মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর এলাকায় দেশের চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ডানকান ব্রাদার্সের আওতাধীন শমসেরনগর চা-বাগানে ক্যামেলিয়া হাসপাতাল অবস্থিত। হঠাৎ দেখে এটা হাসপাতালের চেয়ে চা-বাগানের বাংলো বলে মনে হবে।
সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় যে নমুনা হিসেবে সেই সময়ের একটি ইট ও কনক্রিট এখনো যতেœর সাথে আছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে হাসপাতালটির নাম ছিল শমসেরনগর সেন্ট্রাল হসপিটাল।
পিএইচসি (প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা) প্রোগ্রামের বিকাশের পর, একটি কেন্দ্রীয় রেফারেল হাসপাতালের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতাল (সিডিএফএইচ) ১৯৯৪ সালের ২৬শে মার্চ গর্ডন ফক্সের উদ্বোধনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।
৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালটি ঐতিহ্যবাহী চা বাগান স্থাপত্যের উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যার সবুজ ছাদ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। এটি শমসেরনগর চা বাগানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ১৫ একর জমির উপর স্থাপিত।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সিডিএফএইচ (ঈউঋঐ) গ্রুপভুক্ত সব কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালটি মান ও পরিসরে উন্নতি করেছে এবং মেডিসিন, সার্জারি, অস্থি চিকিৎসা, রেডিওলজি, প্রসূতি ইত্যাদিতে বহু-বিশেষজ্ঞ সুবিধা গড়ে তুলেছে। চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে এটি এখন স্বনির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। অপারেশন থিয়েটারে নানা ধরনের সার্জারি করার ব্যবস্থা রয়েছে।
এই হাসপাতালটি গ্রুপের ১৬টি চা বাগানে বসবাসকারী প্রায় ৯০,০০০ জন জনগণের সেবা প্রদান করে। প্রতিবছর গড়ে ৭,৫০০ জন বহির্বিভাগের রোগী এবং ১,৬০০ জন অন্তর্বিভাগের রোগী (যাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জনের সার্জারি প্রয়োজন হয়) এখানে চিকিৎসা নেন। এলাকায় ক্যান্সার উচ্চহারে প্রাদুর্ভাবের কারণে ঈউঋঐ ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষায়িত হয়েছে। ভারতের অনকোলজিস্ট ড. রতী বাজপেয়ী এবং প্যাথলজিস্ট ড. রাজকুমার বাজপেয়ী বিদেশ থেকে এসে একটি চিকিৎসক দলকে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত হাসপাতালটি ৬০৩ জন ক্যান্সার রোগী সনাক্ত করেছে, যাদের মধ্যে ৩৪০ জনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
হাসপাতালটি চা বাগানের কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত । এখানে চিকিৎসা ফ্রি, রোগির জন্য খাবারের পাশাপাশি তার এটেনডেন্টকেও ফ্রি-তে খাবার দেওয়া হয়। যা অত্র এলাকা বা এ সমাজে একেবারেই নতুন। অন্যদিকে মন ভালো রাখার জন্য তাদেরে দু’বেলা চা-বিস্কুট ফ্রি সরবরাহ করা হয়।
গোটা হসপিটাল কম্পাউন্ডে যে পরিচ্ছন্নতা আর নান্দনিক পরিবেশ তার জন্য রোগী থেকে শুরু করে এলাকাবাসী সকলেই প্রশংসা করে থাকেন।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম এবং ঈউঋঐ মিলে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা কর্মীদের ও তাদের পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
হসপিটাল কম্পাউন্ডে অর্জুন, লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল গাছের সমাহার। যে দিকে তাকানো যায় শুধু চারিদিকে সবুজের সমারোহ। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে অনেক ভালো। এই সংসার নগর চা বাগানে রয়েছে ক্যামেলিয়া লেক ও গলফ মাঠ। যা পর্যটক রোগী ও এলাকাবাসীদের কাছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর এলাকায় দেশের চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ডানকান ব্রাদার্সের আওতাধীন শমসেরনগর চা-বাগানে ক্যামেলিয়া হাসপাতাল অবস্থিত। হঠাৎ দেখে এটা হাসপাতালের চেয়ে চা-বাগানের বাংলো বলে মনে হবে।
সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় যে নমুনা হিসেবে সেই সময়ের একটি ইট ও কনক্রিট এখনো যতেœর সাথে আছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে হাসপাতালটির নাম ছিল শমসেরনগর সেন্ট্রাল হসপিটাল।
পিএইচসি (প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা) প্রোগ্রামের বিকাশের পর, একটি কেন্দ্রীয় রেফারেল হাসপাতালের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতাল (সিডিএফএইচ) ১৯৯৪ সালের ২৬শে মার্চ গর্ডন ফক্সের উদ্বোধনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।
৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালটি ঐতিহ্যবাহী চা বাগান স্থাপত্যের উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যার সবুজ ছাদ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। এটি শমসেরনগর চা বাগানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ১৫ একর জমির উপর স্থাপিত।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সিডিএফএইচ (ঈউঋঐ) গ্রুপভুক্ত সব কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালটি মান ও পরিসরে উন্নতি করেছে এবং মেডিসিন, সার্জারি, অস্থি চিকিৎসা, রেডিওলজি, প্রসূতি ইত্যাদিতে বহু-বিশেষজ্ঞ সুবিধা গড়ে তুলেছে। চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে এটি এখন স্বনির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। অপারেশন থিয়েটারে নানা ধরনের সার্জারি করার ব্যবস্থা রয়েছে।
এই হাসপাতালটি গ্রুপের ১৬টি চা বাগানে বসবাসকারী প্রায় ৯০,০০০ জন জনগণের সেবা প্রদান করে। প্রতিবছর গড়ে ৭,৫০০ জন বহির্বিভাগের রোগী এবং ১,৬০০ জন অন্তর্বিভাগের রোগী (যাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জনের সার্জারি প্রয়োজন হয়) এখানে চিকিৎসা নেন। এলাকায় ক্যান্সার উচ্চহারে প্রাদুর্ভাবের কারণে ঈউঋঐ ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষায়িত হয়েছে। ভারতের অনকোলজিস্ট ড. রতী বাজপেয়ী এবং প্যাথলজিস্ট ড. রাজকুমার বাজপেয়ী বিদেশ থেকে এসে একটি চিকিৎসক দলকে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত হাসপাতালটি ৬০৩ জন ক্যান্সার রোগী সনাক্ত করেছে, যাদের মধ্যে ৩৪০ জনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
হাসপাতালটি চা বাগানের কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত । এখানে চিকিৎসা ফ্রি, রোগির জন্য খাবারের পাশাপাশি তার এটেনডেন্টকেও ফ্রি-তে খাবার দেওয়া হয়। যা অত্র এলাকা বা এ সমাজে একেবারেই নতুন। অন্যদিকে মন ভালো রাখার জন্য তাদেরে দু’বেলা চা-বিস্কুট ফ্রি সরবরাহ করা হয়।
গোটা হসপিটাল কম্পাউন্ডে যে পরিচ্ছন্নতা আর নান্দনিক পরিবেশ তার জন্য রোগী থেকে শুরু করে এলাকাবাসী সকলেই প্রশংসা করে থাকেন।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম এবং ঈউঋঐ মিলে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা কর্মীদের ও তাদের পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
হসপিটাল কম্পাউন্ডে অর্জুন, লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল গাছের সমাহার। যে দিকে তাকানো যায় শুধু চারিদিকে সবুজের সমারোহ। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে অনেক ভালো। এই সংসার নগর চা বাগানে রয়েছে ক্যামেলিয়া লেক ও গলফ মাঠ। যা পর্যটক রোগী ও এলাকাবাসীদের কাছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।