সিলেটের কানাইঘাট কান্দলা গ্রামের জব্বার মিয়ার মেয়ে কুটি হুনা । বয়স মাত্র ১৯। নতুন জীবন, নতুন স্বপ্ন আর এক নতুন প্রাণ। নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। মা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এক তরুণী। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ছাই হয়ে গেছে বার্ন ইউনিটের বিছানায়।
ভালো থাকার আশায় বাবার বাড়িতে এসেছিলেন কুটি হুনা। স্বামীর সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল, তবু চেয়েছিলেন কিছুটা প্রশান্তি। কিন্তু সেই আশ্রয়ই হয়ে উঠল মৃত্যুপুরী। স্বামী আক্তার হোসেন, যার সঙ্গে এক বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়, সেই মানুষটিই রাতে এসে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
কুটি হুনার বাবা জব্বার মিয়া জানান, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার মিয়ার মেয়ে কুটি হুনার বিয়ে হয় একই গ্রামের মৃত সালেহ আহমদ খাইরুলের ছেলে আক্তার হোসেনের (৩১) সঙ্গে। এক বছর আগে পারিবারিকভাবে এই বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। সেই কলহের কারণে গত এক মাস ধরে কুটি হুনা পিতার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
এই অবস্থায় শনিবার রাত ১১টার দিকে আক্তার হোসেন একটি টাইগার ড্রিংকের বোতলে করে পেট্রোল নিয়ে চুপিসারে জব্বার মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করেন। ঘরের খাটে ঘুমন্ত অবস্থায় কুটি হুনাকে দেখে তিনি তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই সময় ঘরের পাশে এশার নামাজে ছিলেন কুটি হুনার মা। মেয়ের আর্তচিৎকার শুনে তিনি ছুটে এসে দেখতে পান আগুনে জ্বলছে তার মেয়ে। তিনিও চিৎকার শুরু করলে আক্তার হোসেন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পানি দিয়ে আগুন নেভান। পরে কুটি হুনাকে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর রোববার ভোরে তার গর্ভপাত ঘটে এবং মৃত সন্তানের জন্ম হয়। শিশুটির মরদেহ ইতোমধ্যে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কুটি হুনার ভাই সাবুল আহমদ জানান, তাদের বোনের অবস্থাও ভালো নয়। ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে এখনো তারা রিলিজ নিতে পারেননি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন পলাতক রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চালু থাকলেও সে ফোন রিসিভ করছেন না।
ঘটনার বিষয়ে আক্তার হোসেনের মামা এবং বিয়ের অন্যতম ঘটক আজির উদ্দিন জানান, পারিবারিক কলহ থেকেই এ ঘটনা ঘটেছে। আক্তার হোসেন কুয়েত ফেরত প্রবাসী। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা চলছিল। এক মাস আগে মুরুব্বিদের সিদ্ধান্তে কুটি হুনা বাবার বাড়িতে ছিলেন। এই অবস্থায় শনিবার রাতে এই নির্মম ঘটনা ঘটায় আক্তার হোসেন। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি কুটি হুনার পাশে হাসপাতালেই অবস্থান করছেন এবং যথাসম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন।
এ ঘটনায় দুই দিন পার হলেও এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আউয়াল জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ঘটনাটি জেনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
সিলেটের কানাইঘাট কান্দলা গ্রামের জব্বার মিয়ার মেয়ে কুটি হুনা । বয়স মাত্র ১৯। নতুন জীবন, নতুন স্বপ্ন আর এক নতুন প্রাণ। নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। মা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এক তরুণী। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ছাই হয়ে গেছে বার্ন ইউনিটের বিছানায়।
ভালো থাকার আশায় বাবার বাড়িতে এসেছিলেন কুটি হুনা। স্বামীর সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল, তবু চেয়েছিলেন কিছুটা প্রশান্তি। কিন্তু সেই আশ্রয়ই হয়ে উঠল মৃত্যুপুরী। স্বামী আক্তার হোসেন, যার সঙ্গে এক বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়, সেই মানুষটিই রাতে এসে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
কুটি হুনার বাবা জব্বার মিয়া জানান, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার মিয়ার মেয়ে কুটি হুনার বিয়ে হয় একই গ্রামের মৃত সালেহ আহমদ খাইরুলের ছেলে আক্তার হোসেনের (৩১) সঙ্গে। এক বছর আগে পারিবারিকভাবে এই বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। সেই কলহের কারণে গত এক মাস ধরে কুটি হুনা পিতার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
এই অবস্থায় শনিবার রাত ১১টার দিকে আক্তার হোসেন একটি টাইগার ড্রিংকের বোতলে করে পেট্রোল নিয়ে চুপিসারে জব্বার মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করেন। ঘরের খাটে ঘুমন্ত অবস্থায় কুটি হুনাকে দেখে তিনি তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই সময় ঘরের পাশে এশার নামাজে ছিলেন কুটি হুনার মা। মেয়ের আর্তচিৎকার শুনে তিনি ছুটে এসে দেখতে পান আগুনে জ্বলছে তার মেয়ে। তিনিও চিৎকার শুরু করলে আক্তার হোসেন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পানি দিয়ে আগুন নেভান। পরে কুটি হুনাকে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর রোববার ভোরে তার গর্ভপাত ঘটে এবং মৃত সন্তানের জন্ম হয়। শিশুটির মরদেহ ইতোমধ্যে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কুটি হুনার ভাই সাবুল আহমদ জানান, তাদের বোনের অবস্থাও ভালো নয়। ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে এখনো তারা রিলিজ নিতে পারেননি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন পলাতক রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চালু থাকলেও সে ফোন রিসিভ করছেন না।
ঘটনার বিষয়ে আক্তার হোসেনের মামা এবং বিয়ের অন্যতম ঘটক আজির উদ্দিন জানান, পারিবারিক কলহ থেকেই এ ঘটনা ঘটেছে। আক্তার হোসেন কুয়েত ফেরত প্রবাসী। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা চলছিল। এক মাস আগে মুরুব্বিদের সিদ্ধান্তে কুটি হুনা বাবার বাড়িতে ছিলেন। এই অবস্থায় শনিবার রাতে এই নির্মম ঘটনা ঘটায় আক্তার হোসেন। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি কুটি হুনার পাশে হাসপাতালেই অবস্থান করছেন এবং যথাসম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন।
এ ঘটনায় দুই দিন পার হলেও এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আউয়াল জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ঘটনাটি জেনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।