খুলনায় একটি মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির দুই নেতার বিরুদ্ধে। ওই দুই নেতা হলেন খুলনা নগর কমিটির সদস্যসচিব জহুরুল ইসলাম তানভীর ও মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের শোকজের বিষয়টি জানানো হয়। বৈছাআর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলামের সই করা ওই নোটিশে সংগঠনের ‘শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থী কার্যকলাপে যুক্ত’ থাকার অভিযোগের কথা বলা হয়। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
তানভীর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অনার্সে এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বলে জনা গেছে।
তবে বৈছাআর ওই দুই নেতা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের ভাষ্য, খুলনায় মেলা ঘিরে তাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ‘মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর স্বত্বাধিকারী পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের কণ্ঠসদৃশ একজনের কথোপকথন শোনা যায়।
অডিওতে মেলার আয়োজক মন্টু মিয়াকে আঞ্চলিক টানে বলতে শোনা যায়, ‘আমার দ্বারা সবাইকে কি ঠান্ডা করা সম্ভব? আমার কাছে দুই টাকা রেডি আছে, আপনি বললে এখনই দিয়ে যাব।’
জবাবে আজাদের কণ্ঠসদৃশ একজন বলেন, ‘আমি পারবো সবাইকে ঠান্ডা করতে, এ টু জেড-সবাই ঠান্ডা থাকবে, কেউ তাকাবে না, যদি ১০ টাকা দেন। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এ গ্রুপ যাবে, কাল অন্য গ্রুপ যাবে, আপনি কয়জনকে ঠান্ডা করবেন?’
রেকর্ডের আরও অংশে আর্থিক লেনদেনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মেলার আয়োজক মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফাঁস হওয়া রেকর্ডিং আমার এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের কল রেকর্ডিং। রেকর্ডিংয়ে যা শুনেছেন, সব সত্য।’
মন্টু বলেন, ‘ওটা পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) মেলা ছিল। তারপরও আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিন লাখ দিয়ে তাদের ঠান্ডা করেছি।’
আর রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি, যিনি খুলনায় ‘মেলা রাসেল’ নামে পরিচিত, এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, ‘মেলার প্রকৃত মালিক আমি। মন্টু মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন পক্ষকে বিভ্রান্ত করেছে। কোনো চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেনি। যা ছড়ানো হচ্ছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার।’ তার দাবি মালিকানার চুক্তিপত্রও তার কাছে আছে।
তবে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘এটা একটা ষড়যন্ত্র। বড় শক্তি আমার বিপক্ষে লেগেছে। আপস না করে টিকে আছি। মেলার প্রকৃত মালিক চুক্তিপত্র দেখিয়েছেন এবং তিনিও বলেছেন, আমরা এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নই।’
আর জহুরুল ইসলাম তানভীর বলেন, ‘ঘটনাটি অনেক আগের। আমাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় তদন্তেই প্রমাণিত হবে।’
বৈছাআ খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখেছি। এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের।’
সম্প্রতি খুলনা নগরীর শিববাড়ী মোড়ের জিয়া হলের পরিত্যক্ত জায়গায় জুলাই স্মৃতি উদযাপন আয়োজনে একটা পক্ষের মেলা বসানোর তৎপরতায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলনা নগরের সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও খুলনা প্রি-ক্যাডেট স্কুল সংলগ্ন মাঠে এক মাসের জন্য খুলনা শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু হয়ে চলে দেড়মাস। পরে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট হওয়ায় সেটি বন্ধ হয়।
ওই মেলার আয়োজক ছিল মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। যেটি পরিচালনা করেন পতিত সরকারের এমপি এসএম কামালের সহযোগী রাসেল ওরফে ‘মেলা রাসেল’।
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
খুলনায় একটি মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির দুই নেতার বিরুদ্ধে। ওই দুই নেতা হলেন খুলনা নগর কমিটির সদস্যসচিব জহুরুল ইসলাম তানভীর ও মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের শোকজের বিষয়টি জানানো হয়। বৈছাআর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলামের সই করা ওই নোটিশে সংগঠনের ‘শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থী কার্যকলাপে যুক্ত’ থাকার অভিযোগের কথা বলা হয়। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
তানভীর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অনার্সে এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বলে জনা গেছে।
তবে বৈছাআর ওই দুই নেতা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের ভাষ্য, খুলনায় মেলা ঘিরে তাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ‘মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর স্বত্বাধিকারী পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের কণ্ঠসদৃশ একজনের কথোপকথন শোনা যায়।
অডিওতে মেলার আয়োজক মন্টু মিয়াকে আঞ্চলিক টানে বলতে শোনা যায়, ‘আমার দ্বারা সবাইকে কি ঠান্ডা করা সম্ভব? আমার কাছে দুই টাকা রেডি আছে, আপনি বললে এখনই দিয়ে যাব।’
জবাবে আজাদের কণ্ঠসদৃশ একজন বলেন, ‘আমি পারবো সবাইকে ঠান্ডা করতে, এ টু জেড-সবাই ঠান্ডা থাকবে, কেউ তাকাবে না, যদি ১০ টাকা দেন। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এ গ্রুপ যাবে, কাল অন্য গ্রুপ যাবে, আপনি কয়জনকে ঠান্ডা করবেন?’
রেকর্ডের আরও অংশে আর্থিক লেনদেনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মেলার আয়োজক মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফাঁস হওয়া রেকর্ডিং আমার এবং সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের কল রেকর্ডিং। রেকর্ডিংয়ে যা শুনেছেন, সব সত্য।’
মন্টু বলেন, ‘ওটা পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) মেলা ছিল। তারপরও আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিন লাখ দিয়ে তাদের ঠান্ডা করেছি।’
আর রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি, যিনি খুলনায় ‘মেলা রাসেল’ নামে পরিচিত, এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, ‘মেলার প্রকৃত মালিক আমি। মন্টু মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন পক্ষকে বিভ্রান্ত করেছে। কোনো চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেনি। যা ছড়ানো হচ্ছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার।’ তার দাবি মালিকানার চুক্তিপত্রও তার কাছে আছে।
তবে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘এটা একটা ষড়যন্ত্র। বড় শক্তি আমার বিপক্ষে লেগেছে। আপস না করে টিকে আছি। মেলার প্রকৃত মালিক চুক্তিপত্র দেখিয়েছেন এবং তিনিও বলেছেন, আমরা এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নই।’
আর জহুরুল ইসলাম তানভীর বলেন, ‘ঘটনাটি অনেক আগের। আমাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় তদন্তেই প্রমাণিত হবে।’
বৈছাআ খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখেছি। এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের।’
সম্প্রতি খুলনা নগরীর শিববাড়ী মোড়ের জিয়া হলের পরিত্যক্ত জায়গায় জুলাই স্মৃতি উদযাপন আয়োজনে একটা পক্ষের মেলা বসানোর তৎপরতায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলনা নগরের সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও খুলনা প্রি-ক্যাডেট স্কুল সংলগ্ন মাঠে এক মাসের জন্য খুলনা শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু হয়ে চলে দেড়মাস। পরে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট হওয়ায় সেটি বন্ধ হয়।
ওই মেলার আয়োজক ছিল মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। যেটি পরিচালনা করেন পতিত সরকারের এমপি এসএম কামালের সহযোগী রাসেল ওরফে ‘মেলা রাসেল’।