রাজশাহী পদ্মা তীর ঘেষে গড়ে উঠেছে নগর জনপদ । এক সময় এই পদ্মা কে ঘিরেই বসতি স্থাপন করেছে হাজার হাজার মানুষ । নদী তীরে কেও মাছ ধরা কেও নৌকা চালায় কেও নদীর বালুর ব্যাবসা করে, কেও শ্রমিক । এই পদ্মাই এক সময় পেট চালাতো । কিন্তু ধিরে ধিরে নদী সরে যায় অনেক দুরে , কমে যায় পানি । তবুও এখনো নদী তীরের জেলেরা অভ্যাসে জাল বোনে কবে আসবে নদীতে পানি । তবে আষাড় ঘনালেই জেলে পাড়ায় শুরু হয় উৎসবের মতো ।
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এরমধ্যে রয়েছে- পুঁটি, বাইম মাছ, গুচি, টাকি, পাবদা ও চিংড়ি মাছ। তবে জেলেরা বলছেন- উজানের ঢলের পানি আসছে পদ্মায়। পানি বাড়ায় নদীতে ছোট ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, নগরীর শ্রীরামপুর, তালাইমারী, মিজানের মোড়, শ্যামপুর বালুরঘাটের অদূরে বসে মাছ বিক্রির অস্থায়ী বাজার। দিন বা রাতে নদী থেকে জেলেরা মাছ শিকার করে এই সব পয়েন্টে বিক্রি করে। আকার ও প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব মাছ। তবে পুকুরের তুলনায় নদীর মাছের স্বাদ ভালো হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। গতকাল বুধবার বিকেলে মিজানের মোড়ে নদীতে শিকার করা মাছ বিক্রি করছেন মফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ছে। এখন ছোট ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বেশির ভাগ পুঁটি, গুচি, টাকি মাছ। তবে তুলনায় কম। দীর্ঘক্ষণ জাল টানার পরে ২ থেকে ৩ কেজি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দুপুরে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা শুরু করি। বিকেলে ফিরে আসি। এরপরে মাছ বিক্রি করি।
অপর বিক্রেতা বলেন, এখন তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। নদীতে নতুন পানি। মাছেরা ডিম ছেড়েছে। সেই ডিম থেকে পোনা হবে। তারপরে বড় হয়ে মাছ হবে। এবছর জৈষ্ঠ্য মাস থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। চলতি আষাঢ়ে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির ফলে কিছুমাছ আগেই ডিম ছেড়েছে। ডিম ফুটে পোনাও বড় হয়েছে। সেই মাছ আমরা ধরে বিক্রি করছি।
মাছ ক্রেতা জমিস বলেন, নদীর মাছের স্বাদ ভালো। চেষ্টা করি, অল্প হলেও নদীর মাছ কেনার। কিছুদিন আগে এইভাবে মাছ কিনতে পাওয়া যায়নি। এখন নদীতে পানি বেড়েছে, মাছ হচ্ছে। এখানে কয়েকজন মাছ বিক্রি করেন। অনেকেই আসেন মাছ কিনতে। প্রায় প্রতিদিনই এখানে মাছ পাওয়া যায়। নদীর মাছ এখন আকারে ছোট। গুচি, টাকি, চিংড়ি মিলে এক কেজি মাছ কিনেছি। দাম পড়েছে সাড়ে ৬০০ টাকা।
মাছ ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, রাজশাহীতে বেশকিছু জায়গায় পদ্মা নদীর পাড়ে মাছ কিনতে পাওয়া যায়। বাজারের চেয়ে তুলনামূলক কম দাম। এই মাছ ছোট ছোট জেলেরা ধরে বিক্রি করেন। অনেক জেলে ঘাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন মাছ। পাইকাররা ওই মাছ বাজারে বিক্রি করেন। নদীতে পানি বেশি হলে মাছ ভালো পায় জেলেরা।
শ্যামপুর ঘাটে নৌকার মাঝি শফিকুল বলেন, আগে নদীতে ইলিশ, আইড়, বোয়াল, পাবদা, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এখন জেলেরা পুঁটি, বাইম, গুচি মাছ ধরছে। পানি বাড়ার কারণে পদ্মা নদী পারাপারে চরবাসীর সময় ও ভাড়া কমেছে। এখন নৌকা সাতবাড়িয়া ঘাট থেকে ছাড়লে খিদিরপুর ও মিডিলচরে যাওয়া যাচ্ছে। কয়েক মাস আগেও মানুষকে পায়ে হেঁটে নদী পার হতে হতো।
পদ্মার মাছ পাইকারি কিনে বাজারে বিক্রি করেন স্বপন আলী। তিনি বলেন, এখন নদীতে তুলনামূলক মাছ কম পাওয়া যাচেছ। নতুন পানি এসেছে নদীতে। পোনা মাছ বড় হচ্ছে। আর কিছুদিন গেলে জেলেরা ভালো মাছ পাবে জালে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পদ্মা নদীতে দেশীয় প্রজাতির কিছু মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে পুঁটি, গুচি, টাকি, চিংড়ি। নদীর এসব মাছ আকারে ছোট। আর পরিমাণেও কম পাওয়া যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
রাজশাহী পদ্মা তীর ঘেষে গড়ে উঠেছে নগর জনপদ । এক সময় এই পদ্মা কে ঘিরেই বসতি স্থাপন করেছে হাজার হাজার মানুষ । নদী তীরে কেও মাছ ধরা কেও নৌকা চালায় কেও নদীর বালুর ব্যাবসা করে, কেও শ্রমিক । এই পদ্মাই এক সময় পেট চালাতো । কিন্তু ধিরে ধিরে নদী সরে যায় অনেক দুরে , কমে যায় পানি । তবুও এখনো নদী তীরের জেলেরা অভ্যাসে জাল বোনে কবে আসবে নদীতে পানি । তবে আষাড় ঘনালেই জেলে পাড়ায় শুরু হয় উৎসবের মতো ।
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এরমধ্যে রয়েছে- পুঁটি, বাইম মাছ, গুচি, টাকি, পাবদা ও চিংড়ি মাছ। তবে জেলেরা বলছেন- উজানের ঢলের পানি আসছে পদ্মায়। পানি বাড়ায় নদীতে ছোট ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, নগরীর শ্রীরামপুর, তালাইমারী, মিজানের মোড়, শ্যামপুর বালুরঘাটের অদূরে বসে মাছ বিক্রির অস্থায়ী বাজার। দিন বা রাতে নদী থেকে জেলেরা মাছ শিকার করে এই সব পয়েন্টে বিক্রি করে। আকার ও প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব মাছ। তবে পুকুরের তুলনায় নদীর মাছের স্বাদ ভালো হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। গতকাল বুধবার বিকেলে মিজানের মোড়ে নদীতে শিকার করা মাছ বিক্রি করছেন মফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ছে। এখন ছোট ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বেশির ভাগ পুঁটি, গুচি, টাকি মাছ। তবে তুলনায় কম। দীর্ঘক্ষণ জাল টানার পরে ২ থেকে ৩ কেজি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দুপুরে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা শুরু করি। বিকেলে ফিরে আসি। এরপরে মাছ বিক্রি করি।
অপর বিক্রেতা বলেন, এখন তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। নদীতে নতুন পানি। মাছেরা ডিম ছেড়েছে। সেই ডিম থেকে পোনা হবে। তারপরে বড় হয়ে মাছ হবে। এবছর জৈষ্ঠ্য মাস থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। চলতি আষাঢ়ে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির ফলে কিছুমাছ আগেই ডিম ছেড়েছে। ডিম ফুটে পোনাও বড় হয়েছে। সেই মাছ আমরা ধরে বিক্রি করছি।
মাছ ক্রেতা জমিস বলেন, নদীর মাছের স্বাদ ভালো। চেষ্টা করি, অল্প হলেও নদীর মাছ কেনার। কিছুদিন আগে এইভাবে মাছ কিনতে পাওয়া যায়নি। এখন নদীতে পানি বেড়েছে, মাছ হচ্ছে। এখানে কয়েকজন মাছ বিক্রি করেন। অনেকেই আসেন মাছ কিনতে। প্রায় প্রতিদিনই এখানে মাছ পাওয়া যায়। নদীর মাছ এখন আকারে ছোট। গুচি, টাকি, চিংড়ি মিলে এক কেজি মাছ কিনেছি। দাম পড়েছে সাড়ে ৬০০ টাকা।
মাছ ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, রাজশাহীতে বেশকিছু জায়গায় পদ্মা নদীর পাড়ে মাছ কিনতে পাওয়া যায়। বাজারের চেয়ে তুলনামূলক কম দাম। এই মাছ ছোট ছোট জেলেরা ধরে বিক্রি করেন। অনেক জেলে ঘাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন মাছ। পাইকাররা ওই মাছ বাজারে বিক্রি করেন। নদীতে পানি বেশি হলে মাছ ভালো পায় জেলেরা।
শ্যামপুর ঘাটে নৌকার মাঝি শফিকুল বলেন, আগে নদীতে ইলিশ, আইড়, বোয়াল, পাবদা, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এখন জেলেরা পুঁটি, বাইম, গুচি মাছ ধরছে। পানি বাড়ার কারণে পদ্মা নদী পারাপারে চরবাসীর সময় ও ভাড়া কমেছে। এখন নৌকা সাতবাড়িয়া ঘাট থেকে ছাড়লে খিদিরপুর ও মিডিলচরে যাওয়া যাচ্ছে। কয়েক মাস আগেও মানুষকে পায়ে হেঁটে নদী পার হতে হতো।
পদ্মার মাছ পাইকারি কিনে বাজারে বিক্রি করেন স্বপন আলী। তিনি বলেন, এখন নদীতে তুলনামূলক মাছ কম পাওয়া যাচেছ। নতুন পানি এসেছে নদীতে। পোনা মাছ বড় হচ্ছে। আর কিছুদিন গেলে জেলেরা ভালো মাছ পাবে জালে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পদ্মা নদীতে দেশীয় প্রজাতির কিছু মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে পুঁটি, গুচি, টাকি, চিংড়ি। নদীর এসব মাছ আকারে ছোট। আর পরিমাণেও কম পাওয়া যাচ্ছে।