আনসার ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণ নিয়ে শ্রীমঙ্গলের আতর আলী এখন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার এই সফলতা দেখে এলাকাবাসীদের অনেকেই আনারস ও লেবু চাষে উৎসাহী।
দেশ-বিদেশে চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত পর্যটন নগরী ও দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ে এলাকা মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আনারস, লেবু, নাগা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আতর আলী। তার এই সাফল্য দেখে এলাকার অনেক মানুষ কৃষিকাজে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি পড়াশোনা করছেন এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত চার বছর ধরে নিজস্ব জমিতে তিনি কৃষিকাজ করে আসছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩নং শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের পাহাড়ে এলাকার ডলুছড়া গ্রামে তিনি ‘আতর আলী হর্টিকালচার অ্যান্ড ফার্ম’ গড়ে তুলেছেন।
পাহাড়ে এলাকায় প্রায় দশ একর জমিতে আনারস, লেবু, নাগা মরিচ, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, মাল্টা, ড্রাগন ফল, লিচু ইত্যাদি চাষ করা হয়েছে। এসব ফল ও সবজি নিজ খামার থেকেই সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করছেন তিনি। কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে তার উৎপাদিত ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আতর আলীকে দেখে অনেকেই পেয়ারা ও লেবু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উদ্যোক্তা আতর আলী জানান, ‘চলতি বছরে আমার জমিতে উৎপাদিত লেবু বিক্রি করে ছয় লক্ষ, আনারস তিন লক্ষ, নাগা মরিচ ১২ লক্ষ এবং কলা, পেয়ারা, পেঁপে, লিচুসহ অন্যান্য ফসল বিক্রি করে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা আয় করেছি। সব মিলিয়ে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার ফসল বিক্রি হয়েছে। বিগত ঈদুল আজহায় খামার থেকে চার লক্ষ টাকার গরু বিক্রি করেছি। বর্তমানে আমার বাগান ও খামারে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ফলে তাদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে।’
কৃষি উদ্যোক্তা আতর আলী বলেন, ‘কয়েক বছর আগে লেখাপড়ার পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণ নেই। সেই প্রশিক্ষণেই আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন জাগে। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরামর্শ পাই। অনার্স শেষ করার পর চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যাংক থেকে দুই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ফলের বাগান এবং গরুর খামার চালু করি। এখন আমি স্বাবলম্বী এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছি। ভবিষ্যতে আমার বাগানে অ্যাগ্রো ট্যুরিজম চালু করার পরিকল্পনা আছে, এতে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি গরুর ডেইরি ফার্ম করার চিন্তাভাবনাও করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনসার ভিডিপির মহাপরিচালকের নির্দেশে, সিলেট রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার এবং মৌলভীবাজার জেলার জেলা কমান্ড্যান্টের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় আমি বাগান ও খামার চালু করেছি। এখন আমি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছি। আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করেছি ‘আতর আলী হর্টিকালচার অ্যান্ড ফার্ম’। বর্তমানে আমি শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আতর আলী একজন শিক্ষিত ও উদ্যমী তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। আনসার ভিডিপির চাকরির পাশাপাশি তিনি কৃষির বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন।
তার জমিতে লেবু, আনারস ও নাগা মরিচসহ অন্যান্য ফসল চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তার সফলতা দেখে অনেক তরুণ কৃষক কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা চাই আরও তরুণরা কৃষিতে এগিয়ে আসুক। শ্রীমঙ্গলে লেবু ও আনারসের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এসব ফসল দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
আনসার ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণ নিয়ে শ্রীমঙ্গলের আতর আলী এখন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার এই সফলতা দেখে এলাকাবাসীদের অনেকেই আনারস ও লেবু চাষে উৎসাহী।
দেশ-বিদেশে চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত পর্যটন নগরী ও দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ে এলাকা মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আনারস, লেবু, নাগা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আতর আলী। তার এই সাফল্য দেখে এলাকার অনেক মানুষ কৃষিকাজে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি পড়াশোনা করছেন এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত চার বছর ধরে নিজস্ব জমিতে তিনি কৃষিকাজ করে আসছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩নং শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের পাহাড়ে এলাকার ডলুছড়া গ্রামে তিনি ‘আতর আলী হর্টিকালচার অ্যান্ড ফার্ম’ গড়ে তুলেছেন।
পাহাড়ে এলাকায় প্রায় দশ একর জমিতে আনারস, লেবু, নাগা মরিচ, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, মাল্টা, ড্রাগন ফল, লিচু ইত্যাদি চাষ করা হয়েছে। এসব ফল ও সবজি নিজ খামার থেকেই সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করছেন তিনি। কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে তার উৎপাদিত ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আতর আলীকে দেখে অনেকেই পেয়ারা ও লেবু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উদ্যোক্তা আতর আলী জানান, ‘চলতি বছরে আমার জমিতে উৎপাদিত লেবু বিক্রি করে ছয় লক্ষ, আনারস তিন লক্ষ, নাগা মরিচ ১২ লক্ষ এবং কলা, পেয়ারা, পেঁপে, লিচুসহ অন্যান্য ফসল বিক্রি করে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা আয় করেছি। সব মিলিয়ে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার ফসল বিক্রি হয়েছে। বিগত ঈদুল আজহায় খামার থেকে চার লক্ষ টাকার গরু বিক্রি করেছি। বর্তমানে আমার বাগান ও খামারে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ফলে তাদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে।’
কৃষি উদ্যোক্তা আতর আলী বলেন, ‘কয়েক বছর আগে লেখাপড়ার পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণ নেই। সেই প্রশিক্ষণেই আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন জাগে। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরামর্শ পাই। অনার্স শেষ করার পর চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যাংক থেকে দুই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ফলের বাগান এবং গরুর খামার চালু করি। এখন আমি স্বাবলম্বী এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছি। ভবিষ্যতে আমার বাগানে অ্যাগ্রো ট্যুরিজম চালু করার পরিকল্পনা আছে, এতে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি গরুর ডেইরি ফার্ম করার চিন্তাভাবনাও করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনসার ভিডিপির মহাপরিচালকের নির্দেশে, সিলেট রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার এবং মৌলভীবাজার জেলার জেলা কমান্ড্যান্টের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় আমি বাগান ও খামার চালু করেছি। এখন আমি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছি। আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করেছি ‘আতর আলী হর্টিকালচার অ্যান্ড ফার্ম’। বর্তমানে আমি শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আতর আলী একজন শিক্ষিত ও উদ্যমী তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। আনসার ভিডিপির চাকরির পাশাপাশি তিনি কৃষির বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন।
তার জমিতে লেবু, আনারস ও নাগা মরিচসহ অন্যান্য ফসল চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তার সফলতা দেখে অনেক তরুণ কৃষক কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা চাই আরও তরুণরা কৃষিতে এগিয়ে আসুক। শ্রীমঙ্গলে লেবু ও আনারসের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এসব ফসল দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’