কেশবপুর (যশোর) : ঘের পরিদর্শন করছেন ইউএনও রেকসোনা খাতুন -সংবাদ
যশোরের কেশবপুরে সাড়ে ৪ হাজার মাছের ঘেরের অধিকাংশের নেই মৎস্য দপ্তরের লাইসেন্স। ভবদহ মৎস্য চাষ নীতিমালা উপেক্ষা করে গড়ে উঠেছে মৎস্য ঘের। এসব ঘেরে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতার পরও বন্ধ হচ্ছে না পানি উত্তোলন। এদিকে, গত ৪ দিনের বর্ষনে নদী-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় জনগণকে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।
২০০০ সালের দিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিল ও সরকারি খাল জবর দখল করে মাছের ঘের করেন। এ সময় ঘের মালিকরা সেতু, কালর্ভাটের মুখ ভরাটসহ অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাকে ঘেরের বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। গত বারের বন্যায় যেসমস্ত ঘের তলিয়ে গিয়েছিল তা রক্ষায় সড়কের ঢালের ওপর ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্ষায় এসব সড়ক নালায় পরিণত হয়ে জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। এতে সড়ক দিয়ে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ নষ্ট হবে সড়ক।
প্রতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতেই ঘের মালিকরা মাছ চাষের জন্যে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট করে। প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধসহ সড়ককে ঘেরের বাঁধ হিসেবে না করতে এলাকায় মাইকিং ও মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ঘের ব্যবসায়ীদের অর্ধদন্ড করছে। এরপরও কোনো অবস্থায় বন্ধ হচ্ছে না ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন।
এদিকে, পলিতে কেশবপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান নদী হরিহর, আপারভদ্রা ও বুড়িভদ্রা ভরাট হয়ে মৃত প্রায়। এসব নদী পুনর্খননে কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় ১৪৩ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফাইলবন্দী অবস্থায় পড়ে থাকায় নদী খনন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। গত ৪ দিনের বর্ষনে নদী-নদীগুলোর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এঅবস্থায় ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বর্ষায় জনগণকে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস জানায়, এ উপজেলায় ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের রয়েছে। এসব ঘেরের সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করা হয়। আবার বোরো ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই অবৈধভাবে ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ভরাট করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার কৃষি কাজের জন্যে সেচ সংযোগে ভর্তুকি দিচ্ছে। ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই- যারা অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, সরকারি রাস্তা ঘেরের বেঁড়িবাধ হিসেবে ব্যবহারসহ ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকজন ঘের মালিকে অর্থদ- করা হয়েছে। এ ছাড়া, যেসমস্ত ঘের মালিক ভবদহ নীতিমালা অনুসরন না করে ঘের করছে পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেশবপুর (যশোর) : ঘের পরিদর্শন করছেন ইউএনও রেকসোনা খাতুন -সংবাদ
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
যশোরের কেশবপুরে সাড়ে ৪ হাজার মাছের ঘেরের অধিকাংশের নেই মৎস্য দপ্তরের লাইসেন্স। ভবদহ মৎস্য চাষ নীতিমালা উপেক্ষা করে গড়ে উঠেছে মৎস্য ঘের। এসব ঘেরে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতার পরও বন্ধ হচ্ছে না পানি উত্তোলন। এদিকে, গত ৪ দিনের বর্ষনে নদী-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় জনগণকে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।
২০০০ সালের দিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিল ও সরকারি খাল জবর দখল করে মাছের ঘের করেন। এ সময় ঘের মালিকরা সেতু, কালর্ভাটের মুখ ভরাটসহ অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাকে ঘেরের বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। গত বারের বন্যায় যেসমস্ত ঘের তলিয়ে গিয়েছিল তা রক্ষায় সড়কের ঢালের ওপর ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্ষায় এসব সড়ক নালায় পরিণত হয়ে জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। এতে সড়ক দিয়ে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ নষ্ট হবে সড়ক।
প্রতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতেই ঘের মালিকরা মাছ চাষের জন্যে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট করে। প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধসহ সড়ককে ঘেরের বাঁধ হিসেবে না করতে এলাকায় মাইকিং ও মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ঘের ব্যবসায়ীদের অর্ধদন্ড করছে। এরপরও কোনো অবস্থায় বন্ধ হচ্ছে না ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন।
এদিকে, পলিতে কেশবপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান নদী হরিহর, আপারভদ্রা ও বুড়িভদ্রা ভরাট হয়ে মৃত প্রায়। এসব নদী পুনর্খননে কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় ১৪৩ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফাইলবন্দী অবস্থায় পড়ে থাকায় নদী খনন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। গত ৪ দিনের বর্ষনে নদী-নদীগুলোর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এঅবস্থায় ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বর্ষায় জনগণকে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস জানায়, এ উপজেলায় ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের রয়েছে। এসব ঘেরের সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করা হয়। আবার বোরো ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই অবৈধভাবে ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ভরাট করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার কৃষি কাজের জন্যে সেচ সংযোগে ভর্তুকি দিচ্ছে। ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই- যারা অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, সরকারি রাস্তা ঘেরের বেঁড়িবাধ হিসেবে ব্যবহারসহ ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকজন ঘের মালিকে অর্থদ- করা হয়েছে। এ ছাড়া, যেসমস্ত ঘের মালিক ভবদহ নীতিমালা অনুসরন না করে ঘের করছে পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।