ভৈরবে ভাত পঁচিয়ে উৎপাদন হচ্ছে দেশীয় জাতের চুলাই মদ। পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোডের দুইটি পল্লীতে অবাধে উৎপাদিত হওয়া এসব মদ দিনে ও রাতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকসহ মাদক কারবারিদের কাছে। তবে ওই দুটি এলাকায় সন্ধ্যার পর উঠতি বয়সের যুবকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এই দেশীয় বাংলা মদ পান করে অনেকেই রাস্তায় মাতলামি করছে আবার অনেকেই অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। যা বিভিন্ন সময় পথচারীদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের পাওয়ার হাউজ রোড ও চান্দেরটিলায় দুটি হরিজন পল্লীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক লিটার দেশীয় চুলাই মদ উৎপাদিত হয়। অন্তত ২০টি ঘরে চুলাই মদ উৎপাদন করা হচ্ছে। মদ তৈরি উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় সাদা ভাত ও চিটাগুড়সহ অন্যান্য উপকরণ। ড্রামে সাদা ভাত ও চিটাগুড় পানিতে ভিজিয়ে দীর্ঘদিন রেখে পচাঁনো হয়। সেই পচাঁ ভাত ও চিটাগুড় কয়েক ধাপে প্রসেস করে চুলাই বড় পাতিল বসিয়ে আগুনে তাপ দিয়ে উত্তপ্ত করা বাষ্প থেকে বিশেষ কৌশলে তৈরি করা হয় এসব চুলাই মদ।
অভিযোগ রয়েছে, হরিজন পল্লীর আজাদ লাল ও চান্দেরটিলার মতি ও বাবুলসহ একটি সিন্ডিকেট এইসব মদের কারখানা গুলো দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধভাবে মদ উৎপাদন ও বেচাকেনা। মদ তৈরির উপকরণ কিনতেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা দাদনের মাধ্যমে টাকা খাটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। আর সহজলভ্য এসব মদপান করে উঠতি বয়সের যুবকরা মাদকে আসক্ত হওয়ার পাশাপাশি চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে লিপ্ত হচ্ছে। অনেক রিকসা চালক সারাদিন পরিশ্রম করে যে টাকা রোজগার করে, তারা সেই টাকা দিয়ে চুলাই মদ পান করছে নিয়মিত। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষাসহ চুরি ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হওয়া চুলাইমদ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। এসব মদপান করলে লিভারসিরোসিস, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, গ্যাস্টিকসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চোলাই মদে বিষাক্ত রাসায়নিক হিসেবে মিথানল, ইউরিয়া, পিরিডিন মিশ্রিত করা হয়, যা স্নায়ুর রোগ থেকে চোখ নষ্ট এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেলের ইন্সপেক্টর মাসুদুর রহমান বলেন, দুটি হরিজন পল্লীতে মদ তৈরি ও বিক্রি হওয়ায় বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে মদ ধ্বংস করা হয়েছে। সুইপাররা পরিছন্ন কাজ করাই এসব মদ তাদের প্রয়োজন হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে তারা ছাড় পেয়ে যায়। কোন ভাবেই তারা মদ বিক্রি করতে পারবেনা। খুব দ্রুত এসব মদের কারখানায় অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসের কতিপয় সদস্যরা চুলাই মদ উৎপাদনে জড়িতদের কাছ থেকে মাসোহারা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন। ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, অবৈধভাবে মদ উৎপাদন দ-নীয় অপরাধ।
কোন ব্যক্তি যদি মদ উৎপাদন, বিক্রি ও বহন করছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। তাছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
ভৈরবে ভাত পঁচিয়ে উৎপাদন হচ্ছে দেশীয় জাতের চুলাই মদ। পৌর শহরের পাওয়ার হাউজ রোডের দুইটি পল্লীতে অবাধে উৎপাদিত হওয়া এসব মদ দিনে ও রাতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকসহ মাদক কারবারিদের কাছে। তবে ওই দুটি এলাকায় সন্ধ্যার পর উঠতি বয়সের যুবকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এই দেশীয় বাংলা মদ পান করে অনেকেই রাস্তায় মাতলামি করছে আবার অনেকেই অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। যা বিভিন্ন সময় পথচারীদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের পাওয়ার হাউজ রোড ও চান্দেরটিলায় দুটি হরিজন পল্লীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক লিটার দেশীয় চুলাই মদ উৎপাদিত হয়। অন্তত ২০টি ঘরে চুলাই মদ উৎপাদন করা হচ্ছে। মদ তৈরি উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় সাদা ভাত ও চিটাগুড়সহ অন্যান্য উপকরণ। ড্রামে সাদা ভাত ও চিটাগুড় পানিতে ভিজিয়ে দীর্ঘদিন রেখে পচাঁনো হয়। সেই পচাঁ ভাত ও চিটাগুড় কয়েক ধাপে প্রসেস করে চুলাই বড় পাতিল বসিয়ে আগুনে তাপ দিয়ে উত্তপ্ত করা বাষ্প থেকে বিশেষ কৌশলে তৈরি করা হয় এসব চুলাই মদ।
অভিযোগ রয়েছে, হরিজন পল্লীর আজাদ লাল ও চান্দেরটিলার মতি ও বাবুলসহ একটি সিন্ডিকেট এইসব মদের কারখানা গুলো দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধভাবে মদ উৎপাদন ও বেচাকেনা। মদ তৈরির উপকরণ কিনতেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা দাদনের মাধ্যমে টাকা খাটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। আর সহজলভ্য এসব মদপান করে উঠতি বয়সের যুবকরা মাদকে আসক্ত হওয়ার পাশাপাশি চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে লিপ্ত হচ্ছে। অনেক রিকসা চালক সারাদিন পরিশ্রম করে যে টাকা রোজগার করে, তারা সেই টাকা দিয়ে চুলাই মদ পান করছে নিয়মিত। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষাসহ চুরি ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হওয়া চুলাইমদ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। এসব মদপান করলে লিভারসিরোসিস, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, গ্যাস্টিকসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চোলাই মদে বিষাক্ত রাসায়নিক হিসেবে মিথানল, ইউরিয়া, পিরিডিন মিশ্রিত করা হয়, যা স্নায়ুর রোগ থেকে চোখ নষ্ট এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেলের ইন্সপেক্টর মাসুদুর রহমান বলেন, দুটি হরিজন পল্লীতে মদ তৈরি ও বিক্রি হওয়ায় বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে মদ ধ্বংস করা হয়েছে। সুইপাররা পরিছন্ন কাজ করাই এসব মদ তাদের প্রয়োজন হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে তারা ছাড় পেয়ে যায়। কোন ভাবেই তারা মদ বিক্রি করতে পারবেনা। খুব দ্রুত এসব মদের কারখানায় অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসের কতিপয় সদস্যরা চুলাই মদ উৎপাদনে জড়িতদের কাছ থেকে মাসোহারা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন। ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, অবৈধভাবে মদ উৎপাদন দ-নীয় অপরাধ।
কোন ব্যক্তি যদি মদ উৎপাদন, বিক্রি ও বহন করছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। তাছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।