মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) : পৌরসবা ভবন -সংবাদ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভাটি ১৯৯৩ সনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা করেন। সূচনা লগ্ন থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় কাগজে কলমে তৃতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও বাস্তবমুখী তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। যে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন তখনই তার নিজের আখের গুছিয়েছেন।
ইংরেজি ১৯৯৭ সন হতে ১৯৯৯ পর্যন্ত প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মরহুম এ.কে.এম সেলিম মিয়া, ১৯৯৯ইং সন থেকে ২০২২ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রফিউদ্দীন আহম্মেদ ফেরদৌস, মেয়র পদের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর-৬ মাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আরিফ-উল-হক-৬ মাস, আব্দুল কাইয়ূম-৬ মাস ও বর্তমানে তিনি ২য় মেয়াদে প্রশাসকের চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরিফ-উল-হক ও আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বরের বিরুদ্ধেও দোর্দন্ড প্রতাপ, অর্থ লোপাট ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। তিন জনের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অর্থ জালিয়াতি, নিয়োগ ও কমিশন বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে সাবেক মেয়র মো. রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে।
কাজ না করে একই কাজ বার বার টেন্ডার দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, চাপা টেন্ডারের মাধ্যমে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ও তার বিশ্বস্তজনের লাইসেন্সে কাজ ভাগিয়ে নেয়া, প্রত্যেক ঠিকাদারের কাজ থেকে ৩০% কমিশন হাতিয়ে নেয়া, যার ফলস্বরূপ ৫৪ কোটি টাকায় নির্মিত অতি নিম্নমানের পানির প্রকল্প জংধরা পানির পাইপের অজ্রর ছিদ্র দিয়ে সে পানি মাঝ পথেই শেষ হয়ে যায়। যে কারণে নির্ধারিত সময় সরবরাহকৃত পানি পৌরবাসী পাচ্ছে না। অগণিত লোকের অভিযোগ আমরা রীতিমত পানি পাই না। অথচ বিল কাগজ দিতে কর্তৃপক্ষ একটুও বিলম্ব করছে না।
ঠিকাদারদের থেকে কাজ শুরুর আগেই কমিশন বাণিজ্যের কারণে তৎকালিন প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক ও পৌর সচিব হারুন অর রশিদ কোন ধরনের কাজের তদারকি করেননি বরং তারা কমিশন বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন। যে কারণে সে নামে মাত্র করা রাস্তা-ঘাট ড্রেনেজ ভেঙ্গে খানাখন্দরে পরিণত হয়েছে। একচোখা বন্টনে প্রতিফলনের চিত্র আজো দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রান্তিক অজো পাড়া গায়ের দুর্ভোগ কবলিত অসংখ্য মাটির ক্লেদাক্ত রাস্তা।
অর্ধশত আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের মাস্টার রুলে বেতন ভাতা দিয়ে আসছিলেন যার সিংহভাগ কাগজে কলমে যথাযথ কর্মপদ্ধতি অংশগ্রহণ দেখালেও বাস্তবে অফিস কর্তৃপক্ষ অনেকের মুখই কেউ দেখেননি। এ নিয়ে খোদ নিয়োগকৃত কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে দীর্ঘদিন চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে আসছিল।
বিষয়টি অবগত হওয়ার পর প্রশাসক আব্দুল কাইয়ূম অকর্মন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগকৃতদের সাঁটাই করে দেন। স্থায়ী চাকরিজীবীদের ১৮ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা দিয়ে প্রায় শেষের পথে এনেছেন। অর্ধ কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রায় পরিশোধ করে এক কোটি আশি লাখ টাকার কাজ পৌরশহরে বর্তমানে চলমান রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিনের ঘুনে ধরা অগোছালো পৌরসভাটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে এনেছেন। ১নং ওয়ার্ডের ইয়াকুব মিয়া বলেন, আমি যথাসময় পৌরকর প্রদান করে যাচ্ছি। অথচ আমরা ছয়টি পরিবার বর্ষাকালে হাটুসমান পথ চলাচল করি। এ নিয়ে একাধিকবার পৌরসভায় আবেদন করলেও কোন ফল হয়নি।
উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহবায়ক রিপন মুন্সী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে পৌরসভাটি ছিল লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। তাদের দলীয় কমিশনারের এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে। ৯টি ওয়ার্ডের তুলনায় আমাদের ১নং ওয়ার্ড চরম বৈষম্যের শিকার। বর্তমানে বহেরাতলা ঢালাই ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি ও বেতমোর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফেরদৌস রুম্মান বলেন, পৌরসভাটি ছিল দুই যুগ ধরে দুর্নীতির সূতিকাগার। নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে জনগণের শত শত কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছে। বিশেষ করে নিম্নমানের পানির লাইন হয়তো দুই বছরের মধ্যেই মাটির সাথে মিশে যাবে। আমি আশাবাদী। দুর্নীতি দমন কমিশন এদের মহা দুর্নীতির ক্ষতিয়ান অতি শীঘ্রই খতিয়ে দেখবেন এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ূম বলেন, পৌরসভায় দীর্ঘদিন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চলে আসছিল। যার অনেকটা রোধ করতে পেরেছি। আশাবাদী, বাকীটাও হয়ে যাবে। কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দেয়ে তার মাঝেও এক কোটি আশি লাখ টাকার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। বাকী সমস্যা কবলিত এলাকার রাস্তাঘাটগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে সাধ্যমত নির্মাণ ও সংষ্কার করা হবে। সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব রফিউদ্দীন ফেরদৌস এর মুঠোফোনে (০১৭২৬৭২৪১৯৫) যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) : পৌরসবা ভবন -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভাটি ১৯৯৩ সনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা করেন। সূচনা লগ্ন থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় কাগজে কলমে তৃতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও বাস্তবমুখী তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। যে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন তখনই তার নিজের আখের গুছিয়েছেন।
ইংরেজি ১৯৯৭ সন হতে ১৯৯৯ পর্যন্ত প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মরহুম এ.কে.এম সেলিম মিয়া, ১৯৯৯ইং সন থেকে ২০২২ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রফিউদ্দীন আহম্মেদ ফেরদৌস, মেয়র পদের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর-৬ মাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আরিফ-উল-হক-৬ মাস, আব্দুল কাইয়ূম-৬ মাস ও বর্তমানে তিনি ২য় মেয়াদে প্রশাসকের চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরিফ-উল-হক ও আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বরের বিরুদ্ধেও দোর্দন্ড প্রতাপ, অর্থ লোপাট ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। তিন জনের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অর্থ জালিয়াতি, নিয়োগ ও কমিশন বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে সাবেক মেয়র মো. রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে।
কাজ না করে একই কাজ বার বার টেন্ডার দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, চাপা টেন্ডারের মাধ্যমে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ও তার বিশ্বস্তজনের লাইসেন্সে কাজ ভাগিয়ে নেয়া, প্রত্যেক ঠিকাদারের কাজ থেকে ৩০% কমিশন হাতিয়ে নেয়া, যার ফলস্বরূপ ৫৪ কোটি টাকায় নির্মিত অতি নিম্নমানের পানির প্রকল্প জংধরা পানির পাইপের অজ্রর ছিদ্র দিয়ে সে পানি মাঝ পথেই শেষ হয়ে যায়। যে কারণে নির্ধারিত সময় সরবরাহকৃত পানি পৌরবাসী পাচ্ছে না। অগণিত লোকের অভিযোগ আমরা রীতিমত পানি পাই না। অথচ বিল কাগজ দিতে কর্তৃপক্ষ একটুও বিলম্ব করছে না।
ঠিকাদারদের থেকে কাজ শুরুর আগেই কমিশন বাণিজ্যের কারণে তৎকালিন প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক ও পৌর সচিব হারুন অর রশিদ কোন ধরনের কাজের তদারকি করেননি বরং তারা কমিশন বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন। যে কারণে সে নামে মাত্র করা রাস্তা-ঘাট ড্রেনেজ ভেঙ্গে খানাখন্দরে পরিণত হয়েছে। একচোখা বন্টনে প্রতিফলনের চিত্র আজো দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রান্তিক অজো পাড়া গায়ের দুর্ভোগ কবলিত অসংখ্য মাটির ক্লেদাক্ত রাস্তা।
অর্ধশত আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের মাস্টার রুলে বেতন ভাতা দিয়ে আসছিলেন যার সিংহভাগ কাগজে কলমে যথাযথ কর্মপদ্ধতি অংশগ্রহণ দেখালেও বাস্তবে অফিস কর্তৃপক্ষ অনেকের মুখই কেউ দেখেননি। এ নিয়ে খোদ নিয়োগকৃত কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে দীর্ঘদিন চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে আসছিল।
বিষয়টি অবগত হওয়ার পর প্রশাসক আব্দুল কাইয়ূম অকর্মন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগকৃতদের সাঁটাই করে দেন। স্থায়ী চাকরিজীবীদের ১৮ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা দিয়ে প্রায় শেষের পথে এনেছেন। অর্ধ কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রায় পরিশোধ করে এক কোটি আশি লাখ টাকার কাজ পৌরশহরে বর্তমানে চলমান রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিনের ঘুনে ধরা অগোছালো পৌরসভাটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে এনেছেন। ১নং ওয়ার্ডের ইয়াকুব মিয়া বলেন, আমি যথাসময় পৌরকর প্রদান করে যাচ্ছি। অথচ আমরা ছয়টি পরিবার বর্ষাকালে হাটুসমান পথ চলাচল করি। এ নিয়ে একাধিকবার পৌরসভায় আবেদন করলেও কোন ফল হয়নি।
উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহবায়ক রিপন মুন্সী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে পৌরসভাটি ছিল লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। তাদের দলীয় কমিশনারের এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে। ৯টি ওয়ার্ডের তুলনায় আমাদের ১নং ওয়ার্ড চরম বৈষম্যের শিকার। বর্তমানে বহেরাতলা ঢালাই ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি ও বেতমোর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফেরদৌস রুম্মান বলেন, পৌরসভাটি ছিল দুই যুগ ধরে দুর্নীতির সূতিকাগার। নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে জনগণের শত শত কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছে। বিশেষ করে নিম্নমানের পানির লাইন হয়তো দুই বছরের মধ্যেই মাটির সাথে মিশে যাবে। আমি আশাবাদী। দুর্নীতি দমন কমিশন এদের মহা দুর্নীতির ক্ষতিয়ান অতি শীঘ্রই খতিয়ে দেখবেন এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ূম বলেন, পৌরসভায় দীর্ঘদিন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চলে আসছিল। যার অনেকটা রোধ করতে পেরেছি। আশাবাদী, বাকীটাও হয়ে যাবে। কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দেয়ে তার মাঝেও এক কোটি আশি লাখ টাকার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। বাকী সমস্যা কবলিত এলাকার রাস্তাঘাটগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে সাধ্যমত নির্মাণ ও সংষ্কার করা হবে। সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব রফিউদ্দীন ফেরদৌস এর মুঠোফোনে (০১৭২৬৭২৪১৯৫) যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।