে সেখানে কুকুরের মলত্যাগেও পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। কুকুর কামড়ালে রোগীর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা পৌরসভায়ও সরকারি বরাদ্দের কোন ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এ ভ্যাকসিন ঔষুধের দোকানে পাওয়া গেলেও দোকানিরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখনই বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী।
চরখিজিরপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক জানান, বৃহস্পতিবার আমি ঘরের পাশে বিদ্যুতের কাজ করছিলাম। সেই সুযোগে আমার ভাইয়ের ছেলে আহাদকে (৬) একটি কুকুর এসে কামড়ে দেয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটিকে আঘাত করতে গেলে কুকুরটি ছুটে গিয়ে আমার ভাগিনা হুমায়রাকেও (৪) কামড়ে দেয়।
ওসমান গণি জানান, তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে আরিফা আক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সঞ্জয় সেন বলেন, কুকুরের কামড়ে আহত ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের মুখ ও গলায় কামড় দিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রহমত উল্লাহ বলেন, বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে আইনগত বাধা থাকায় দিন দিন এদের বংশবৃদ্ধি পেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে কিনা তা আলোচনা করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কানিজ ফাতেমা বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন করতে পারছি না। তবে কুকুরের বন্ধ্যাত্বকরণের ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা এ ব্যাপারে আগামী মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।