কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ১৫টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে সরকারের কোনো রকম তদারকি ছাড়াই। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই হালনাগাদ লাইসেন্স বা বৈধ কাগজপত্র নেই, যা একদিকে রোগীদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী মাস থেকে উপজেলা পর্যায়ে অভিযান শুরু হবে জানিয়েছে প্রশাসন।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কোটবাজার, মরিচ্যা, কুতুপালং ও পালংখালীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোট ১৫টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, অনেক মালিক শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সিভিল সার্জন অফিসে আবেদন করেই প্রতিষ্ঠান চালু করে বসেছেন, অনুমোদন বা বৈধ লাইসেন্স পাওয়ার আগেই।
সচেতন মহল এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যে, সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমোদন না আসা পর্যন্ত কীভাবে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। এসব প্রতিষ্ঠান শুধু যে লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে তা নয়, তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের শর্তাবলীও মানছে না। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক ছাড়পত্রও নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের অবৈধ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ রোগীদের ওপর। এক্স-রে থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে, অথচ সেবার মান নিয়ে রয়েছে চরম অসন্তোষ। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডিপ্লোমাধারী বা অভিজ্ঞ ল্যাব টেকনিশিয়ান কিংবা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। নামে মাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ল্যাব পরিচালনা করছেন, যার ফলে রোগীদের অসংখ্য ভুল রিপোর্ট পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। ভুল রিপোর্টের কারণে ভুল চিকিৎসা এবং তার ফলস্বরূপ রোগীদের শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। একদিকে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার কারণে রোগমুক্তিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
এদিকে গত ২৫ জুন জেলা সিভিল সার্জন অফিসের একটি পরিদর্শন দল উখিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শন করে। সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে এই পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাজেদুল ইমরান শাওন, ডাঃ আসাদ এবং উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নুরুল আলম। পরিদর্শনকালে কোনো প্রতিষ্ঠানই তাদের হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র ও লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।
পরিদর্শন দলের সদস্যদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোটবাজারের অরিজিন হাসপাতাল, লাইফ কেয়ার, কুতুপালংয়ের পালং জেনারেল হাসপাতাল এবং পালংখালীর তাজমান হাসপাতাল ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের লাইসেন্স নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে, কিন্তু সেগুলো এখনো নবায়ন হয়নি। অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো কেবল লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে। এমনকি অনেক প্যাথলজি ল্যাব কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আবেদনও করেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাসরিন জেবিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশে বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করে হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, অনেক ক্লিনিক ও হাসপাতাল পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়নি এবং অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদুল হক এক পরিদর্শন জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, উখিয়ায় কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, উখিয়ার হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর হালনাগাদ লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি জেলা টাস্কফোর্স কমিটিকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের মাধ্যমে আগামী মাস থেকে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ১৫টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে সরকারের কোনো রকম তদারকি ছাড়াই। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই হালনাগাদ লাইসেন্স বা বৈধ কাগজপত্র নেই, যা একদিকে রোগীদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী মাস থেকে উপজেলা পর্যায়ে অভিযান শুরু হবে জানিয়েছে প্রশাসন।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কোটবাজার, মরিচ্যা, কুতুপালং ও পালংখালীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোট ১৫টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, অনেক মালিক শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সিভিল সার্জন অফিসে আবেদন করেই প্রতিষ্ঠান চালু করে বসেছেন, অনুমোদন বা বৈধ লাইসেন্স পাওয়ার আগেই।
সচেতন মহল এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যে, সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমোদন না আসা পর্যন্ত কীভাবে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। এসব প্রতিষ্ঠান শুধু যে লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে তা নয়, তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের শর্তাবলীও মানছে না। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক ছাড়পত্রও নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের অবৈধ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ রোগীদের ওপর। এক্স-রে থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে, অথচ সেবার মান নিয়ে রয়েছে চরম অসন্তোষ। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডিপ্লোমাধারী বা অভিজ্ঞ ল্যাব টেকনিশিয়ান কিংবা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। নামে মাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ল্যাব পরিচালনা করছেন, যার ফলে রোগীদের অসংখ্য ভুল রিপোর্ট পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। ভুল রিপোর্টের কারণে ভুল চিকিৎসা এবং তার ফলস্বরূপ রোগীদের শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। একদিকে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার কারণে রোগমুক্তিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
এদিকে গত ২৫ জুন জেলা সিভিল সার্জন অফিসের একটি পরিদর্শন দল উখিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শন করে। সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে এই পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাজেদুল ইমরান শাওন, ডাঃ আসাদ এবং উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নুরুল আলম। পরিদর্শনকালে কোনো প্রতিষ্ঠানই তাদের হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র ও লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।
পরিদর্শন দলের সদস্যদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোটবাজারের অরিজিন হাসপাতাল, লাইফ কেয়ার, কুতুপালংয়ের পালং জেনারেল হাসপাতাল এবং পালংখালীর তাজমান হাসপাতাল ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের লাইসেন্স নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে, কিন্তু সেগুলো এখনো নবায়ন হয়নি। অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো কেবল লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে। এমনকি অনেক প্যাথলজি ল্যাব কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আবেদনও করেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাসরিন জেবিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশে বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করে হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, অনেক ক্লিনিক ও হাসপাতাল পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়নি এবং অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদুল হক এক পরিদর্শন জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, উখিয়ায় কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, উখিয়ার হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর হালনাগাদ লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি জেলা টাস্কফোর্স কমিটিকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের মাধ্যমে আগামী মাস থেকে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।