কুকুর বিড়াল কামড়ালে রোগ প্রতিরোধক এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় এর ভুক্তভোগীরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। আবার সরকারী টিকা কেন্দ্রে ভ্যাকসিন (এআরভি) না থাকা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেকায়াদায় রয়েছেন। প্রতিনিয়তি সাধারণ লোকজনের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষকে। রোগীদের বাইরে থেকে সিরিঞ্জসহ ভ্যাকসিন কিনে এনে সরকারী হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ ও বিড়াম্বনায় পড়তে হচ্ছে আগত ভুক্তভোগীদের। আবার ভাকসিন না থাকায় অনেক দরিদ্র রোগী ঝুঁকির মুখে থেকেও ফিরে যাচ্ছেন। বগুড়া জেলা সদরের প্রধান টিকাদান কেন্দ্র বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এই অবস্থা চলছে মাসের পর মাস ধরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন চাহিদার তুলনায় এক চুর্তথাংশ র্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া যায়না। হাসপাতালের ভ্যাকসিন কেন্দ্রে বিজ্ঞপ্তি আকারে লিখে দেয়া হয়েছে ‘ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই’।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের বৃদ্ধ বেলাল হোসেনকে নিজ এলাকাতে কুকুর আঁচর দিয়েছিলো। এ জন্য ভ্যাকসিন দিতে হয় বিষয়টি প্রথমে তিনি জানতেন না। দু’দিন পরে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে দেখালে চিকিৎসক তাকে ভ্যাকসিন নিতে বলেন। হাসপাতালে টিকাদান কেন্দ্রে এসে জানতে পারেন ভ্যাকসিন (এআরভি) ও তার জন্য প্রয়োজন আরআইজি(র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিন) ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই তাই বাইরে থেকে কিনে আনতে হবে। বেশ কিছু সময় চিন্তা করে বেলাল হোসেন টিকাদান কেন্দ্র হতে পা পাড়ালেন ফেরার জন্য। জিজ্ঞাস করতেই জানালেন তিনি শুনেছেন বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে আসলে এর জন্য ‘ইনজেকশন বিনা মুল্যে পাওয়া যায়’। এজন্য শুধু বাড়ি থেকে আসা যাওয়ার টাকা নিয়ে এসেছেন। এ কারণে ফিরে যাচ্ছেন। বেলাল হোসেনের মতো অনেককে ভ্যাসনি না নিয়ে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বরক নার্স নিগার সুলতানা জানালেন প্রতিদিনই এধরনের অনেক রোগী বিনামুল্যের ভ্যাকসিন না পেয়ে ফিরে যান। পরে হয়তো এদের অনেকে ভ্যাকসিনের টাকা সংগ্রহ করে আবার আসেন। তবে তারা ঝুকিতে থাকেন। বগুড়ার মহাস্থান এলাকার ফাতেমা তার শিশু সন্তান জেরিনকে নিয়ে এসেছেন এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন দিতে। হাসপাতালে এসে জানতে পারেন ভ্যাকসিন কিনতে হবে। বিড়াল বা কুকুর বা র্যাবিসের সংক্রমনের ঝুঁকি থাকে এমন কোন প্রানী কামড়ানো ব্যক্তি হাসপাতালে আসার পর টিকাদান কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ি এক এ্যম্পুল ভ্যাকসিন সির্জিসহ ৪ জন মিলে কিনে আনতে বলা হয়। পরে খাতায় নিবন্ধন করে সিরিয়াল অনুযায়ি তা সেবাদানকারী নার্সদের মাধ্যমে ককুর বা বিড়ালের কামড়ে আহত ব্যক্তিরা গ্রহণ (পুশ) করছেন। ফাতেমা জানান এজন্য তাকে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো ৩ জন না আসা পর্যর্ন্ত। তবে যে সব ব্যক্তির কামড় বা আঁচরানো স্থান গুরুতর তাদের এআরভি ভ্যাকসিনের সঙ্গে আরআইজ ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের দাম কম হলেও আরআইজি’র দাম বেশি। এটি কিনতে গিয়ে দরিদ্র মানুষদের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
হাসপাতাল সুত্র জানায় বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন চিকিৎসা সেবা নিতে প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষ আসেন। এর মধ্যে গড়ে সাড়ে ৫ শ’ জন কুকুরের কামড় বা আঁচরে আহত অবস্থায় আসেন। বাকীরা বিড়াল বা অন্য প্রানী দ্বারা আক্রান্ত। কোন মাসে এন্টি র্যাবিস চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। আর এর বিপরীতে ভ্যাকসিনের সরকারী সরবরাহ মিলে খুবই অপ্রতুল। এরমধ্যে আরআইজি আরো কম। সেবাদানকারী নার্সরা জানান সরকারী হাসপাতালে এসে কেন বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হবে এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন প্রায়। তবে হাসপাতালের নিকটবর্তী ফার্মেসী গুলোতে সব সময়ই ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।
বগুড়া সরকারী মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ সাইফুর রহমান এন্টি র্যাবিস ও আরআইজি ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় সেবা প্রার্থীদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান তারা সরবরাহ পাচ্ছেন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নির্ণয় বিভাগ থেকে যে সরবরাহ পাওয়া যায় তা তাদের চাহিদার চার ভাগের এক ভাগের মতো দাড়ায়। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে জেলার সবকটি উপজেলা ছাড়াও বাইরের জেলা গুলো থেকেও এই সেবা নিতে আসেন। তিনি আরো জানান ১২ জুন থেকে তাদের নিকট থেকে কোন এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন নেই।
সর্বশেষ মে মাসে ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া গিয়েছিলো। তিনি আরো জানান প্রায় প্রতি মাসেই এমন অবস্থায়ার মুখে বেকায়দায় পড়তে হয়।
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
কুকুর বিড়াল কামড়ালে রোগ প্রতিরোধক এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় এর ভুক্তভোগীরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। আবার সরকারী টিকা কেন্দ্রে ভ্যাকসিন (এআরভি) না থাকা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেকায়াদায় রয়েছেন। প্রতিনিয়তি সাধারণ লোকজনের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষকে। রোগীদের বাইরে থেকে সিরিঞ্জসহ ভ্যাকসিন কিনে এনে সরকারী হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ ও বিড়াম্বনায় পড়তে হচ্ছে আগত ভুক্তভোগীদের। আবার ভাকসিন না থাকায় অনেক দরিদ্র রোগী ঝুঁকির মুখে থেকেও ফিরে যাচ্ছেন। বগুড়া জেলা সদরের প্রধান টিকাদান কেন্দ্র বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এই অবস্থা চলছে মাসের পর মাস ধরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন চাহিদার তুলনায় এক চুর্তথাংশ র্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া যায়না। হাসপাতালের ভ্যাকসিন কেন্দ্রে বিজ্ঞপ্তি আকারে লিখে দেয়া হয়েছে ‘ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই’।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের বৃদ্ধ বেলাল হোসেনকে নিজ এলাকাতে কুকুর আঁচর দিয়েছিলো। এ জন্য ভ্যাকসিন দিতে হয় বিষয়টি প্রথমে তিনি জানতেন না। দু’দিন পরে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে দেখালে চিকিৎসক তাকে ভ্যাকসিন নিতে বলেন। হাসপাতালে টিকাদান কেন্দ্রে এসে জানতে পারেন ভ্যাকসিন (এআরভি) ও তার জন্য প্রয়োজন আরআইজি(র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিন) ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই তাই বাইরে থেকে কিনে আনতে হবে। বেশ কিছু সময় চিন্তা করে বেলাল হোসেন টিকাদান কেন্দ্র হতে পা পাড়ালেন ফেরার জন্য। জিজ্ঞাস করতেই জানালেন তিনি শুনেছেন বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে আসলে এর জন্য ‘ইনজেকশন বিনা মুল্যে পাওয়া যায়’। এজন্য শুধু বাড়ি থেকে আসা যাওয়ার টাকা নিয়ে এসেছেন। এ কারণে ফিরে যাচ্ছেন। বেলাল হোসেনের মতো অনেককে ভ্যাসনি না নিয়ে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বরক নার্স নিগার সুলতানা জানালেন প্রতিদিনই এধরনের অনেক রোগী বিনামুল্যের ভ্যাকসিন না পেয়ে ফিরে যান। পরে হয়তো এদের অনেকে ভ্যাকসিনের টাকা সংগ্রহ করে আবার আসেন। তবে তারা ঝুকিতে থাকেন। বগুড়ার মহাস্থান এলাকার ফাতেমা তার শিশু সন্তান জেরিনকে নিয়ে এসেছেন এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন দিতে। হাসপাতালে এসে জানতে পারেন ভ্যাকসিন কিনতে হবে। বিড়াল বা কুকুর বা র্যাবিসের সংক্রমনের ঝুঁকি থাকে এমন কোন প্রানী কামড়ানো ব্যক্তি হাসপাতালে আসার পর টিকাদান কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ি এক এ্যম্পুল ভ্যাকসিন সির্জিসহ ৪ জন মিলে কিনে আনতে বলা হয়। পরে খাতায় নিবন্ধন করে সিরিয়াল অনুযায়ি তা সেবাদানকারী নার্সদের মাধ্যমে ককুর বা বিড়ালের কামড়ে আহত ব্যক্তিরা গ্রহণ (পুশ) করছেন। ফাতেমা জানান এজন্য তাকে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো ৩ জন না আসা পর্যর্ন্ত। তবে যে সব ব্যক্তির কামড় বা আঁচরানো স্থান গুরুতর তাদের এআরভি ভ্যাকসিনের সঙ্গে আরআইজ ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের দাম কম হলেও আরআইজি’র দাম বেশি। এটি কিনতে গিয়ে দরিদ্র মানুষদের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
হাসপাতাল সুত্র জানায় বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন চিকিৎসা সেবা নিতে প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষ আসেন। এর মধ্যে গড়ে সাড়ে ৫ শ’ জন কুকুরের কামড় বা আঁচরে আহত অবস্থায় আসেন। বাকীরা বিড়াল বা অন্য প্রানী দ্বারা আক্রান্ত। কোন মাসে এন্টি র্যাবিস চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। আর এর বিপরীতে ভ্যাকসিনের সরকারী সরবরাহ মিলে খুবই অপ্রতুল। এরমধ্যে আরআইজি আরো কম। সেবাদানকারী নার্সরা জানান সরকারী হাসপাতালে এসে কেন বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হবে এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন প্রায়। তবে হাসপাতালের নিকটবর্তী ফার্মেসী গুলোতে সব সময়ই ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।
বগুড়া সরকারী মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ সাইফুর রহমান এন্টি র্যাবিস ও আরআইজি ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় সেবা প্রার্থীদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান তারা সরবরাহ পাচ্ছেন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নির্ণয় বিভাগ থেকে যে সরবরাহ পাওয়া যায় তা তাদের চাহিদার চার ভাগের এক ভাগের মতো দাড়ায়। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে জেলার সবকটি উপজেলা ছাড়াও বাইরের জেলা গুলো থেকেও এই সেবা নিতে আসেন। তিনি আরো জানান ১২ জুন থেকে তাদের নিকট থেকে কোন এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন নেই।
সর্বশেষ মে মাসে ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া গিয়েছিলো। তিনি আরো জানান প্রায় প্রতি মাসেই এমন অবস্থায়ার মুখে বেকায়দায় পড়তে হয়।