কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত সোমবার রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে গত ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে।
পরপর এমন দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মুন্নির মৃত্যুর খবর গত সোমবার রাতে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী। মুন্নির পরিবার জানায়, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে গত সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহী রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজার এলাকার আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিকে’ নেয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু ঘটে।
এ বিষয়ে ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিক’-এর মালিক আবুল হোসেন বলেন, ‘রোগী কীভাবে মারা গেছে, তা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, ‘রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।’
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, ‘একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার(৯-৭-২০২৫) রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। হট্টগোলের আশঙ্কায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকার কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি, দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘এক মাসের ব্যবধানে দুই রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষকে বলব, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।’ একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত সোমবার রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে গত ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে।
পরপর এমন দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মুন্নির মৃত্যুর খবর গত সোমবার রাতে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী। মুন্নির পরিবার জানায়, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে গত সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহী রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজার এলাকার আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিকে’ নেয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু ঘটে।
এ বিষয়ে ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিক’-এর মালিক আবুল হোসেন বলেন, ‘রোগী কীভাবে মারা গেছে, তা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, ‘রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।’
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, ‘একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার(৯-৭-২০২৫) রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। হট্টগোলের আশঙ্কায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকার কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি, দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘এক মাসের ব্যবধানে দুই রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষকে বলব, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।’ একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।