alt

সারাদেশ

কারফিউর শহরে নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই সৎকার, তদন্তে প্রশ্ন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহত চারজনকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার করা হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে মামলা চালানো ও দায়ী শনাক্তের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী বলেছেন, ময়নাতদন্ত না হওয়ায় তারা কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, তা উদঘাটনের সম্ভাবনাও কমে গেছে।

বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে ঘিরে দফায় দফায় হামলার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুরো শহরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এতে চারজন নিহত এবং অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।

নিহতরা হলেন– শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (৩০), কোটালিপাড়ার রমজান কাজী (১৭), শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাত থেকে শহরে কারফিউ জারি করা হয়, যা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুক্রবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার

নিহতদের মধ্যে দীপ্ত সাহাকে বুধবার রাতে পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়। রমজান কাজীকে রাতে এশার নামাজের পর এবং সোহেল রানা ও ইমনকে বৃহস্পতিবার সকালে কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের লোকজন মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ায় সুরতহাল বা ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ও শতাধিক লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল, যা পরবর্তী মামলাগুলোতে জটিলতা তৈরি করেছিল।

জেলা হাসপাতাল থেকে লাশ কীভাবে নেওয়া হলো জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, “ওই সময় হাসপাতালে নিরাপত্তা কম ছিল, ভিড়ের মধ্যে লাশগুলো নিয়ে যাওয়া হয়।”

একজন আইনজীবী বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা অবৈধ এবং অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। ভবিষ্যতে মামলা হলে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।

গুলির উৎস নিয়ে ধোঁয়াশা

পুলিশের মহাপরিদর্শক দাবি করেছেন, পুলিশ কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করা হয়েছে, তবে গুলির কথা উল্লেখ করেনি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে ভিডিওচিত্রে শোনা গুলির শব্দের মিল নেই। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনাস্থা বাড়ছে।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ময়নাতদন্ত হলে বোঝা যেত কী ধরনের গুলি বা আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়া আইনের ব্যত্যয়।

তদন্ত কমিটি ও আহতদের অবস্থা

ঘটনার তদন্তে স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে, যাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংঘর্ষে প্রায় ৪৫ জন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের একজনের পায়ে গুলি রয়ে গেছে, যা অস্ত্রোপচার করে বের করতে হবে।

গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে দুজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

কারফিউর শহরে আতঙ্ক

কারফিউর কারণে শহর ফাঁকা পড়ে গেছে। রাস্তাঘাটে সীমিত কিছু যানবাহন ছাড়া চলাচল নেই। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেকে এলাকা ছেড়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে টহল দিয়েছে। আটক অভিযানে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোপালগঞ্জে কারফিউর মধ্যেও স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন

ছবি

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলাকালীন আটক ৪৫

ছবি

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় মৃত্যু বেড়ে ৫

সারাদেশে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদ

বিরামপুরে ঝড়-বৃষ্টিকে সঙ্গী করে, মাটিতে বসেই চলছে ১৭০ শিশুর শিক্ষা, সরকারি সহায়তার আলো এখনও অদৃশ্য

ধানমন্ডিতে অটোরিকশা ছিনতাই, চালককে মাথায় আঘাত

ডেঙ্গুঃ ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭৫ জন হাসপাতালে

গোপালগঞ্জে উন্মত্ত পরিস্থিতির দায় সরকারকে নিতে হবে: সিপিবি

ছবি

দোষীদের শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

ছবি

মোটরবাইক পেল স্যামসাংয়ের ‘দ্য গ্র্যান্ড ইনভাইট’ ক্যাম্পেইন বিজয়ীরা

ছবি

যমজ ভাই এমবিবিএস পাস করলেন একসঙ্গে

প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে মোহনগঞ্জে জৌলুস হারাচ্ছে বেত ও বাঁশ শিল্প

ছবি

শ্রীমঙ্গলে অজগর সাপ উদ্ধার

মাদারগঞ্জে জুলাই শহীদ দিবস পালিত

বেলকুচিতে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় ভাই-বোনের মৃত্যু

ছবি

হবিগঞ্জে ২ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ভোলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ, ক্ষুদে বিজ্ঞানী সংসদ

চুয়াডাঙ্গায় হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি

ছবি

হবিগঞ্জে কয়েলের আগুনে নিঃস্ব দুই দিনমজুর পরিবার

‘কাজ শুধু শিখলেই হবে না, এর মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে’

মহেশপুরে নদী থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

শেরপুর শহর ও আশপাশের এলাকা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ দুর্ভোগ চরমে

ছবি

পরিবেশ রক্ষায় কালীগঞ্জে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

ছবি

নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মঝে চারা বিতরণ

ছবি

গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান সেনাবাহিনীর

নোয়াখালীতে বাসে যাত্রীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ২

বগুড়ায় এক শিক্ষক বেতন তুলছেন দুই স্কুল থেকে

ছবি

সিরাজগঞ্জে বর্ষাকালেও পাথারে পানি নেই

কারফিউ চলবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত, গ্রেপ্তার ২৫

মীরসরাইয়ে মৎস্য খামার দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

হবিগঞ্জে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগে ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

পলিতে নদী ভরাট-অপরিকল্পিত মাছের ঘের কেশবপুর ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

সোনাইমুড়িতে নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, আটক ১

সিদ্ধিরগঞ্জে সৎমাকে পিটিয়ে হত্যা, দুই ছেলে গ্রেপ্তার

ছবি

আনোয়ারায় পুকুর থেকে অস্ত্র উদ্ধার

পবিপ্রবিতে জুলাই শহীদ দিবস পালিত

tab

সারাদেশ

কারফিউর শহরে নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই সৎকার, তদন্তে প্রশ্ন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহত চারজনকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার করা হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে মামলা চালানো ও দায়ী শনাক্তের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী বলেছেন, ময়নাতদন্ত না হওয়ায় তারা কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, তা উদঘাটনের সম্ভাবনাও কমে গেছে।

বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে ঘিরে দফায় দফায় হামলার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুরো শহরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এতে চারজন নিহত এবং অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।

নিহতরা হলেন– শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (৩০), কোটালিপাড়ার রমজান কাজী (১৭), শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাত থেকে শহরে কারফিউ জারি করা হয়, যা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুক্রবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার

নিহতদের মধ্যে দীপ্ত সাহাকে বুধবার রাতে পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়। রমজান কাজীকে রাতে এশার নামাজের পর এবং সোহেল রানা ও ইমনকে বৃহস্পতিবার সকালে কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের লোকজন মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ায় সুরতহাল বা ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ও শতাধিক লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল, যা পরবর্তী মামলাগুলোতে জটিলতা তৈরি করেছিল।

জেলা হাসপাতাল থেকে লাশ কীভাবে নেওয়া হলো জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, “ওই সময় হাসপাতালে নিরাপত্তা কম ছিল, ভিড়ের মধ্যে লাশগুলো নিয়ে যাওয়া হয়।”

একজন আইনজীবী বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা অবৈধ এবং অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। ভবিষ্যতে মামলা হলে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।

গুলির উৎস নিয়ে ধোঁয়াশা

পুলিশের মহাপরিদর্শক দাবি করেছেন, পুলিশ কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করা হয়েছে, তবে গুলির কথা উল্লেখ করেনি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে ভিডিওচিত্রে শোনা গুলির শব্দের মিল নেই। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনাস্থা বাড়ছে।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ময়নাতদন্ত হলে বোঝা যেত কী ধরনের গুলি বা আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়া আইনের ব্যত্যয়।

তদন্ত কমিটি ও আহতদের অবস্থা

ঘটনার তদন্তে স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে, যাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংঘর্ষে প্রায় ৪৫ জন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের একজনের পায়ে গুলি রয়ে গেছে, যা অস্ত্রোপচার করে বের করতে হবে।

গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে দুজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

কারফিউর শহরে আতঙ্ক

কারফিউর কারণে শহর ফাঁকা পড়ে গেছে। রাস্তাঘাটে সীমিত কিছু যানবাহন ছাড়া চলাচল নেই। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেকে এলাকা ছেড়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে টহল দিয়েছে। আটক অভিযানে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

back to top