বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরসহ সান্তাহার পৌর শহরে ব্যাপক হারে বেড়েছে শব্দ দূষন । উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো, যাবাহনের হাইড্রলিক হর্ণ ব্যবহার মানুষজনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। শব্দের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে না থাকায় শিশু ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী, আদমদীঘি ও সান্তাহার এলাকায় শব্দের মাত্রা অনেক আগেই সহনীয় পর্যায় ছড়িয়ে গেছে। ফলে দিনে রাতে নানা শব্দদুষণে অতিষ্ঠ পৌরবাসি। এখন পুরো উপজেলা অসহনীয় শব্দদুষণে অতিষ্ঠ মানুষ। ফলে অল্প বয়সেই শিশুদের দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। এসবের বিরুদ্ধে নেই কোন তদারকি।
উপজেলায় স্কুল-কলেজের সময়সহ নানা সময় বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপনে, পশুর মাংস বিক্রি, কোচিং সেন্টার, বিভিন্ন চিকিৎসকদের ঠিকানা সংবোলিত প্রচার উচ্চ শব্দে মাইকিং হয়। তাছাড়া বিবাহ, পিকিনিকসহ নানা অনুষ্ঠানে প্রায় সারারাত কোন কোন দিন উচ্চ শব্দে মাইক ব্যবহার হয়।
আর এসবের বিরুদ্ধে নেই কোন প্রশাসনিক প্রচারণা, পদক্ষেপ। আদমদীঘি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, উচ্চমাত্রা শব্দদুষণে শিক্ষার্থীসহ সব মানুষেরই ক্ষতি হতে পারে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত শব্দদুষণের মধ্যে থাকলে মানুষের শ্রবনশক্তি কমে যায়। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এ থেকে মানসিক চাপও সৃষ্ঠি হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ বিধি অনুযায়ী, নীরব এলাকার রাতে শব্দের সহনীয় মাত্রা ৪০ ডেসিবল (শব্দের একক)। দিনে ৫০ ডেসিবল। আবাসিক এলাকায় রাতে সহনশীল মাত্রা ৪৫ ডেসিবল ও দিনে ৬০ ডেসিবল। শুধু বাণিজ্যিক এলাকায় রাতে ৬০ ডেসিবল ও দিনে ৭০ ডেসিবল। আর শিল্প এলাকায় রাতে সহনীয় মাত্রা ৭০ ডেসিবেল ও দিনে ৭৫ ডেসিবেল।
সাধারনত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও বিশেষ অফিস-আদালত এলাকাগুলিকে নীরব এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় শব্দের মাত্রা অনেক বেশি। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দদুষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা,২০০৬ অনুযায়ী, নীরব এলাকায় যানবাহনের হর্ণ (উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী নিউম্যাটিক, হাইড্রোলিক বা মাল্টি টিউনড) বাজানো নিষেধ। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহিৃত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার জরিমানাসহ বিভিন্ন দন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্ত বেশি শব্দের কারণে কোনো যানবাহনের চালকের শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আশরুফুজ্জামান বলেন, এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না। ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসন চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে পশ্চিম বগুড়ার অঞ্চলগুলি শব্দদুষণ ব্যাপব মাত্রায় জড়িয়ে গেছে। বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।
বগুড়া জেলা বিআরটিএ পরিদর্শক ফয়েজ উদ্দীন বলেন, সাধারনত কোনো যানবাহরে হাইড্রোলিক হর্ন থাকলে, তাতে উচ্চ শব্দ হয়। এই যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেক যানবাহনে হর্ন খুলে নেওয়া হয়। কিন্ত এর দাম কম হওয়ায় আবার তারা লাগিয়ে নেন। এই সংকট সমাধানে হাইড্রোলিক হর্নের দোকানগুলিতে অভিযান চালানো হবে।
শব্দদুষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ অনুসারে, আবাসিক, বাণিজ্যিক,মিশ্র, শিল্প ও নিরব এলাকাগুলো চিহিৃত করে সাইনবোর্ড বা সংকেত ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। বিধিমালায় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। তবে এই উপজেলার কোথাও এ রকম সংকেত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সান্তাহার পৌরসভার সাবেক মেয়র তোফাজ্ঝল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে । প্রশাসনের পাশাপশি সাধারণ জনগন এ বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে শব্দ দূষণ বন্ধ করা সম্ভব।
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরসহ সান্তাহার পৌর শহরে ব্যাপক হারে বেড়েছে শব্দ দূষন । উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো, যাবাহনের হাইড্রলিক হর্ণ ব্যবহার মানুষজনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। শব্দের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে না থাকায় শিশু ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী, আদমদীঘি ও সান্তাহার এলাকায় শব্দের মাত্রা অনেক আগেই সহনীয় পর্যায় ছড়িয়ে গেছে। ফলে দিনে রাতে নানা শব্দদুষণে অতিষ্ঠ পৌরবাসি। এখন পুরো উপজেলা অসহনীয় শব্দদুষণে অতিষ্ঠ মানুষ। ফলে অল্প বয়সেই শিশুদের দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। এসবের বিরুদ্ধে নেই কোন তদারকি।
উপজেলায় স্কুল-কলেজের সময়সহ নানা সময় বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপনে, পশুর মাংস বিক্রি, কোচিং সেন্টার, বিভিন্ন চিকিৎসকদের ঠিকানা সংবোলিত প্রচার উচ্চ শব্দে মাইকিং হয়। তাছাড়া বিবাহ, পিকিনিকসহ নানা অনুষ্ঠানে প্রায় সারারাত কোন কোন দিন উচ্চ শব্দে মাইক ব্যবহার হয়।
আর এসবের বিরুদ্ধে নেই কোন প্রশাসনিক প্রচারণা, পদক্ষেপ। আদমদীঘি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, উচ্চমাত্রা শব্দদুষণে শিক্ষার্থীসহ সব মানুষেরই ক্ষতি হতে পারে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত শব্দদুষণের মধ্যে থাকলে মানুষের শ্রবনশক্তি কমে যায়। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এ থেকে মানসিক চাপও সৃষ্ঠি হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ বিধি অনুযায়ী, নীরব এলাকার রাতে শব্দের সহনীয় মাত্রা ৪০ ডেসিবল (শব্দের একক)। দিনে ৫০ ডেসিবল। আবাসিক এলাকায় রাতে সহনশীল মাত্রা ৪৫ ডেসিবল ও দিনে ৬০ ডেসিবল। শুধু বাণিজ্যিক এলাকায় রাতে ৬০ ডেসিবল ও দিনে ৭০ ডেসিবল। আর শিল্প এলাকায় রাতে সহনীয় মাত্রা ৭০ ডেসিবেল ও দিনে ৭৫ ডেসিবেল।
সাধারনত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও বিশেষ অফিস-আদালত এলাকাগুলিকে নীরব এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় শব্দের মাত্রা অনেক বেশি। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দদুষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা,২০০৬ অনুযায়ী, নীরব এলাকায় যানবাহনের হর্ণ (উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী নিউম্যাটিক, হাইড্রোলিক বা মাল্টি টিউনড) বাজানো নিষেধ। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহিৃত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার জরিমানাসহ বিভিন্ন দন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্ত বেশি শব্দের কারণে কোনো যানবাহনের চালকের শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আশরুফুজ্জামান বলেন, এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না। ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসন চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে পশ্চিম বগুড়ার অঞ্চলগুলি শব্দদুষণ ব্যাপব মাত্রায় জড়িয়ে গেছে। বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।
বগুড়া জেলা বিআরটিএ পরিদর্শক ফয়েজ উদ্দীন বলেন, সাধারনত কোনো যানবাহরে হাইড্রোলিক হর্ন থাকলে, তাতে উচ্চ শব্দ হয়। এই যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেক যানবাহনে হর্ন খুলে নেওয়া হয়। কিন্ত এর দাম কম হওয়ায় আবার তারা লাগিয়ে নেন। এই সংকট সমাধানে হাইড্রোলিক হর্নের দোকানগুলিতে অভিযান চালানো হবে।
শব্দদুষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ অনুসারে, আবাসিক, বাণিজ্যিক,মিশ্র, শিল্প ও নিরব এলাকাগুলো চিহিৃত করে সাইনবোর্ড বা সংকেত ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। বিধিমালায় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। তবে এই উপজেলার কোথাও এ রকম সংকেত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সান্তাহার পৌরসভার সাবেক মেয়র তোফাজ্ঝল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে । প্রশাসনের পাশাপশি সাধারণ জনগন এ বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে শব্দ দূষণ বন্ধ করা সম্ভব।