বাজারে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায়সহ বিভিন্ন কারণে দিনে দিনে পলাশে কমছে পাটের চাষ। গত কয়েক বছরে লোকসানের অজুহাতে বন্ধ হয়ে যায় কয়েকটি পাটকল। এর মধ্যে পলাশ-ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চলের ফৌজি চটকল, কো-অপারেটিভ জুট মিল, পূবালি জুট মিল প্রায় এক যুগ আগেই বন্ধ হয়ে যায়। চালু রয়েছে জনতা জুট মিলস লি. ও সাবেক বাংলাদেশ জুট মিল যার বর্তমান নাম জুট এলায়েন্স।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাটকল বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের পাটক্রয়ে অনাগ্রহে বাজারে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় পাটচাষিরা পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এই অঞ্চলের চাষিরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আগে মাঠের পর মাঠ এই এলাকার কৃষকরা পাটচাষ করতেন। পাইকসা গ্রামের বারেক মিয়া (৮৩) বলেন, আগে শীতলক্ষ্যা নদী চরে হাজার হাজার বিঘা জমিতে পাট চাষ হতো। এখন এই চরে গড়ে উঠেছে শিল্প-কারখানা। এদিকে নরসিংদীর ইউএমসি জুট মিল বন্ধ। পলাশের পাট যেত বিশ্বের বৃহত্তম আদমজী জুট মিলসহ দেশের অন্যান্য জুট মিলে। এখন আর সে সময় নাই। বর্তমানে বাজারে পাটের উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে পাটচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। একই এলাকার আরমান নামে আরেক কৃষক জানান, পাটচাষ করে যেই অর্থ পাওয়া যায়, তা দিয়ে জমির শ্রমিকের খরচই ওঠে না। তাই পাটচাষ এখন আর আগের এত নেই। তবে অনেকেই পাটখড়ির জন্য পাট চাষ করে থাকেন। এরফলে অনেকেই এই ফসল ছেড়ে দিয়ে লাভজনক ফসলের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং রপ্তানিযোগ্য অর্থকরী ফসল সোনালি আঁশ পাটের উৎপাদনমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে এই উপজেলায়।
পাট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে প্যাকেজিং, শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগ, বাজার-ব্যাগ, গৃহস্থালি ও সৌখিন কাজে পাটের তৈরি পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পাটচাষি, পাট শিল্প তথা দেশের পাটকলগুলোকে জাগিয়ে তুলে বাজারে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলেই পাটচাষিরা আবার পাটচাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন পাট ব্যবসায়ীরা।
পলাশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় এ বছর দেশি, তোষা ও কোনাফ জাতিয় পাট ৯৩ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এই উপজেলায় পাটের আবাদ তুলনামূলক কম হওয়ার বিষয়ে পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আজার জানান, খাল-বিল, পুকুর ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের ফলে পাট জাগ দেয়ার পরিকল্পিত জলাশয় তা কমে গেছে। সরকারিভাবে কিছু পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাটের চাহিদা কমে এসেছে।
এ ছাড়া অন্যতম কারণ হিসেবে পাট চাষের তুলনায় অন্যান্য ফসল। চাষে কৃষকরা বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষকরা পাটচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এরপরও সরকারিভাবে বীজ, সারও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে কৃষকদের পাটচাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করার কাজটি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে।
রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
বাজারে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায়সহ বিভিন্ন কারণে দিনে দিনে পলাশে কমছে পাটের চাষ। গত কয়েক বছরে লোকসানের অজুহাতে বন্ধ হয়ে যায় কয়েকটি পাটকল। এর মধ্যে পলাশ-ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চলের ফৌজি চটকল, কো-অপারেটিভ জুট মিল, পূবালি জুট মিল প্রায় এক যুগ আগেই বন্ধ হয়ে যায়। চালু রয়েছে জনতা জুট মিলস লি. ও সাবেক বাংলাদেশ জুট মিল যার বর্তমান নাম জুট এলায়েন্স।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাটকল বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের পাটক্রয়ে অনাগ্রহে বাজারে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় পাটচাষিরা পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এই অঞ্চলের চাষিরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আগে মাঠের পর মাঠ এই এলাকার কৃষকরা পাটচাষ করতেন। পাইকসা গ্রামের বারেক মিয়া (৮৩) বলেন, আগে শীতলক্ষ্যা নদী চরে হাজার হাজার বিঘা জমিতে পাট চাষ হতো। এখন এই চরে গড়ে উঠেছে শিল্প-কারখানা। এদিকে নরসিংদীর ইউএমসি জুট মিল বন্ধ। পলাশের পাট যেত বিশ্বের বৃহত্তম আদমজী জুট মিলসহ দেশের অন্যান্য জুট মিলে। এখন আর সে সময় নাই। বর্তমানে বাজারে পাটের উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে পাটচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। একই এলাকার আরমান নামে আরেক কৃষক জানান, পাটচাষ করে যেই অর্থ পাওয়া যায়, তা দিয়ে জমির শ্রমিকের খরচই ওঠে না। তাই পাটচাষ এখন আর আগের এত নেই। তবে অনেকেই পাটখড়ির জন্য পাট চাষ করে থাকেন। এরফলে অনেকেই এই ফসল ছেড়ে দিয়ে লাভজনক ফসলের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং রপ্তানিযোগ্য অর্থকরী ফসল সোনালি আঁশ পাটের উৎপাদনমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে এই উপজেলায়।
পাট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে প্যাকেজিং, শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগ, বাজার-ব্যাগ, গৃহস্থালি ও সৌখিন কাজে পাটের তৈরি পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পাটচাষি, পাট শিল্প তথা দেশের পাটকলগুলোকে জাগিয়ে তুলে বাজারে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলেই পাটচাষিরা আবার পাটচাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করেন পাট ব্যবসায়ীরা।
পলাশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় এ বছর দেশি, তোষা ও কোনাফ জাতিয় পাট ৯৩ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এই উপজেলায় পাটের আবাদ তুলনামূলক কম হওয়ার বিষয়ে পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আজার জানান, খাল-বিল, পুকুর ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের ফলে পাট জাগ দেয়ার পরিকল্পিত জলাশয় তা কমে গেছে। সরকারিভাবে কিছু পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাটের চাহিদা কমে এসেছে।
এ ছাড়া অন্যতম কারণ হিসেবে পাট চাষের তুলনায় অন্যান্য ফসল। চাষে কৃষকরা বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষকরা পাটচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এরপরও সরকারিভাবে বীজ, সারও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে কৃষকদের পাটচাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করার কাজটি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে।