বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড় -সংবাদ
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জ্বর-সর্দি কাশির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি ঘরে এখন আতঙ্কের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে। এই জ্বর, সর্দি, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা আর কাশির থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে কোনো বয়সের মানুষই। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর উপসর্গও, যা বাড়িয়ে তুলেছে উদ্বেগ।
স্থানীয় উপজেলা হাসপাতাল আর চিকিৎসকদের চেম্বারগুলোতে এখন রোগীর দীর্ঘ সারি, আর পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অন্যদের মধ্যেও, যা জনজীবনে তৈরি করছে এক চাপা অস্থিরতা।
বুধবার(২৩-০৭-২০২৫) দুপুরে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীর ভীড়। প্রতিদিন ৭-৮শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পেট ব্যাথা, সর্দি, আর জ্বর থেকে সেরে উঠতেই পারছে না বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম মোদ্দাচ্ছের। গত ৫ দিন ধরে এসব রোগে ভুগছেন তিনি। কয়েকদিন আগে বাসার প্রায় সবারই জ্বর-কাশি হয়েছে। চিকিৎসাও চলছে।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের শ্যামল বড়ুয়া বলেন, জ্বর কমলেও কাশির জন্য রাতে ঘুমাতে পারছিনা। এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। পরীক্ষা করে ঔষধ খাচ্ছি। তাদের মতো অনেকেই কেউ চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে আবার কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ করে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে ঠিকমতো সেবা প্রদান করে রোগীদের সুস্থ করে তুলছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকারা।
চিকিৎসকরা জানান, প্রতি বছরই শীতের পর এই সমস্যা দেখা যায়। ঠাণ্ডা থেকে তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে গলায় বসে থাকা ভাইরাসগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখন শ্বাসনালির উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটে। ফ্লু ও সাধারণ সর্দি-কাশির লক্ষণ প্রায় একই রকম। তবে সাধারণ সর্দি-কাশির তুলনায় ফ্লু-এর লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেশি হতে পারে এবং সেরে উঠতেও বেশি সময় লাগে। শিশুদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো লক্ষণগুলো বড়দের তুলনায় বেশিদিন ধরে থাকতে পারে।
এই সমস্যার নেপথ্যে আবহাওয়ার তারতম্য এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্তকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, বর্তমান আবহাওয়া কখনো তীব্র রোদ, কখনো বৃষ্টি, আবার কখনো ভ্যাপসা গরম, আর তার সঙ্গে বাড়তে থাকা আর্দ্রতা ডেঙ্গু ও ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে। এর ফলেই সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। যার কারণে অধিকাংশ রোগীই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়াও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, ফলে পরিবারের এক জন আক্রান্ত হলে অন্যরাও সহজে সংক্রমিত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য মশা নিধনে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এ বিষয়ে তিনি সতর্ক করে বলেন যে, জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দিলে কোনো অবস্থাতেই নিজের ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। অসুস্থ হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ শুরু করা জরুরি বলে জানান এ কর্মকর্তা।
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড় -সংবাদ
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জ্বর-সর্দি কাশির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি ঘরে এখন আতঙ্কের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে। এই জ্বর, সর্দি, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা আর কাশির থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে কোনো বয়সের মানুষই। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর উপসর্গও, যা বাড়িয়ে তুলেছে উদ্বেগ।
স্থানীয় উপজেলা হাসপাতাল আর চিকিৎসকদের চেম্বারগুলোতে এখন রোগীর দীর্ঘ সারি, আর পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অন্যদের মধ্যেও, যা জনজীবনে তৈরি করছে এক চাপা অস্থিরতা।
বুধবার(২৩-০৭-২০২৫) দুপুরে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীর ভীড়। প্রতিদিন ৭-৮শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পেট ব্যাথা, সর্দি, আর জ্বর থেকে সেরে উঠতেই পারছে না বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম মোদ্দাচ্ছের। গত ৫ দিন ধরে এসব রোগে ভুগছেন তিনি। কয়েকদিন আগে বাসার প্রায় সবারই জ্বর-কাশি হয়েছে। চিকিৎসাও চলছে।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের শ্যামল বড়ুয়া বলেন, জ্বর কমলেও কাশির জন্য রাতে ঘুমাতে পারছিনা। এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। পরীক্ষা করে ঔষধ খাচ্ছি। তাদের মতো অনেকেই কেউ চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে আবার কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ করে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে ঠিকমতো সেবা প্রদান করে রোগীদের সুস্থ করে তুলছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকারা।
চিকিৎসকরা জানান, প্রতি বছরই শীতের পর এই সমস্যা দেখা যায়। ঠাণ্ডা থেকে তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে গলায় বসে থাকা ভাইরাসগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখন শ্বাসনালির উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটে। ফ্লু ও সাধারণ সর্দি-কাশির লক্ষণ প্রায় একই রকম। তবে সাধারণ সর্দি-কাশির তুলনায় ফ্লু-এর লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেশি হতে পারে এবং সেরে উঠতেও বেশি সময় লাগে। শিশুদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো লক্ষণগুলো বড়দের তুলনায় বেশিদিন ধরে থাকতে পারে।
এই সমস্যার নেপথ্যে আবহাওয়ার তারতম্য এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্তকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, বর্তমান আবহাওয়া কখনো তীব্র রোদ, কখনো বৃষ্টি, আবার কখনো ভ্যাপসা গরম, আর তার সঙ্গে বাড়তে থাকা আর্দ্রতা ডেঙ্গু ও ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে। এর ফলেই সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। যার কারণে অধিকাংশ রোগীই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়াও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, ফলে পরিবারের এক জন আক্রান্ত হলে অন্যরাও সহজে সংক্রমিত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য মশা নিধনে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এ বিষয়ে তিনি সতর্ক করে বলেন যে, জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দিলে কোনো অবস্থাতেই নিজের ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। অসুস্থ হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ শুরু করা জরুরি বলে জানান এ কর্মকর্তা।