জুলাই স্মৃতিসৌধে উপদেষ্টাদের শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি : প্রণব রায়
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এই কাজে স্থানীয় লোকজনকে প্রশাসন সহযোগিতা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও জুলাই-যোদ্ধাদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “স্থানীয়ভাবে নানান ধরনের আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘণকারী, বিশৃঙ্খলা, ভয়াবহ হত্যাকান্ড, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। জুলাইয়ের সময় আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে মহাপরাক্রমশালী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন। অবশ্যই আপনার ঐক্যবদ্ধ থাকলে চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করতে পারবেন। আমাদের সরকারের দায়িত্ব থাকবে, পাশাপাশি আপনারা স্থানীয় চাঁদাবাজ, লুটেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। ইনশাল্লাহ প্রশাসন আপনাদের সহযোগিতা করবে।”
জুলাই আন্দোলনে ‘গণহত্যা’র বিচারে কোনো ঘাটতি থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দৃঢ় কণ্ঠে জানাতে চাই, বিচার পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে। ওইখানে কোনোরকম গাফিলতি থাকবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে যে গতিতে বিচার এগিয়ে চলেছে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সরকারের শাসনামলেই এই হত্যাকান্ডের বিচার হবে।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাইরে জুলাই-আন্দোলন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মামলাগুলোরও তদন্ত দ্রুত শেষ করে ৫ আগস্টের আগে অভিযোগপত্র দাখিল করার জন্য পুলিশকে ‘অনুরোধ’ করেছেন বলেও জানান এ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জের এসপির সঙ্গেও কথা হয়েছে। ওনারা অনেকগুলো মামলার অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন। তাদের রিকোয়েস্ট করেছি, ৫ আগস্টের আগে মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়ার জন্য। এসপি বরেছেন, অনেকগুলো মামলার চার্জশিট দিতে পারবেন।”
“চার্জশিট দেওয়ামাত্র আমরা বিবেচনা করে দেখবো। বিচারকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজন হলে দ্রুত বিচার আইনে সমস্ত অপরাধের বিচার করবো”, যোগ করেন তিনি।
জুলাই আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট মামলার বাদীদের ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি ‘জুলাই আন্দোলনের ঐক্য’ ধরে রাখারও তাগিদ দেন। তিনি বলেন, “আমরা বৈষম্যহীন, শোষনহীন নতুন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকবে, শাসক এসে অপশাসকে পরিণত হবে না। আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে পারলে অবশ্যই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।”
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে এ উপদেষ্টা বলেন, জুলাই মাস আসলে গত বছরের জুলাইয়ের কথা মনে পড়ে। এই জুলাই মাসে সূচিত আন্দোলনেÑ গত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশে যে স্বৈরতন্ত্র, যে ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ ৩৬ দিনে না, খেয়াল করে দেখবেন মাত্র ১৫ দিনে ফ্যাসিস্ট শাসককে উৎখাত করেছে, বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।”
জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা কর্মসূচি নিয়েছেন বলেও জানান এ উপদেষ্টা।
এ অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও বক্তব্য রাখেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “নারায়ণগঞ্জ জেলাতে ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে লড়াই করে তারা প্রাণ দেননি। একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই ৫৬ জন মানুষ শহীদ হয়েছেন। আমরা, আপনারা একসাথে মিলে এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটা সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়বো।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘরে’ রূপান্তরের কথা জানিয়ে আদিলুর রহমান খান বলেন, “গণভবনকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে। আমরা আশা করবো, ৫ আগস্টে উদ্বোধন করার। ওইটা হচ্ছে স্বৈরাচারের ঠিকানা। আমরা ওই ঠিকানাকে সংরক্ষণ করে দেখাতে চাই, এখানে ফ্যাসিবাদ কীভাবে মানুষকে অত্যাচার করতো। কীভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের মানুষ এসে দেখবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী, মুজিববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছিল। যে সংগ্রামে বহু মানুষ গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হন। অনেক আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছিল। সেই লম্বা সময়ের একটা পর্যায়ে নতুন ছাত্ররা বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।”
নারায়ণগঞ্জ নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকায় রেলওয়ের জমিতে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ স্থাপন করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রথম দাবি জানান। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।
কয়েকটি জেলায় জুলাই-স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এটি প্রথম উদ্বোধন করা হয়েছে বলে উপদেষ্টারা জানান। ধাতব এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও স্থাপনে কাজ করেছে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এ অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ ও হতাহত পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন জালকুড়ি এলাকায় শহীদ দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ আদিলের মা আয়েশা আক্তার। তিনি শহীদদের কবরগুলো সংরক্ষণেরও দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জুলাইযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন চলাকালীন একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।
জুলাই স্মৃতিসৌধে উপদেষ্টাদের শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি : প্রণব রায়
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এই কাজে স্থানীয় লোকজনকে প্রশাসন সহযোগিতা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও জুলাই-যোদ্ধাদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “স্থানীয়ভাবে নানান ধরনের আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘণকারী, বিশৃঙ্খলা, ভয়াবহ হত্যাকান্ড, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। জুলাইয়ের সময় আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে মহাপরাক্রমশালী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন। অবশ্যই আপনার ঐক্যবদ্ধ থাকলে চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করতে পারবেন। আমাদের সরকারের দায়িত্ব থাকবে, পাশাপাশি আপনারা স্থানীয় চাঁদাবাজ, লুটেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। ইনশাল্লাহ প্রশাসন আপনাদের সহযোগিতা করবে।”
জুলাই আন্দোলনে ‘গণহত্যা’র বিচারে কোনো ঘাটতি থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দৃঢ় কণ্ঠে জানাতে চাই, বিচার পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে। ওইখানে কোনোরকম গাফিলতি থাকবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে যে গতিতে বিচার এগিয়ে চলেছে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সরকারের শাসনামলেই এই হত্যাকান্ডের বিচার হবে।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাইরে জুলাই-আন্দোলন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মামলাগুলোরও তদন্ত দ্রুত শেষ করে ৫ আগস্টের আগে অভিযোগপত্র দাখিল করার জন্য পুলিশকে ‘অনুরোধ’ করেছেন বলেও জানান এ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জের এসপির সঙ্গেও কথা হয়েছে। ওনারা অনেকগুলো মামলার অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন। তাদের রিকোয়েস্ট করেছি, ৫ আগস্টের আগে মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়ার জন্য। এসপি বরেছেন, অনেকগুলো মামলার চার্জশিট দিতে পারবেন।”
“চার্জশিট দেওয়ামাত্র আমরা বিবেচনা করে দেখবো। বিচারকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজন হলে দ্রুত বিচার আইনে সমস্ত অপরাধের বিচার করবো”, যোগ করেন তিনি।
জুলাই আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট মামলার বাদীদের ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি ‘জুলাই আন্দোলনের ঐক্য’ ধরে রাখারও তাগিদ দেন। তিনি বলেন, “আমরা বৈষম্যহীন, শোষনহীন নতুন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকবে, শাসক এসে অপশাসকে পরিণত হবে না। আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে পারলে অবশ্যই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।”
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে এ উপদেষ্টা বলেন, জুলাই মাস আসলে গত বছরের জুলাইয়ের কথা মনে পড়ে। এই জুলাই মাসে সূচিত আন্দোলনেÑ গত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশে যে স্বৈরতন্ত্র, যে ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ ৩৬ দিনে না, খেয়াল করে দেখবেন মাত্র ১৫ দিনে ফ্যাসিস্ট শাসককে উৎখাত করেছে, বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।”
জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা কর্মসূচি নিয়েছেন বলেও জানান এ উপদেষ্টা।
এ অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও বক্তব্য রাখেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “নারায়ণগঞ্জ জেলাতে ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে লড়াই করে তারা প্রাণ দেননি। একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই ৫৬ জন মানুষ শহীদ হয়েছেন। আমরা, আপনারা একসাথে মিলে এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটা সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়বো।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘরে’ রূপান্তরের কথা জানিয়ে আদিলুর রহমান খান বলেন, “গণভবনকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে। আমরা আশা করবো, ৫ আগস্টে উদ্বোধন করার। ওইটা হচ্ছে স্বৈরাচারের ঠিকানা। আমরা ওই ঠিকানাকে সংরক্ষণ করে দেখাতে চাই, এখানে ফ্যাসিবাদ কীভাবে মানুষকে অত্যাচার করতো। কীভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের মানুষ এসে দেখবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী, মুজিববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছিল। যে সংগ্রামে বহু মানুষ গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হন। অনেক আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছিল। সেই লম্বা সময়ের একটা পর্যায়ে নতুন ছাত্ররা বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।”
নারায়ণগঞ্জ নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকায় রেলওয়ের জমিতে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ স্থাপন করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রথম দাবি জানান। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।
কয়েকটি জেলায় জুলাই-স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এটি প্রথম উদ্বোধন করা হয়েছে বলে উপদেষ্টারা জানান। ধাতব এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও স্থাপনে কাজ করেছে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এ অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ ও হতাহত পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন জালকুড়ি এলাকায় শহীদ দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ আদিলের মা আয়েশা আক্তার। তিনি শহীদদের কবরগুলো সংরক্ষণেরও দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জুলাইযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন চলাকালীন একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।