পটিয়ায় লবণ শিল্প মালিকদের উচ্ছেদের ৫ বছর পরও অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হয়নি -সংবাদ
চট্টগ্রামের পটিয়ায় লবণ শিল্পের বেশ কয়েকজন মালিক দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। উচ্ছেদের পাঁচ বছর পার হলেও অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের অর্থ পাননি তারা।
ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন স্থানীয় লবণ শিল্প মালিকরা। ইতোমধ্যে করিম সল্ট ক্রাশিং অ্যান্ড রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং উম্মে আমান সল্টের মালিকপক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এই দুই প্রতিষ্ঠান মোট ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পটিয়ার ইন্দ্রপুল ব্রিজ ও সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বেশ কিছু লবণ কারখানা উচ্ছেদ করে। এসব কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। ইন্দ্রপুল ব্রিজের পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে করিম সল্ট এবং উত্তর পাশে উম্মে আমান সল্ট কারখানা অবস্থিত, যা পটিয়ার সবচেয়ে বড় লবণ মিল।
২০২০ সালে কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়েই এসব লবণ মিল জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয় বলে দাবি মালিকদের। ফলে অনেক মালিক ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের অংশ হিসেবে, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নির্দেশে এসব মিল উচ্ছেদ করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, উচ্ছেদের আগে মালিকদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। শুধু ১৯৫৪ সালের অধিগ্রহণ আইনের কথা বলে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়।
মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭ সালে পটিয়ার ইন্দ্রপুল ব্রিজ এলাকায় দেশের অন্যতম বৃহৎ লবণ শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে। একসময় এখানে প্রায় ৫০টির মতো ছোট-বড় লবণ কারখানা ছিল, যেগুলো দেশের মোট লবণের এক-তৃতীয়াংশ চাহিদা পূরণ করত। ২০২০ সালে হঠাৎ বেশ কয়েকটি কারখানা উচ্ছেদ করা হয়। বর্তমানে সেখানে মাত্র ১৫-১৬টি কারখানা চালু রয়েছে।
মালিকদের দাবি, তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্লান্ট স্থাপন করেন, উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহে অগ্রসর হন। কিন্তু সওজ কর্তৃপক্ষ সড়ক ও ব্রিজ সম্প্রসারণের কথা বলে তাদের কারখানা উচ্ছেদ করে। এতে আল্লাই সল্ট, জালালাবাদ সল্ট, মডার্ন সল্ট, করিম সল্ট, উম্মে আমান সল্ট, ফরহাদ সল্ট, শাহচান্দ অটো রাইস মিল, মডার্ন রয়েল সল্ট, চান্দখালী সল্ট, হাজী রফিকুল ইসলামের অফিস, দ্বীন সল্টসহ মোট ১৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
করিম সল্ট ক্রাশিং অ্যান্ড রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রিজ ও উম্মে আমান সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, পটিয়া ইন্দ্রপুল এলাকায় তাদের দুটি বৃহৎ লবণ কারখানা ছিল, যা ২০২০ সালে সওজ কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক ভেঙে ফেলে। এতে তাদের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ৫ বছরেও ক্ষতিপূরণ পাননি তারা। নিরুপায় হয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনো অর্থ বকেয়া আছে কিনা, তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে মূল দায়িত্ব চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের এলএ শাখার। বৈধ কাগজপত্র থাকলে ক্ষতিপূরণের টাকা অবশ্যই দেয়া হবে।
পটিয়ায় লবণ শিল্প মালিকদের উচ্ছেদের ৫ বছর পরও অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হয়নি -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামের পটিয়ায় লবণ শিল্পের বেশ কয়েকজন মালিক দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। উচ্ছেদের পাঁচ বছর পার হলেও অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের অর্থ পাননি তারা।
ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন স্থানীয় লবণ শিল্প মালিকরা। ইতোমধ্যে করিম সল্ট ক্রাশিং অ্যান্ড রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং উম্মে আমান সল্টের মালিকপক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এই দুই প্রতিষ্ঠান মোট ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পটিয়ার ইন্দ্রপুল ব্রিজ ও সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বেশ কিছু লবণ কারখানা উচ্ছেদ করে। এসব কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। ইন্দ্রপুল ব্রিজের পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে করিম সল্ট এবং উত্তর পাশে উম্মে আমান সল্ট কারখানা অবস্থিত, যা পটিয়ার সবচেয়ে বড় লবণ মিল।
২০২০ সালে কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়েই এসব লবণ মিল জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয় বলে দাবি মালিকদের। ফলে অনেক মালিক ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের অংশ হিসেবে, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নির্দেশে এসব মিল উচ্ছেদ করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, উচ্ছেদের আগে মালিকদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। শুধু ১৯৫৪ সালের অধিগ্রহণ আইনের কথা বলে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়।
মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭ সালে পটিয়ার ইন্দ্রপুল ব্রিজ এলাকায় দেশের অন্যতম বৃহৎ লবণ শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে। একসময় এখানে প্রায় ৫০টির মতো ছোট-বড় লবণ কারখানা ছিল, যেগুলো দেশের মোট লবণের এক-তৃতীয়াংশ চাহিদা পূরণ করত। ২০২০ সালে হঠাৎ বেশ কয়েকটি কারখানা উচ্ছেদ করা হয়। বর্তমানে সেখানে মাত্র ১৫-১৬টি কারখানা চালু রয়েছে।
মালিকদের দাবি, তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্লান্ট স্থাপন করেন, উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহে অগ্রসর হন। কিন্তু সওজ কর্তৃপক্ষ সড়ক ও ব্রিজ সম্প্রসারণের কথা বলে তাদের কারখানা উচ্ছেদ করে। এতে আল্লাই সল্ট, জালালাবাদ সল্ট, মডার্ন সল্ট, করিম সল্ট, উম্মে আমান সল্ট, ফরহাদ সল্ট, শাহচান্দ অটো রাইস মিল, মডার্ন রয়েল সল্ট, চান্দখালী সল্ট, হাজী রফিকুল ইসলামের অফিস, দ্বীন সল্টসহ মোট ১৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
করিম সল্ট ক্রাশিং অ্যান্ড রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রিজ ও উম্মে আমান সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, পটিয়া ইন্দ্রপুল এলাকায় তাদের দুটি বৃহৎ লবণ কারখানা ছিল, যা ২০২০ সালে সওজ কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক ভেঙে ফেলে। এতে তাদের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ৫ বছরেও ক্ষতিপূরণ পাননি তারা। নিরুপায় হয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনো অর্থ বকেয়া আছে কিনা, তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে মূল দায়িত্ব চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের এলএ শাখার। বৈধ কাগজপত্র থাকলে ক্ষতিপূরণের টাকা অবশ্যই দেয়া হবে।