alt

সারাদেশ

২০০ বছরের সূর্যপুরী আমগাছ ডালে ডালে ঝুলছে আম

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও : শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দেশের সর্ব উত্তরের সিমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। পিচঢালা পথের দুই পাশে সারি সারি গাছ। ডানে-বাঁয়ে ফসলি জমি, ঝোপঝাড় এঁকেবেঁকে এগিয়ে গেছে দিগন্তে। দূরে সবুজ টিলার ওপর দাঁড়িয়ে সুবিশাল বট কিংবা অশ্বত্থের মতো গাছ। কাছে যেতেই চোখ পরে সেই সূর্যপুরী আমগাছ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী মন্ডুমালা গ্রামে মাটি আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে দেশের একমাত্র ঐতিহাসিক সূর্যপুরী আমগাছ।

কিন্তু একটি আমগাছ দেখতে যদি আপনাকে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকতে হয়? শুনে অবাক লাগলেও সূর্যপুরী আমগাছকে দেখতে এখন ভিড় করছেন শত শত মানুষ টিকিট কেটে দেখছেন। যা শুধু বালিয়াডাঙ্গী বা ঠাকুরগাঁও নয়, সমগ্র এশিয়ায় ‘লতা’ বা প্রশস্ত শাখাযুক্ত এই জাতের একটি গজবৃক্ষ। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ঐতিহাসিক এই গাছের বয়স প্রায় ২০০ বছরের অধিক। আজ অবধি গাছটি শুধু বেঁচে আছে তাই নয়, বরং প্রতি বছর ফলন দিয়েও মুগ্ধ করছে এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের।

দুই বিঘা জমির উপরে বিস্তৃত গাছটির উচ্চতা প্রায় ৯০ ফুট। উঁচু এই গাছটির শাখাগুলো মাটির দিকে নেমে আবার উঠে গেছে। গাছটির ছায়ায় ঢোকার পর যেন এক প্রাকৃতিক ছাউনি, এক অন্যরকম আবহ। তার ডালপালা এতটাই বিস্তৃত যে নিচে দাঁড়িয়ে পুরোটা এক ফ্রেমে ধরাও দায়।

গাছটির শাখা চওড়াই প্রায় ৩৫ ফুট। এতে প্রায় ১৯টি মোটা ডাল, প্রত্যেকের দৈর্ঘ্য ৪০ বা ৫০ ফুট, যা মাটির দিকে ঝুঁকে আবার উঠছে দেখতে যেন ‘অক্টোপাস’ এর মতো। এই গাছের সূর্যপুরী আম স্বাদে অতুলনীয়। স্থানীয়রা বলছেন, এর অনন্য স্বাদ, ঘ্রাণ ও মিষ্টতা আজকের বাজারজাত সূর্যপুরীর তুলনায় ‘অপরিমেয়’ সরস ও ঘন। এছাড়া, এই গাছের আমগুলো বাজারে সাধারণ সূর্যপুরীর দামে পাওয়া যায় না, প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার কারণে দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুন পর্যন্ত বাড়ে।

প্রতি বছর এটি ১০০ বা ২০০ মণ ফল দেয় এবং প্রতিটি আমের ওজন দাঁড়ায় ২০০ বা ২৫০ গ্রাম। যা প্রতি কেজি এবার ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান গাছ লিজ নেওয়া ব্যক্তি মো. সাদেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে তিন বছরের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা গাছটি আমি লিজ নিয়েছি। এতে প্রথম বছরেই আমি দেড় লাখ টাকা আম বিক্রি করেছি। পরের বছরে ১ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এবছর আশা করছি ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবো। আর এ গাছের আম আমাদের বাজারে বিক্রি করতে যেতে হয় না। এখান থেকেই আম মানুষ কিনে নিয়ে যায়।

পর্যটকের ভিড়, গাছের নিরাপত্তা এবং পরিচর্যার জন্য প্রতিটি দর্শনার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় মাত্র ২০ টাকা করে টিকিট। এই টাকয় গাছের চারপাশে বেড়া, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা এবং বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। স্থানীয় মো. সাইদুর মোল্লা ও মো. নূর ইসলাম এই গাছের দেখভাল করছেন পারিবারিকভাবে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। উত্তরাঞ্চলের জেলা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং কি বিদেশ থেকে অনেক মানুষ আসেন এই গাছটি দেখতে।

মো. নূর ইসলাম বলেন, আমগাছটি আমার বাবার দাদা লাগিয়েছে। আনুমানিক প্রায় ২২০ বছর আগে। ২০ টাকা টিকিট মূল্যের বিনিময়ে গাছটি দেখতে পারে যে কেউ। আর এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের মোট ১১ জন সদস্যের সংসার চলে। ভবিষ্যতে এখানে পর্যটন ও পরিবেশ বান্ধব বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমি ও আমার পরিবার।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, এই ঐতিহ্যবাহী আম গাছটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। তাই মালিক পক্ষ সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দিলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। তার পরেও সেখানে সরকারি খাস জমিতে দর্শনার্থীদের জন্য আমরা একটি রেস্ট হাউস করেছি।দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ যেন সেখানে বিশ্রাম নিতে পারেন।

গাছটি শুধু জেলার বা উপজেলার একটি ঐতিহ্য নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। তাই এই ঐতিহাসিক গাছটি দীর্ঘকাল টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রীয়ভাবে বা সরকারি কোনো উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গাছটি সংরক্ষণে বা রাষ্ট্রীয় পয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করার চিন্তাভাবনা আছে। এটি আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে উদ্যোগ গ্রহণ করব। এছাড়াও এই গাছটির সূর্যপুরী আম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন করার জন্য কার্যক্রম চলছে। আমরা আশা করি যারা এখানে দেশ বা বিদেশ থেকে গাছটি দেখতে আসবে তারা যেন সুন্দর ও শৃঙ্খলা ভাবে দেখে পারে। সে ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে।

এই গাছটি কেবলই একটি আমগাছ নয় এটি একাধারে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈজ্ঞানিক কৌতূহল এবং মানবিক অনুভূতির প্রতীক। এছায়া ও সম্ভার আগামী প্রজন্মকে টানে ইতিহাসের দিকে তাকাতে। সূর্যপুরী আমগাছটি এই অঞ্চলের জাতীয় দিগন্তে কেবল একটি গাছের নাম নয়; এটি হয়ে থাকবে মননে উদ্দীপনা, পরিবেশে সংগঠন, আর গবেষণায় প্রেরণার নতুন অধ্যায়।

যাকে দেখতে মানুষ টিকিট কাটে এটা শুধু বিস্ময়ের নয়, গর্বের। এই গাছ শুধু ফল দেয় না, ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলে। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর এই সূর্যপুরী আমগাছ তাই শুধু একটি বৃক্ষ নয় একটি জীবন, একটি যাত্রা, একটি জীবন্ত ইতিহাস।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, রানওয়ে বন্ধ ২ ঘণ্টা

বৈদেশিক মুদ্রা ডাকাতি: একজন কারাগারে, রিমান্ডে ৫

আশুরা উপলক্ষে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত দুই ভাই

ছবি

‘দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে’—পুলিশ কমিশনারকে নারীর চিঠি

বাংলাদেশ লোকগবেষণা পরিষদের আত্মপ্রকাশ

সোনাইমুড়ীকে পৃথক নির্বাচনী আসন করার দাবিতে জামায়াতের মানববন্ধন

কমলগঞ্জে রোজিনা হত্যা মামলার আসামি ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার

মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ

ছবি

পুর্ব-সুন্দরবনে বিষ দিয়ে ধরা মাছসহ নৌকা আটক

চাটখিল ও সোনাইমুড়ী থানার লুণ্ঠিত আগ্নেয়াস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি

ভোলায় নেত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, বিএনপির নেতা বহিষ্কার

বাগেরহাটে পানিতে পড়ে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

ভূমি খাজনা আদায়ে জেলার মধ্যে শীর্ষে সুমানগঞ্জের ছাতক

ছবি

মুন্সীগঞ্জের কাটাখালি খাল সংস্কারে চলছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

কলমাকান্দায় অনলাইন তীর জুয়াড়িদের গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে একে আজাদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় থানায় এজাহার

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোষ্ঠীগত বিরোধে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাজারে লুটপাট-ভাঙচুর

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

নির্বিচারে গাছ কাটায় ভালুকায় হারিয়ে গেছে ৫০ প্রজাতির বৃক্ষলতা

ছবি

চিলমারীর তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু চলতি মাসের শেষে খুলে দেয়া হবে

ছবি

সুন্দরবনে কমেছে চোরা শিকারি ও বিষ সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য

দৌলতপুরে অবৈধভাবে নদীর মাটি উত্তোলন করায় জরিমানা

ছবি

নদীতে ভেঙে যাওয়া চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পূর্বের গ্রামে প্রতিষ্ঠার দাবি

মীরসরাই প্রাথমিকে ১০৮ পদ শূন্য, পাঠদান ব্যাহত

ছবি

চকরিয়ায় অভয়ারণ্য বনের গাছ কেটে পাকা বাড়ি তৈরির হিড়িক!

ছবি

মাদারীপুরে পানি প্রবাহে খাল খনন শুরু

সিলেটে দুই বাসের সংঘর্ষ, নিহত ১

ফরিদপুরে বিএনপির সদস্য সচিবসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার

ইলেকট্রিশিয়ানকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

৯ দফা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত

উল্টোরথের মাধ্যমে মোহনগঞ্জে শেষ হলো রথযাত্রা উৎসব

রাজশাহীতে হামলা ছিনতাই ও গুলির ঘটনায় আটক ৩

ছবি

শিবচরে আড়িয়ালখাঁ নদের ভাঙন হুমকিতে ৯৭ কোটি টাকার সেতু

পূর্বধলায় বিএনপির মতবিনিময় সভা

অমরখানা ও সিংরোড সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়া ১৫ জন আটক

tab

সারাদেশ

২০০ বছরের সূর্যপুরী আমগাছ ডালে ডালে ঝুলছে আম

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও

শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দেশের সর্ব উত্তরের সিমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। পিচঢালা পথের দুই পাশে সারি সারি গাছ। ডানে-বাঁয়ে ফসলি জমি, ঝোপঝাড় এঁকেবেঁকে এগিয়ে গেছে দিগন্তে। দূরে সবুজ টিলার ওপর দাঁড়িয়ে সুবিশাল বট কিংবা অশ্বত্থের মতো গাছ। কাছে যেতেই চোখ পরে সেই সূর্যপুরী আমগাছ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী মন্ডুমালা গ্রামে মাটি আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে দেশের একমাত্র ঐতিহাসিক সূর্যপুরী আমগাছ।

কিন্তু একটি আমগাছ দেখতে যদি আপনাকে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকতে হয়? শুনে অবাক লাগলেও সূর্যপুরী আমগাছকে দেখতে এখন ভিড় করছেন শত শত মানুষ টিকিট কেটে দেখছেন। যা শুধু বালিয়াডাঙ্গী বা ঠাকুরগাঁও নয়, সমগ্র এশিয়ায় ‘লতা’ বা প্রশস্ত শাখাযুক্ত এই জাতের একটি গজবৃক্ষ। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ঐতিহাসিক এই গাছের বয়স প্রায় ২০০ বছরের অধিক। আজ অবধি গাছটি শুধু বেঁচে আছে তাই নয়, বরং প্রতি বছর ফলন দিয়েও মুগ্ধ করছে এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের।

দুই বিঘা জমির উপরে বিস্তৃত গাছটির উচ্চতা প্রায় ৯০ ফুট। উঁচু এই গাছটির শাখাগুলো মাটির দিকে নেমে আবার উঠে গেছে। গাছটির ছায়ায় ঢোকার পর যেন এক প্রাকৃতিক ছাউনি, এক অন্যরকম আবহ। তার ডালপালা এতটাই বিস্তৃত যে নিচে দাঁড়িয়ে পুরোটা এক ফ্রেমে ধরাও দায়।

গাছটির শাখা চওড়াই প্রায় ৩৫ ফুট। এতে প্রায় ১৯টি মোটা ডাল, প্রত্যেকের দৈর্ঘ্য ৪০ বা ৫০ ফুট, যা মাটির দিকে ঝুঁকে আবার উঠছে দেখতে যেন ‘অক্টোপাস’ এর মতো। এই গাছের সূর্যপুরী আম স্বাদে অতুলনীয়। স্থানীয়রা বলছেন, এর অনন্য স্বাদ, ঘ্রাণ ও মিষ্টতা আজকের বাজারজাত সূর্যপুরীর তুলনায় ‘অপরিমেয়’ সরস ও ঘন। এছাড়া, এই গাছের আমগুলো বাজারে সাধারণ সূর্যপুরীর দামে পাওয়া যায় না, প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার কারণে দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুন পর্যন্ত বাড়ে।

প্রতি বছর এটি ১০০ বা ২০০ মণ ফল দেয় এবং প্রতিটি আমের ওজন দাঁড়ায় ২০০ বা ২৫০ গ্রাম। যা প্রতি কেজি এবার ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান গাছ লিজ নেওয়া ব্যক্তি মো. সাদেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে তিন বছরের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা গাছটি আমি লিজ নিয়েছি। এতে প্রথম বছরেই আমি দেড় লাখ টাকা আম বিক্রি করেছি। পরের বছরে ১ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এবছর আশা করছি ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবো। আর এ গাছের আম আমাদের বাজারে বিক্রি করতে যেতে হয় না। এখান থেকেই আম মানুষ কিনে নিয়ে যায়।

পর্যটকের ভিড়, গাছের নিরাপত্তা এবং পরিচর্যার জন্য প্রতিটি দর্শনার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় মাত্র ২০ টাকা করে টিকিট। এই টাকয় গাছের চারপাশে বেড়া, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা এবং বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। স্থানীয় মো. সাইদুর মোল্লা ও মো. নূর ইসলাম এই গাছের দেখভাল করছেন পারিবারিকভাবে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। উত্তরাঞ্চলের জেলা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং কি বিদেশ থেকে অনেক মানুষ আসেন এই গাছটি দেখতে।

মো. নূর ইসলাম বলেন, আমগাছটি আমার বাবার দাদা লাগিয়েছে। আনুমানিক প্রায় ২২০ বছর আগে। ২০ টাকা টিকিট মূল্যের বিনিময়ে গাছটি দেখতে পারে যে কেউ। আর এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের মোট ১১ জন সদস্যের সংসার চলে। ভবিষ্যতে এখানে পর্যটন ও পরিবেশ বান্ধব বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমি ও আমার পরিবার।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, এই ঐতিহ্যবাহী আম গাছটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। তাই মালিক পক্ষ সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দিলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। তার পরেও সেখানে সরকারি খাস জমিতে দর্শনার্থীদের জন্য আমরা একটি রেস্ট হাউস করেছি।দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ যেন সেখানে বিশ্রাম নিতে পারেন।

গাছটি শুধু জেলার বা উপজেলার একটি ঐতিহ্য নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। তাই এই ঐতিহাসিক গাছটি দীর্ঘকাল টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রীয়ভাবে বা সরকারি কোনো উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গাছটি সংরক্ষণে বা রাষ্ট্রীয় পয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করার চিন্তাভাবনা আছে। এটি আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে উদ্যোগ গ্রহণ করব। এছাড়াও এই গাছটির সূর্যপুরী আম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন করার জন্য কার্যক্রম চলছে। আমরা আশা করি যারা এখানে দেশ বা বিদেশ থেকে গাছটি দেখতে আসবে তারা যেন সুন্দর ও শৃঙ্খলা ভাবে দেখে পারে। সে ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে।

এই গাছটি কেবলই একটি আমগাছ নয় এটি একাধারে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈজ্ঞানিক কৌতূহল এবং মানবিক অনুভূতির প্রতীক। এছায়া ও সম্ভার আগামী প্রজন্মকে টানে ইতিহাসের দিকে তাকাতে। সূর্যপুরী আমগাছটি এই অঞ্চলের জাতীয় দিগন্তে কেবল একটি গাছের নাম নয়; এটি হয়ে থাকবে মননে উদ্দীপনা, পরিবেশে সংগঠন, আর গবেষণায় প্রেরণার নতুন অধ্যায়।

যাকে দেখতে মানুষ টিকিট কাটে এটা শুধু বিস্ময়ের নয়, গর্বের। এই গাছ শুধু ফল দেয় না, ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলে। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর এই সূর্যপুরী আমগাছ তাই শুধু একটি বৃক্ষ নয় একটি জীবন, একটি যাত্রা, একটি জীবন্ত ইতিহাস।

back to top