জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেও অনিয়ম অব্যস্থাপনায় খুঁড়িয়ে চলছে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফলে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ৩ লাখ সেবাগ্রহীতা জনসাধারণকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি কাগজে-কলমে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেবা নেই ৫০ শয্যার, সেবা থেকে বঞ্চিত জনসাধারণ। প্রতিনিয়ত সেবা নিতে এসে হতে হয় বিড়ম্বনার শিকার। অন্যদিকে জনবল ও চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মাদারগঞ্জ উপজেলার ৩ লাখ মানুষ।
জানা যায়, জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির আউট ডোরে রোগীদের চিকিৎসা সেবার নামে অব্যবস্থায় ব্যবস্থাপত্র লিখছেন এক ইসিজি টেকনিশিয়ান। অন্যদিকে পুরনো বিছানায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে রোগীরা।
মাদারগঞ্জে ৩ লাখ জনসাধারণ কে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য গত ২০২৩ সালের ১১ মার্চ মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল বৃদ্ধি না করায় শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি সেবা কার্যক্রম ও রোগীর সেবার মান। তাই আগের এত পুরনো ভবনেই ৫০ শয্যার বিপরীতেই কোন রকমে চলছে রোগী ভর্তি ও পরিচর্যা।
জানা যায়, মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও পাঁচজন মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে চারজন মেডিকেল অফিসারই প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন কারণে ছুটিতে ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তাই বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগে সেবা দিচ্ছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। ৩১ নার্সের বিপরীতে ২৭ জন কর্মরত রয়েছেন, যা সন্তোষজনক হলেও তিনজন ওয়ার্ডবয়ের জায়গায় নেই একজনও।
মাদারগঞ্জ উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আরও দেখা যায়, পুরনো তিনতলা ভবনের নিচ তলায় বহির্বিভাগে রোগী ও তাদের স্বজনরা টিকিট কেটে সেবা নিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় কর্মরত চিকিৎসকদের সেবা দিতে বেশ বেগ পেতে হয় এবং রোগীরাও সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বহির্বিভাগে সেবা নিতে মহিষবাথান থেকে আসা রোগিদের স্বজন ইসমাত পাশা সংবাদ কে বলেন, ডাক্তার ওষুধ লিখে দেন, কিন্তু হাসপাতাল থেকে তেমন কোনো ওষুধ দেয় না। সব ঔষধ বাহির থেকে কিনতে হয়। শুধু ঔষধ না এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজিসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়।
জানা যায়, গত অর্থবছরে মাদারগঞ্জ ১শ শয্যার সরকারি হাসপাতালে ওষুধপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্রসহ ৬টি প্যাকেজে ৬৫ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। মেসার্স সরকার এন্টারপ্রাইজ ও নাটোরের হক এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি কাজ পেলেও শুরু থেকেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঠিকাদারদের নাম গোপন রাখেন। গত ২৪ জুন সরকার এন্টারপ্রাইজ ও হক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আসলাম হোসেন ও এমদাদুল হককে ওষুধ ও অন্যান্য মালামাল সরবরাহের বিপরীতে ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৩৮ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে।
এবিষয়টি স্বীকার করেছেন মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে এর বিনিময়ে আইফোন ও নগদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আসলাম হোসেন সংবাদ কে বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ওষুধপত্রসহ সব মালামাল সরবরাহ করেই বিল তোলা হয়েছে। আইফোন ও উৎকোচ দিয়ে বিল তোলার অভিযোগ সত্য নয়।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন সংবাদ কে বলেন, ঠিকাদাররা সব ওষুধ ও মালামাল সরবরাহ না করলেও পুরো বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন আজিজুল হক সংবাদ কে বলেন, সরবরাহ শেষ হওয়ার আগে পুরো বিল পরিশোধের নিয়ম নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেও অনিয়ম অব্যস্থাপনায় খুঁড়িয়ে চলছে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফলে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ৩ লাখ সেবাগ্রহীতা জনসাধারণকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি কাগজে-কলমে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেবা নেই ৫০ শয্যার, সেবা থেকে বঞ্চিত জনসাধারণ। প্রতিনিয়ত সেবা নিতে এসে হতে হয় বিড়ম্বনার শিকার। অন্যদিকে জনবল ও চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মাদারগঞ্জ উপজেলার ৩ লাখ মানুষ।
জানা যায়, জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির আউট ডোরে রোগীদের চিকিৎসা সেবার নামে অব্যবস্থায় ব্যবস্থাপত্র লিখছেন এক ইসিজি টেকনিশিয়ান। অন্যদিকে পুরনো বিছানায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে রোগীরা।
মাদারগঞ্জে ৩ লাখ জনসাধারণ কে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য গত ২০২৩ সালের ১১ মার্চ মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল বৃদ্ধি না করায় শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি সেবা কার্যক্রম ও রোগীর সেবার মান। তাই আগের এত পুরনো ভবনেই ৫০ শয্যার বিপরীতেই কোন রকমে চলছে রোগী ভর্তি ও পরিচর্যা।
জানা যায়, মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও পাঁচজন মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে চারজন মেডিকেল অফিসারই প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন কারণে ছুটিতে ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তাই বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগে সেবা দিচ্ছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। ৩১ নার্সের বিপরীতে ২৭ জন কর্মরত রয়েছেন, যা সন্তোষজনক হলেও তিনজন ওয়ার্ডবয়ের জায়গায় নেই একজনও।
মাদারগঞ্জ উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আরও দেখা যায়, পুরনো তিনতলা ভবনের নিচ তলায় বহির্বিভাগে রোগী ও তাদের স্বজনরা টিকিট কেটে সেবা নিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় কর্মরত চিকিৎসকদের সেবা দিতে বেশ বেগ পেতে হয় এবং রোগীরাও সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বহির্বিভাগে সেবা নিতে মহিষবাথান থেকে আসা রোগিদের স্বজন ইসমাত পাশা সংবাদ কে বলেন, ডাক্তার ওষুধ লিখে দেন, কিন্তু হাসপাতাল থেকে তেমন কোনো ওষুধ দেয় না। সব ঔষধ বাহির থেকে কিনতে হয়। শুধু ঔষধ না এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজিসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়।
জানা যায়, গত অর্থবছরে মাদারগঞ্জ ১শ শয্যার সরকারি হাসপাতালে ওষুধপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্রসহ ৬টি প্যাকেজে ৬৫ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। মেসার্স সরকার এন্টারপ্রাইজ ও নাটোরের হক এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি কাজ পেলেও শুরু থেকেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঠিকাদারদের নাম গোপন রাখেন। গত ২৪ জুন সরকার এন্টারপ্রাইজ ও হক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আসলাম হোসেন ও এমদাদুল হককে ওষুধ ও অন্যান্য মালামাল সরবরাহের বিপরীতে ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৩৮ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে।
এবিষয়টি স্বীকার করেছেন মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে এর বিনিময়ে আইফোন ও নগদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আসলাম হোসেন সংবাদ কে বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ওষুধপত্রসহ সব মালামাল সরবরাহ করেই বিল তোলা হয়েছে। আইফোন ও উৎকোচ দিয়ে বিল তোলার অভিযোগ সত্য নয়।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন সংবাদ কে বলেন, ঠিকাদাররা সব ওষুধ ও মালামাল সরবরাহ না করলেও পুরো বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন আজিজুল হক সংবাদ কে বলেন, সরবরাহ শেষ হওয়ার আগে পুরো বিল পরিশোধের নিয়ম নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।