alt

সারাদেশ

সরকারি সহযোগিতায় ঐতিহ্যে ফিরতে পারে হোগলার কারিগররা

প্রতিনিধি, বেতাগী (বরগুনা) : বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

বেতাগী সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের রাস্তার জলাশয়ে হোগলা পাতা -সংবাদ

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলা থেকে ঐতিহ্যবাহী হোগলা পাতা। এক সময়ের ঘরোয়া শিল্প ও সাধারণ মানুষের জীবিকার অংশ ছিল এই গাছটি। হোগলা পাতা দিয়ে তৈরি হতো চাটাই, পাটি, মোড়া, ডালি, কাঁধে বহনের ঝুড়ি ও শিশুদের জন্য বিশেষ ঘুমানোর বিছানা। এখন আধুনিক প্লাস্টিক সামগ্রী, উন্নত প্রযুক্তি ও নগরায়ণের কারণে এই প্রাকৃতিক সম্পদ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি সহযোগিতা, স্থানীয় উৎসাহ ও পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনার মাধ্যমে হোগলা চাষ আবারও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব। হস্তশিল্প হিসেবে হোগলার তৈরি সামগ্রীর বিদেশে চাহিদাও রয়েছে। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হোগলাভিত্তিক কুটিরশিল্প হতে পারে উপকূলের নারীদের বিকল্প আয়ের পথ।

হোগলা এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ, যা প্রাকৃতিকভাবে পুকুর-খাল, নদীর তীর ও নিম্নাঞ্চলে জন্মায়। এক সময় বেতাগীর প্রতিটি গ্রামেই প্রচুর হোগলা গাছ দেখা যেত। কৃষাণ-কৃষাণীরা সময় বের করে এই পাতাগুলো শুকিয়ে তা দিয়ে তৈরি করতেন নানান উপকরণ। বিশেষ করে পাটি বা চাটাই তৈরিতে হোগলা পাতার বিকল্প ছিল না।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন,’ হোগলা একটি জলজ উদ্ভিদ, যা সাধারণত খাল-বিল, জলাভূমি, নদীর তীর এবং নিচু জমিতে স্বাভাবিকভাবে জন্মায়। অতীতে বরগুনার বেতাগী উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই দেখা যেত ঘন হোগলা বন। প্রতিটি বাড়িতে হোগলা শুকিয়ে নানা ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করা হতো। এটি একদিকে যেমন উপকারী, অন্যদিকে পরিবেশবান্ধবও।

এই বিষয় প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক সাইদুল ইসলাম মন্টু বলেন,’ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে হোগলা চাষ, সংরক্ষণ ও বিপণনের ব্যবস্থা করা গেলে আবারও এই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা পাবে, অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিও লাভবান হবে।

হোগলা এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ, যা প্রাকৃতিকভাবে পুকুর-খাল, নদীর তীর ও নি¤œাঞ্চলে জন্মায়। এক সময় বেতাগীর প্রতিটি গ্রামেই প্রচুর হোগলা গাছ দেখা যেত। দুই যুগ আগেও গ্রামের কৃষকদের কাছে এর চাহিদা ছিল ব্যাপক।

কৃষাণ-কৃষাণিরা সময় বের করে এই পাতাগুলো শুকিয়ে তা দিয়ে তৈরি করতেন নানান উপকরণ। বিশেষ করে পাটি বা চাটাই তৈরিতে হোগলা পাতার বিকল্প ছিল না।

বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুলিন বিহারী ঢালী (৮৬) বলেন, আগেকার দিনে বিয়ের আসর, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা যেকোনো সামাজিক আয়োজনে হোগলা পাতার তৈরি চাটাই ছাড়া আয়োজন অপূর্ণ থাকত।

গরমে শীতল অনুভূতির জন্য হোগলা পাটি ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধু তাই নয়, অনেক পরিবার হোগলা পাটি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করত। নারীদের জন্য এটি ছিল ঘরে বসে আয় করার একটি সুযোগও।

বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, ‘আমরা এক সময় হোগলা পাতা কেটে চাটাই বানিয়ে হাটে বিক্রি করতাম। এখন হোগলা জন্মায় না বললেই চলে। আধুনিক জিনিসের ভিড়ে এগুলোর কদর আর নেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, ‘হোগলা একটি মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এটি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনাময় একটি কাঁচামাল। এটি সংরক্ষণ ও উৎপাদনের জন্য গবেষণা এবং উদ্দীপনা জরুরি।’

যে হোগলা এক সময়ের বাঙালির জীবনের অংশ ছিল, আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে নীরবে। নতুন প্রজন্ম এই ঐতিহ্য চিনবেই না, যদি এখনই উদ্যোগ না নেওয়া হয়। তাই দরকার হোগলা পাতা সংরক্ষণের উদ্যোগ, যাতে প্রাকৃতিক এই উপকরণ আবারও ফিরে পায় তার হারানো গৌরব, এমন দাবি স্থানীয় সচেতন মানুষদের।

মুগদায় দুই বাসের মাঝখানে চাপা পড়ে একজন নিহত

গাজীপুরে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে আরও এক যুবক নিহত

যশোরে ভাইয়ের হাতে ছোটবোন খুন

ছবি

গোপালগঞ্জে এনসিপি কর্মসূচিতে সহিংসতায় মোট ১০ মামলা

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শোক জানিয়েছে চা সংসদ

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মোবারক হোসেনের করা আপিলের শুনানি শেষ

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৪৪ জন আক্রান্ত, ঢাকা দক্ষিণে ৩ জনের মৃত্যু

বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের

শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগে বরিশালে ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

বিমান দুর্ঘটনায় স্থগিত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ

১২ বছরের শিশু রিংকন হত্যা: ২ জন গ্রেপ্তার, স্বীকারোক্তি

তালায় মাদকাসক্ত ছেলে হত্যায় মা গ্রেপ্তার

ছবি

পরলোকে দৈনিক সংবাদ গলাচিপা প্রতিনিধি

চীনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি নেতাদের বৈঠক

ছবি

লালপুরে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর

সিংড়ায় রাস্তা পাকা করার দাবি

লালপুরে ভাতাভোগীর তালিকায় ইউপি সদস্যের স্ত্রীরা

ছবি

টাঙ্গাইলের চিরনিদ্রায় শায়িত মাইলস্টোনের দুই শিক্ষার্থী

রামুতে খালে ডুবে শিশু নিখোঁজ

যশোরে পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে বিরোধ, পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কুলিয়ারচরে রেললাইন গৃহবধূর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ, পরিবারের দাবি হত্যা

ছবি

বড়াইগ্রামে ট্রাক-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৬

দশমিনায় আউশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে

৭ মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা সামাদ আটক

ছবি

আগৈলঝাড়ায় বর্ষা মৌসুমে জমজমাট নৌকা হাট

সেনা কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা, ঠাকুরগাঁওয়ে যুবক আটক

ছবি

স্বাস্থ্যসেবায় অনন্য ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতাল

দোয়ারাবাজারে দুপক্ষে সংঘর্ষ, নিহত এক

হবিগঞ্জ ডোবা থেকে নিখোঁজ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বর-সর্দি কাশি, হাসপাতালে ভিড়

মুন্সীগঞ্জে নদী ভাঙন রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন

উখিয়ার নুর হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

মাহিম হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহীতে বিশেষ অভিযানে আটক ২০

ছবি

শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ

বিষধর সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

tab

সারাদেশ

সরকারি সহযোগিতায় ঐতিহ্যে ফিরতে পারে হোগলার কারিগররা

প্রতিনিধি, বেতাগী (বরগুনা)

বেতাগী সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের রাস্তার জলাশয়ে হোগলা পাতা -সংবাদ

বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলা থেকে ঐতিহ্যবাহী হোগলা পাতা। এক সময়ের ঘরোয়া শিল্প ও সাধারণ মানুষের জীবিকার অংশ ছিল এই গাছটি। হোগলা পাতা দিয়ে তৈরি হতো চাটাই, পাটি, মোড়া, ডালি, কাঁধে বহনের ঝুড়ি ও শিশুদের জন্য বিশেষ ঘুমানোর বিছানা। এখন আধুনিক প্লাস্টিক সামগ্রী, উন্নত প্রযুক্তি ও নগরায়ণের কারণে এই প্রাকৃতিক সম্পদ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি সহযোগিতা, স্থানীয় উৎসাহ ও পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনার মাধ্যমে হোগলা চাষ আবারও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব। হস্তশিল্প হিসেবে হোগলার তৈরি সামগ্রীর বিদেশে চাহিদাও রয়েছে। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হোগলাভিত্তিক কুটিরশিল্প হতে পারে উপকূলের নারীদের বিকল্প আয়ের পথ।

হোগলা এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ, যা প্রাকৃতিকভাবে পুকুর-খাল, নদীর তীর ও নিম্নাঞ্চলে জন্মায়। এক সময় বেতাগীর প্রতিটি গ্রামেই প্রচুর হোগলা গাছ দেখা যেত। কৃষাণ-কৃষাণীরা সময় বের করে এই পাতাগুলো শুকিয়ে তা দিয়ে তৈরি করতেন নানান উপকরণ। বিশেষ করে পাটি বা চাটাই তৈরিতে হোগলা পাতার বিকল্প ছিল না।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন,’ হোগলা একটি জলজ উদ্ভিদ, যা সাধারণত খাল-বিল, জলাভূমি, নদীর তীর এবং নিচু জমিতে স্বাভাবিকভাবে জন্মায়। অতীতে বরগুনার বেতাগী উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই দেখা যেত ঘন হোগলা বন। প্রতিটি বাড়িতে হোগলা শুকিয়ে নানা ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করা হতো। এটি একদিকে যেমন উপকারী, অন্যদিকে পরিবেশবান্ধবও।

এই বিষয় প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক সাইদুল ইসলাম মন্টু বলেন,’ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে হোগলা চাষ, সংরক্ষণ ও বিপণনের ব্যবস্থা করা গেলে আবারও এই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা পাবে, অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিও লাভবান হবে।

হোগলা এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ, যা প্রাকৃতিকভাবে পুকুর-খাল, নদীর তীর ও নি¤œাঞ্চলে জন্মায়। এক সময় বেতাগীর প্রতিটি গ্রামেই প্রচুর হোগলা গাছ দেখা যেত। দুই যুগ আগেও গ্রামের কৃষকদের কাছে এর চাহিদা ছিল ব্যাপক।

কৃষাণ-কৃষাণিরা সময় বের করে এই পাতাগুলো শুকিয়ে তা দিয়ে তৈরি করতেন নানান উপকরণ। বিশেষ করে পাটি বা চাটাই তৈরিতে হোগলা পাতার বিকল্প ছিল না।

বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুলিন বিহারী ঢালী (৮৬) বলেন, আগেকার দিনে বিয়ের আসর, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা যেকোনো সামাজিক আয়োজনে হোগলা পাতার তৈরি চাটাই ছাড়া আয়োজন অপূর্ণ থাকত।

গরমে শীতল অনুভূতির জন্য হোগলা পাটি ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধু তাই নয়, অনেক পরিবার হোগলা পাটি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করত। নারীদের জন্য এটি ছিল ঘরে বসে আয় করার একটি সুযোগও।

বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, ‘আমরা এক সময় হোগলা পাতা কেটে চাটাই বানিয়ে হাটে বিক্রি করতাম। এখন হোগলা জন্মায় না বললেই চলে। আধুনিক জিনিসের ভিড়ে এগুলোর কদর আর নেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, ‘হোগলা একটি মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এটি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনাময় একটি কাঁচামাল। এটি সংরক্ষণ ও উৎপাদনের জন্য গবেষণা এবং উদ্দীপনা জরুরি।’

যে হোগলা এক সময়ের বাঙালির জীবনের অংশ ছিল, আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে নীরবে। নতুন প্রজন্ম এই ঐতিহ্য চিনবেই না, যদি এখনই উদ্যোগ না নেওয়া হয়। তাই দরকার হোগলা পাতা সংরক্ষণের উদ্যোগ, যাতে প্রাকৃতিক এই উপকরণ আবারও ফিরে পায় তার হারানো গৌরব, এমন দাবি স্থানীয় সচেতন মানুষদের।

back to top