সিরাজগঞ্জ : এক সময়ের বিল এখন ফসলের মাঠ -সংবাদ
মৎস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বিল। এক সময় এই বিলে প্রচুর পরিমাণে দেশি জাতের মাছ পাওয়া যেত। এখন আর সেই বিলও নেই মাছও নেই। চারিদিকে বাঁধ ও বিল গুলি ভরাট ও সংকুচিত হয়ে আসায় বন্যাও আসেনা আবার যেখানে বন্যার পানি আসে সেখানে মাছের আবাস স্থল না থাকায় মাছ বড় হতে পারেনা বলে সচেতন মহলের অভিমত।
সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে জেলায় বর্তমানে ৮৫টি বিল রয়েছে। প্রবীণদের কাছ থেকে জানা যায় চলন বিল, কাদাই বিল, কালিয়া হরিপুর বিল, জামতৈলের চত্রা বিল, ধলেশ্বর বিল, কৈজুড়ী বিল, সুবর্ণসাড়াবিল, বানিয়াগাঁতী বিল, রসুলপুর পাগলা ছাগলার বিল, ধলেম্বর জবখালি বিল, কর্নসূতির বৈঠাখালর বিল, সগুনার বিল, পেতাজিয়া বিল, রাউতারার বিলসহ জেলায় ছোট বড় মিলে শতাধিক বিল ছিল। এই ব বিলে বর্ষার সময় বন্যার পানিতে প্রচুর পরিমানে মাছ আসতো। আশ্বিণ কার্তিক মাসে যখন পানি শুকিয়ে যেত তখন বাউতের মাধ্যমে মাছ ধরার উৎসব চলতো এক এক দিনে এক এক বিলে মানুষ উৎসবের মতো আনন্দ উল্লাসের সঙ্গে এই সব বিলে ভোরে মাছ ধরতে যেত। এ সময় বড় বড় রুই, কাতলা, বোয়াল, শোল, চিতল, বাউশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরতো। এ ছাড়া ছোট মাছের তো বালাইই ছিল না। এই সময় এত মাছ ধরা পরতো যে মাছ খেতে না পারায় অনেক মাছ পচে যেত। এই সব পচা মাছ মাটিতে পুতে রাখতো। পচা মাছের গন্ধে বিভিন্ন এলাকায় কলেরা দেখা দিত।
কালিয়া গ্রামের আবুল হোসেন (৭৫) জানান, আগের দিনে বিল, নদী খালগুলিতে আশ্বিন কার্তিক মাসে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত তা এখনকার মানুষ শুনলে বিশ্বাস করেনা। এরা মনে করে এগুলো গল্প বাস্তবে ছিলনা। বেলুটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৭২) জানান আষাঢ় মাসে যখন বানের পানিতে খাল বিল ভরে যেত এই সময় বড় বড় বোয়াল আমন ধান খেতের মধ্যে অল্প পানির মধ্যে উঠে আসতো এ সময় আমরা ফসকা, টেঁটা দিয়ে যে মাছ মারতাম তা এখনকার মানুষ বিশ্বাস করেনা। আশ্বিন কার্তিক মাসে ধিয়াল দারকিতে যে মাছ পরতো সেই মাছ নিজেরা না খেতে পেরে আশপাশের মানুষকে দেয়া হতো এমনকি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরও দেয়া হতো। এ ছাড়া বিভিন্ন বিলে বাউৎ না এত সে যে কি আনন্দ ছিলা যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। এ সময় ভোর রাতে সবাই দল বেধে পলো, বিভিন্ন ধরনের জাল নিয়ে যেতাম সেখানে বড় বড়র মাছ ধরা পরতো। তিনি বলেন এখন বিলও নেই বন্যায়ও নাই মাছ হবে কীভাবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান জানান, এ বছর জেলায় ২৪টি বিল নার্সারি করা হয়েছে। যেগুলোতে ইতোমধ্যেই কার্প জাতীয় রেনু পোনা ছাড়া হয়েছে। বিলগুলিতে পানি হলে এই পোনাগুলি ছড়িয়ে বড় বড় মাছ হবে। এ ছাড়াও মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, মৎস্য পোনা অবমুক্ত করন ইত্যাদি কার্যক্রম চালু আছে। তিনি আরও জানান জেলায় বাৎসরিক মাছের উৎপাদন হয় ৭৪৭৫২ মে. টন যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২ হাজার মে. টন বেশি।
সিরাজগঞ্জ : এক সময়ের বিল এখন ফসলের মাঠ -সংবাদ
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
মৎস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বিল। এক সময় এই বিলে প্রচুর পরিমাণে দেশি জাতের মাছ পাওয়া যেত। এখন আর সেই বিলও নেই মাছও নেই। চারিদিকে বাঁধ ও বিল গুলি ভরাট ও সংকুচিত হয়ে আসায় বন্যাও আসেনা আবার যেখানে বন্যার পানি আসে সেখানে মাছের আবাস স্থল না থাকায় মাছ বড় হতে পারেনা বলে সচেতন মহলের অভিমত।
সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে জেলায় বর্তমানে ৮৫টি বিল রয়েছে। প্রবীণদের কাছ থেকে জানা যায় চলন বিল, কাদাই বিল, কালিয়া হরিপুর বিল, জামতৈলের চত্রা বিল, ধলেশ্বর বিল, কৈজুড়ী বিল, সুবর্ণসাড়াবিল, বানিয়াগাঁতী বিল, রসুলপুর পাগলা ছাগলার বিল, ধলেম্বর জবখালি বিল, কর্নসূতির বৈঠাখালর বিল, সগুনার বিল, পেতাজিয়া বিল, রাউতারার বিলসহ জেলায় ছোট বড় মিলে শতাধিক বিল ছিল। এই ব বিলে বর্ষার সময় বন্যার পানিতে প্রচুর পরিমানে মাছ আসতো। আশ্বিণ কার্তিক মাসে যখন পানি শুকিয়ে যেত তখন বাউতের মাধ্যমে মাছ ধরার উৎসব চলতো এক এক দিনে এক এক বিলে মানুষ উৎসবের মতো আনন্দ উল্লাসের সঙ্গে এই সব বিলে ভোরে মাছ ধরতে যেত। এ সময় বড় বড় রুই, কাতলা, বোয়াল, শোল, চিতল, বাউশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরতো। এ ছাড়া ছোট মাছের তো বালাইই ছিল না। এই সময় এত মাছ ধরা পরতো যে মাছ খেতে না পারায় অনেক মাছ পচে যেত। এই সব পচা মাছ মাটিতে পুতে রাখতো। পচা মাছের গন্ধে বিভিন্ন এলাকায় কলেরা দেখা দিত।
কালিয়া গ্রামের আবুল হোসেন (৭৫) জানান, আগের দিনে বিল, নদী খালগুলিতে আশ্বিন কার্তিক মাসে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত তা এখনকার মানুষ শুনলে বিশ্বাস করেনা। এরা মনে করে এগুলো গল্প বাস্তবে ছিলনা। বেলুটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৭২) জানান আষাঢ় মাসে যখন বানের পানিতে খাল বিল ভরে যেত এই সময় বড় বড় বোয়াল আমন ধান খেতের মধ্যে অল্প পানির মধ্যে উঠে আসতো এ সময় আমরা ফসকা, টেঁটা দিয়ে যে মাছ মারতাম তা এখনকার মানুষ বিশ্বাস করেনা। আশ্বিন কার্তিক মাসে ধিয়াল দারকিতে যে মাছ পরতো সেই মাছ নিজেরা না খেতে পেরে আশপাশের মানুষকে দেয়া হতো এমনকি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরও দেয়া হতো। এ ছাড়া বিভিন্ন বিলে বাউৎ না এত সে যে কি আনন্দ ছিলা যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। এ সময় ভোর রাতে সবাই দল বেধে পলো, বিভিন্ন ধরনের জাল নিয়ে যেতাম সেখানে বড় বড়র মাছ ধরা পরতো। তিনি বলেন এখন বিলও নেই বন্যায়ও নাই মাছ হবে কীভাবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান জানান, এ বছর জেলায় ২৪টি বিল নার্সারি করা হয়েছে। যেগুলোতে ইতোমধ্যেই কার্প জাতীয় রেনু পোনা ছাড়া হয়েছে। বিলগুলিতে পানি হলে এই পোনাগুলি ছড়িয়ে বড় বড় মাছ হবে। এ ছাড়াও মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, মৎস্য পোনা অবমুক্ত করন ইত্যাদি কার্যক্রম চালু আছে। তিনি আরও জানান জেলায় বাৎসরিক মাছের উৎপাদন হয় ৭৪৭৫২ মে. টন যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২ হাজার মে. টন বেশি।