alt

সারাদেশ

নেত্রকোনায় চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারণা

প্রতিনিধি, নেত্রকোনা : সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

সমাজ কল্যান সমিতির নামে প্রতিষ্ঠিত নেত্রকোণা পৌর শহরের সাতপাই নদীর পাড় চক্ষু হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সঙ্গে করা হয়েছে চরম প্রতারণা। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয় ওভুক্তভোগীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে জেলার হতদরিদ্র মানুষদের চোখের চিকিৎসায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু হয় নেত্রকোণা চক্ষু হাসপাতাল। বেশকজন মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সমাজিক ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে করা হয় পরিচালনা পর্ষদ। পদাধিকার বলে সভাপতি রাখা হয় জেলা প্রশাসকে। শুরুর দিকে চিকিৎসায় সহযোগিতা করে ময়মনসিংহের কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল। কিন্তু পরিচলনা পর্ষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সাবেক সভাপাতি জেলা আওয়ামী লীগ) মতিউর রহমান খানের পারিবারিক অধিপত্যে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এরপর থেকে একচ্ছত্র আধিপত্যে নানা অনিয়ম অব্যস্থাপনাতেই চলে চক্ষু চিকিৎসা। পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি জেলা প্রশাসক থাকলেও ছিল না তেমন কোনো নজরদারি। ফলে প্রকাশ্যই হয়েছে নানা অনিয়ম। সময় সুযোগে বিভিন্ন দপ্তর থেকে আনা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সরকারি সহায়তা ও অর্থ যার অধিকাংশই হয়েছে আত্মসাৎ।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সাবেক সম্পাদকের ক্ষমতাবলে ছোট বোন পরিচয়ে নাজমুন্নাহার মিনা নামে এক (কথিত প্যারামেডিক্স বিশেষজ্ঞ ) কে চক্ষু ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসার নামে করা হয়েছে চরম প্রতারণা। যিনি নিয়মিত রোগীদের সঙ্গে করেছেন অসদাচরন। তার নিয়ন্ত্রণে অমিত সরকার ও সাইফুল ইসলাম নামে ওষুধ কোম্পানির দুই প্রতিনিধির সহায়তায় হাসপাতাল বারান্দায় খোলা হয় ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্র। চলে অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধের রমরমা বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম। এসব অনিয়মের প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে ছিলেন হাসপাতালের সাবেক সম্পাদকের একমাত্র মেয়ে অর্পিতা খানম সুমি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এক সময় তেমন অর্থবিত্ত না থাকলেও বর্তমানে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন কথিত মিনা ডাক্তার। মালিক হয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থের। কোটি টাকা ব্যায়ে রেলক্রসিং চানখাঁর মোড় এলাকায় বড় ভাই মতিউর রহমান এর বাড়ির পাশেই করেছেন বিলাস বহুল বাড়ি। যদিও তার আয়ের উৎস নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। ট্যাক্স ও মানুষের চোঁখ ফাঁকি দিতে নিয়েছেন ব্যাংক লোন।

এসব অভিযোগ তুলে ধরে ২০২১-২২ সালেই সরেজমিন ভিডিও সংবাদ প্রচার হয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে। সত্যতা থাকায় তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামলাতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেন। শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি ও স্বচ্চ প্রক্রিয়ায় পরিচালনা পর্ষদ গঠনে নির্দেশনা দেন। কিন্তু অধ্যবদি সেই নির্দেশনার কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। যদিও তৎকালীন জেলা প্রশাসক বদলির আদেশ ও শেষ কার্যদিনে তড়িগড়ি করে তারিখ বিহীন একটি সংশোধিত গঠনতন্ত্রে স্বাক্ষর করার অভিযোগ উঠে- যা পরবর্তীতে বাতিল বলে গণ্য করেন স্বাক্ষরকারী জেলা প্রশাসক। এই সুযোগে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের উধাসীনতা ও অবহেলায় এখনও চলছে অনিয়ম।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সাবেক সম্পাদক পরিবার ও ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের পরামর্শে একজন ডাক্তার নিয়মিত বসলেও তিনি চোখের চিকিৎসক নন যা নিশ্চিত করেন কর্মরত ডাক্তার রেজওয়ানুল হক মো. সায়েম। কিন্তু প্রতিদিন অন্তত অর্ধশত ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধির পদচারনায় মুখর থাকে হাসপাতাল চত্বর। এতে চরমভাবে প্রতারনার স্বীকার হচ্ছেন রোগীরা। সকাল ৯টায় হাসপাতাল খোলা হলেও ডাক্তার আসেন দুপুর ১২টায়। টিকিট বিক্রয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নিলেও দীর্ঘদিন ছিল না কোনো আয় ব্যায়ের হিসেব। সম্প্রতি সমাজ সেবার তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবুও অপারেশন তালিকায় নয় ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। সপ্তাহে ৫-১০ জন স্বচ্ছল রোগীর সানি অপসারন ও ল্যান্স বসানো হলেও কাগজে কলমে দেখানো হয়েছে কম। দুস্থ ও অস্বচ্ছল দেখিয়েও আত্মসাৎ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

এদিকে সদ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, কবির রায়হান নামে অনিয়মিত একজন চিকিৎসক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সপ্তাহে একদিন অপারেশন করতে আসেন। কিন্তু হাসপাতালটিতে রিফ্লেক্সমেন্ট হিসেবে কর্মরত আলাদীনকে তিনি নেত্রকোণা চক্ষু হাসপাতাল প্যাডে দিয়েছেন প্রাথমিক চিকিৎসার প্রত্যায়নপত্র। এরপর থেকে এই প্রত্যায়নপত্র ব্যবহার করে বিনা বাঁধায় বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ফটকে নিয়মিত দিচ্ছেন চোখের চিকিৎসা। (চিকিৎসা পত্র লিখার ভিডিও ও অবলিলায় দেয়া একাধিক বক্তব্যে তিনি নিজেকে প্রথামিক চিকিৎসক বলে দাবি করেন।) দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম চললেও নেয়া হয়নি আইনগত ব্যবস্থা। এমতাবস্থায় বিগত সময়ে চলা নানা অনিয়ম অব্যস্থাপনার সুষ্ট তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা। সমাজসেবার তত্ত্বাবধানে প্রকৃত চক্ষু চিকিৎসক দ্বারা চোখের চিকিৎসা নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগ নেয়ার দাবি তাদের। তবে এসব অনিয়ম অব্যবস্থাপনা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়েছেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম।

শুধু আশ্বাস নয়, প্রতিষ্ঠানটির বিগত সময়ের আয় ব্যায় ও নিয়োগ সংক্রান্ত সব তথ্য যাচাই বাছাইসহ ভবিষ্যতে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, রোগীদের সঠিক সেবা প্রদান ও অনিয়ম অব্যস্থাপনা তদন্তে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ। এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

ছবি

মুরাদনগরে ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

ছবি

নওগাঁয় ৯০টি খামারে তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার

বরমচাল চা বাগানের ইতি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

তারাগঞ্জ প্রাণীসম্পদ অফিস চত্বরে ফুলের চারাগাছ রোপন

বটিয়াঘাটায় ব্যবসায়ীদের মাঝে পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ বিতরণ

কলারোয়ায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান

পীরগাছায় ছেলের অপরাধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাবার ওপর নির্যাতন

নোয়াখালীতে বিধবাকে গণধর্ষণ

কাজে ফিরেছেন হিলি কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ছবি

প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করার জরিমানা

শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক কারাগারে

সমিতির জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে শোকে মৃত্যু

ছবি

নবীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩

কুষ্টিয়ায় সেতুর টোল আদায় বন্ধে দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, যানজট, ভোগান্তি

নড়াইলে এইচএসসিতে সেট পরিবর্তন কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে অব্যাহতি

ছবি

ভৈরবে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ বাড়িঘর ভাঙচুর, আহত ১০

চিলমারী তেল ডিপো রক্ষায় কুড়িগ্রামে শ্রমিকদের মানববন্ধন

মোহনগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের জৌলুস

ছবি

চিলমারীতে অসময়ের বন্যা পাটচাষিরা চিন্তিত

ছবি

সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার পণ্য আটক করল সুনামগঞ্জ বিজিবি

প্রেমের টানে ভারতীয় যুবক লালমনিরহাটে

মহাদেবপুরে অতিরিক্ত ধানচাল মজুদ জেল-জরিমানা, ধান কেনা বন্ধ

ছবি

৬৭০ টাকার বীজ ধান ৭’শ ৫০ টাকা বিক্রি!

সন্তান জন্ম দিয়ে পরীক্ষা দিলেন অদম্য ইশা

জেলা আ.লীগের সভাপতি নাছির দুই দিনের রিমান্ডে

ছবি

বেনাপোল বন্দরে পানি নিষ্কাশনের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

সিদ্ধিরগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ফারিহা

ছবি

বেড়িবাঁধের দুই কিলোমিটার রাস্তাটি এখন গলার কাঁটায়

কালীগঞ্জে হোল্ডিং ট্যাক্স ইস্যুতে পৌরবাসীর সঙ্গে ইউএনওর সরাসরি সংলাপ

ছবি

এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়ায় বেনাপোল বন্দরে কার্যক্রম শুরু

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৯,৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার

চট্টগ্রামে জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের জন্য নতুন প্রকল্প : কার্যক্রম চলবে ৬ জেলায়

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান আটক ৩

নারায়ণগঞ্জে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা লাঞ্ছিত

tab

সারাদেশ

নেত্রকোনায় চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারণা

প্রতিনিধি, নেত্রকোনা

সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

সমাজ কল্যান সমিতির নামে প্রতিষ্ঠিত নেত্রকোণা পৌর শহরের সাতপাই নদীর পাড় চক্ষু হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সঙ্গে করা হয়েছে চরম প্রতারণা। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয় ওভুক্তভোগীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে জেলার হতদরিদ্র মানুষদের চোখের চিকিৎসায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু হয় নেত্রকোণা চক্ষু হাসপাতাল। বেশকজন মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সমাজিক ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে করা হয় পরিচালনা পর্ষদ। পদাধিকার বলে সভাপতি রাখা হয় জেলা প্রশাসকে। শুরুর দিকে চিকিৎসায় সহযোগিতা করে ময়মনসিংহের কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল। কিন্তু পরিচলনা পর্ষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সাবেক সভাপাতি জেলা আওয়ামী লীগ) মতিউর রহমান খানের পারিবারিক অধিপত্যে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এরপর থেকে একচ্ছত্র আধিপত্যে নানা অনিয়ম অব্যস্থাপনাতেই চলে চক্ষু চিকিৎসা। পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি জেলা প্রশাসক থাকলেও ছিল না তেমন কোনো নজরদারি। ফলে প্রকাশ্যই হয়েছে নানা অনিয়ম। সময় সুযোগে বিভিন্ন দপ্তর থেকে আনা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সরকারি সহায়তা ও অর্থ যার অধিকাংশই হয়েছে আত্মসাৎ।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সাবেক সম্পাদকের ক্ষমতাবলে ছোট বোন পরিচয়ে নাজমুন্নাহার মিনা নামে এক (কথিত প্যারামেডিক্স বিশেষজ্ঞ ) কে চক্ষু ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসার নামে করা হয়েছে চরম প্রতারণা। যিনি নিয়মিত রোগীদের সঙ্গে করেছেন অসদাচরন। তার নিয়ন্ত্রণে অমিত সরকার ও সাইফুল ইসলাম নামে ওষুধ কোম্পানির দুই প্রতিনিধির সহায়তায় হাসপাতাল বারান্দায় খোলা হয় ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্র। চলে অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধের রমরমা বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম। এসব অনিয়মের প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে ছিলেন হাসপাতালের সাবেক সম্পাদকের একমাত্র মেয়ে অর্পিতা খানম সুমি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এক সময় তেমন অর্থবিত্ত না থাকলেও বর্তমানে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন কথিত মিনা ডাক্তার। মালিক হয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থের। কোটি টাকা ব্যায়ে রেলক্রসিং চানখাঁর মোড় এলাকায় বড় ভাই মতিউর রহমান এর বাড়ির পাশেই করেছেন বিলাস বহুল বাড়ি। যদিও তার আয়ের উৎস নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। ট্যাক্স ও মানুষের চোঁখ ফাঁকি দিতে নিয়েছেন ব্যাংক লোন।

এসব অভিযোগ তুলে ধরে ২০২১-২২ সালেই সরেজমিন ভিডিও সংবাদ প্রচার হয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে। সত্যতা থাকায় তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামলাতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেন। শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি ও স্বচ্চ প্রক্রিয়ায় পরিচালনা পর্ষদ গঠনে নির্দেশনা দেন। কিন্তু অধ্যবদি সেই নির্দেশনার কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। যদিও তৎকালীন জেলা প্রশাসক বদলির আদেশ ও শেষ কার্যদিনে তড়িগড়ি করে তারিখ বিহীন একটি সংশোধিত গঠনতন্ত্রে স্বাক্ষর করার অভিযোগ উঠে- যা পরবর্তীতে বাতিল বলে গণ্য করেন স্বাক্ষরকারী জেলা প্রশাসক। এই সুযোগে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের উধাসীনতা ও অবহেলায় এখনও চলছে অনিয়ম।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সাবেক সম্পাদক পরিবার ও ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের পরামর্শে একজন ডাক্তার নিয়মিত বসলেও তিনি চোখের চিকিৎসক নন যা নিশ্চিত করেন কর্মরত ডাক্তার রেজওয়ানুল হক মো. সায়েম। কিন্তু প্রতিদিন অন্তত অর্ধশত ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধির পদচারনায় মুখর থাকে হাসপাতাল চত্বর। এতে চরমভাবে প্রতারনার স্বীকার হচ্ছেন রোগীরা। সকাল ৯টায় হাসপাতাল খোলা হলেও ডাক্তার আসেন দুপুর ১২টায়। টিকিট বিক্রয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নিলেও দীর্ঘদিন ছিল না কোনো আয় ব্যায়ের হিসেব। সম্প্রতি সমাজ সেবার তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবুও অপারেশন তালিকায় নয় ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। সপ্তাহে ৫-১০ জন স্বচ্ছল রোগীর সানি অপসারন ও ল্যান্স বসানো হলেও কাগজে কলমে দেখানো হয়েছে কম। দুস্থ ও অস্বচ্ছল দেখিয়েও আত্মসাৎ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

এদিকে সদ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, কবির রায়হান নামে অনিয়মিত একজন চিকিৎসক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সপ্তাহে একদিন অপারেশন করতে আসেন। কিন্তু হাসপাতালটিতে রিফ্লেক্সমেন্ট হিসেবে কর্মরত আলাদীনকে তিনি নেত্রকোণা চক্ষু হাসপাতাল প্যাডে দিয়েছেন প্রাথমিক চিকিৎসার প্রত্যায়নপত্র। এরপর থেকে এই প্রত্যায়নপত্র ব্যবহার করে বিনা বাঁধায় বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ফটকে নিয়মিত দিচ্ছেন চোখের চিকিৎসা। (চিকিৎসা পত্র লিখার ভিডিও ও অবলিলায় দেয়া একাধিক বক্তব্যে তিনি নিজেকে প্রথামিক চিকিৎসক বলে দাবি করেন।) দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম চললেও নেয়া হয়নি আইনগত ব্যবস্থা। এমতাবস্থায় বিগত সময়ে চলা নানা অনিয়ম অব্যস্থাপনার সুষ্ট তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা। সমাজসেবার তত্ত্বাবধানে প্রকৃত চক্ষু চিকিৎসক দ্বারা চোখের চিকিৎসা নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগ নেয়ার দাবি তাদের। তবে এসব অনিয়ম অব্যবস্থাপনা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়েছেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম।

শুধু আশ্বাস নয়, প্রতিষ্ঠানটির বিগত সময়ের আয় ব্যায় ও নিয়োগ সংক্রান্ত সব তথ্য যাচাই বাছাইসহ ভবিষ্যতে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, রোগীদের সঠিক সেবা প্রদান ও অনিয়ম অব্যস্থাপনা তদন্তে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ। এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

back to top