alt

সারাদেশ

পানের দামে ধস, বিপাকে চাষিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী : বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

রাজশাহীর মোহনপুরের পানচাষি মোস্তফা কামাল বলেন, পানবরজ যেন আমাদের জন্য এক ধরনের প্রাকৃতিক ব্যাংক। হঠাৎ টাকা প্রয়োজন হলে কাউকে ধার বা ব্যাংকে যেতে হয় না বরজ থেকে পান তুলে আড়তে দিলেই মেলে নগদ টাকা। পান চাষ করে এ অঞ্চলের অনেকেই এখন স্বচ্ছল। আগে যারা কষ্টে চলতেন, তারাও এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পানই আমাদের অর্থনীতির চাকা শক্তিশালী করেছে।

রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় ৪, ৫০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়, যার বাৎসরিক আয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এখানকার পান ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। পান বহুবর্ষজীবী হওয়ায় বারবার লাগানোর প্রয়োজন হয় না এবং ৫৬ দিন পরপর পাতা তুলে বিক্রি করা যায়, যা একটি ধারাবাহিক আয়ের উৎস।

পান চাষের পরিধি এবং উৎপাদন দুটোই বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং রপ্তানি না থাকায় বাজারে পানের দাম পড়ে গেছে। এতে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। চলতি বর্ষামৌসুমে প্রতি বিড়া (৬৪টি পান) সর্বোচ্চ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক ছোট পান প্রতি বিড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র এক টাকা দরে। অথচ ৩২ বিড়ায় এক পোয়া, যার দাম দাঁড়ায় মাত্র ৩২ টাকা।

২০১২ সালে মোহনপুরে পানচাষের জমি ছিল ৬৪৪ হেক্টর, যা ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১, ৩১৭ হেক্টরে। উৎপাদন বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০, ৪০১ মেট্রিক টন। এক যুগে দ্বিগুণ চাষ হলেও উৎপাদন খরচ বেড়েছে বহু গুণ। শ্রমিক মজুরি ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৫০-৮০০ টাকা, বাঁশের দাম ১, ২০০ থেকে বেড়ে ৬, ০০০ টাকা, ছাউনির খড়ের দাম ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকা। এমনকি পান গাছ বাঁধার উলার দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা থেকে এখন হয়েছে ১৫০-২০০ টাকা। কিন্তু পানের দাম সেই তুলনায় বাড়েনি। খরা মৌসুমে পুরনো পানের প্রতি বিড়া ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও, এবারের বর্ষায় সেটি নেমে এসেছে ৫০-৬০ টাকায়।

মোহনপুর, বাগমারা ও দুর্গাপুর উপজেলায় পান চাষ বেশি হলেও এখন আশেপাশের জেলাতেও চাষ বাড়ছে।

ফলে সরবরাহ বেড়ে বাজারে ধস নেমেছে। মোহনপুরের একদিলতলা, মৌগাছি, পাকুড়িয়া, কেশরহাটসহ নানা হাটে ঢাকার, ময়মনসিংহের, নওগাঁর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাইকাররা আসেন পান কিনতে।

ঢাকার পাইকার আনিস সিকদার বলেন, গত কয়েক মাস ধরে পানের বাজার একেবারে মন্দা। লোকসান গুনতে হচ্ছে।

নওগাঁর পাইকার মাহাবুব রহমান বলেন, উৎপাদন বেশি হলেও সুপারি, জর্দা ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তার আগ্রহ কমেছে।

মোহনপুরের সইপাড়া গ্রামের চাষি ইমরান আলী বলেন, দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর এত কম দাম যে বরজের খরচই উঠে আসছে না।

কেশরহাটের বদর উদ্দিন বলেন, বর্ষার শুরু থেকেই বাজারে ধস। রপ্তানি বন্ধ থাকায় এবং চাহিদা না থাকায় দাম একেবারে তলানিতে।

চাষিরা সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, পান রপ্তানি চালু না হলে পানচাষেটিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। মোহনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বর্ষায় পান উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে সাদা মাছি ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় কোনো রোগ দেখা দেয়নি। আমরা চাষিদের পাশে আছি।

ছবি

অভয়নগরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মতুয়া সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি হস্তান্তর

ছবি

গোপালগঞ্জে এনসিপি কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা, সেনা-পুলিশ টহল

ছবি

রহিম উদ্দিন সিকদার হত্যা: বিএনপির অভিযোগে ‘জামায়াত নেতা’র নাম, জামায়াতের অস্বীকার

দুর্যোগের সময় ভুল তথ্য ঠেকাতে টিকটকের নতুন টুল

চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়র গ্রেপ্তার

জয়পুরহাট নার্সিং ইনস্টিটিউটে অগ্নিকা-, দুই দিনের ছুটি

ট্রাকের ধাক্কায় বাইকচালক নিহত

মহেশপুরের দত্তনগর হাই স্কুলের মালামাল চুরি

পাদুকা শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে কারখানা মালিক গ্রেপ্তার

ছবি

সিরাজগঞ্জ সালেহা ইসহাক সরকারি বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় প্রতিনিয়ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ

ভালুকায় চাঞ্চল্যকর ৩ খুনের আসামি গ্রেপ্তার

মহেশপুরে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ

ছবি

৩৪ ভারতীয় জেলেকে কারাগারে প্রেরণ

চুয়াডাঙ্গায় দুটি হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি

ফকিরহাট ফলতিতা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

ছবি

বরুড়ায় মিনি শিশু পার্ক, উচ্ছ্বসিত শিশুরা

শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় ৫৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা

কলমাকান্দায় ক্ষতিপূরণ পেল নার্সারি মালিকরা

ছবি

ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত কুষ্টিয়া শহর, দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি

ঈশ্বরগঞ্জে চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ

ছবি

দুমকিতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো থাকলেও নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী

রায়গঞ্জে ৪৩টি গরু চুরি, আতঙ্কে কৃষক-খামারিরা

ছবি

হামলা, অগ্নিসংযোগ ও গুলি: গোপালগঞ্জে উত্তপ্ত এনসিপির সমাবেশ

ছবি

মোহনগঞ্জের পাটের দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষক

ভারতে আটক ৪ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

২১ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না শাহিনের

চাঁদপুরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ

ছবি

কালীগঞ্জে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কে পানি, ভোগান্তিতে ৫০ গ্রামের মানুষ

জুলাই শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

পাথরঘাটায় শিক্ষকের পিটুনিতে দ্বিতীয় শ্রেণীর ৫ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

ছবি

বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

পদ আছে দুই শিক্ষকের নেয়া হয়েছে তৃতীয় শিক্ষক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমাতে ঐক্যবদ্ধ আলোচনার ওপর জোর দিলেন আমীর খসরু

বাউয়েটে ছয় দিনব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন

ছবি

লালপুরে পাট চাষীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

tab

সারাদেশ

পানের দামে ধস, বিপাকে চাষিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

রাজশাহীর মোহনপুরের পানচাষি মোস্তফা কামাল বলেন, পানবরজ যেন আমাদের জন্য এক ধরনের প্রাকৃতিক ব্যাংক। হঠাৎ টাকা প্রয়োজন হলে কাউকে ধার বা ব্যাংকে যেতে হয় না বরজ থেকে পান তুলে আড়তে দিলেই মেলে নগদ টাকা। পান চাষ করে এ অঞ্চলের অনেকেই এখন স্বচ্ছল। আগে যারা কষ্টে চলতেন, তারাও এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পানই আমাদের অর্থনীতির চাকা শক্তিশালী করেছে।

রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় ৪, ৫০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়, যার বাৎসরিক আয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এখানকার পান ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। পান বহুবর্ষজীবী হওয়ায় বারবার লাগানোর প্রয়োজন হয় না এবং ৫৬ দিন পরপর পাতা তুলে বিক্রি করা যায়, যা একটি ধারাবাহিক আয়ের উৎস।

পান চাষের পরিধি এবং উৎপাদন দুটোই বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং রপ্তানি না থাকায় বাজারে পানের দাম পড়ে গেছে। এতে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। চলতি বর্ষামৌসুমে প্রতি বিড়া (৬৪টি পান) সর্বোচ্চ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক ছোট পান প্রতি বিড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র এক টাকা দরে। অথচ ৩২ বিড়ায় এক পোয়া, যার দাম দাঁড়ায় মাত্র ৩২ টাকা।

২০১২ সালে মোহনপুরে পানচাষের জমি ছিল ৬৪৪ হেক্টর, যা ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১, ৩১৭ হেক্টরে। উৎপাদন বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০, ৪০১ মেট্রিক টন। এক যুগে দ্বিগুণ চাষ হলেও উৎপাদন খরচ বেড়েছে বহু গুণ। শ্রমিক মজুরি ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৫০-৮০০ টাকা, বাঁশের দাম ১, ২০০ থেকে বেড়ে ৬, ০০০ টাকা, ছাউনির খড়ের দাম ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকা। এমনকি পান গাছ বাঁধার উলার দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা থেকে এখন হয়েছে ১৫০-২০০ টাকা। কিন্তু পানের দাম সেই তুলনায় বাড়েনি। খরা মৌসুমে পুরনো পানের প্রতি বিড়া ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও, এবারের বর্ষায় সেটি নেমে এসেছে ৫০-৬০ টাকায়।

মোহনপুর, বাগমারা ও দুর্গাপুর উপজেলায় পান চাষ বেশি হলেও এখন আশেপাশের জেলাতেও চাষ বাড়ছে।

ফলে সরবরাহ বেড়ে বাজারে ধস নেমেছে। মোহনপুরের একদিলতলা, মৌগাছি, পাকুড়িয়া, কেশরহাটসহ নানা হাটে ঢাকার, ময়মনসিংহের, নওগাঁর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাইকাররা আসেন পান কিনতে।

ঢাকার পাইকার আনিস সিকদার বলেন, গত কয়েক মাস ধরে পানের বাজার একেবারে মন্দা। লোকসান গুনতে হচ্ছে।

নওগাঁর পাইকার মাহাবুব রহমান বলেন, উৎপাদন বেশি হলেও সুপারি, জর্দা ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তার আগ্রহ কমেছে।

মোহনপুরের সইপাড়া গ্রামের চাষি ইমরান আলী বলেন, দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর এত কম দাম যে বরজের খরচই উঠে আসছে না।

কেশরহাটের বদর উদ্দিন বলেন, বর্ষার শুরু থেকেই বাজারে ধস। রপ্তানি বন্ধ থাকায় এবং চাহিদা না থাকায় দাম একেবারে তলানিতে।

চাষিরা সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, পান রপ্তানি চালু না হলে পানচাষেটিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। মোহনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বর্ষায় পান উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে সাদা মাছি ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় কোনো রোগ দেখা দেয়নি। আমরা চাষিদের পাশে আছি।

back to top