বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন -সংবাদ
বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে নোয়াখালীবাসীকে রক্ষায় বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ চৌমুহনী খাল অবৈধ দখল মুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন স্থাপনা অপসারনের কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। এলাকাবাসী এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার দিনভর বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র্যাব,পুলিশসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চৌমুহনী বড়পোল সংলগ্ন পানি প্রবাহের খাল ভরাট করে যুগ যুগ ধরে প্রকাশ্যে বহুতলা ভবন নির্মাণ করা বহুল আলোচিত-সমালোচিত আজমির হোটেল নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ওই ভবন অবশেষে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে চৌমুহনী শহরসহ বেগমগঞ্জে বিভিন্ন খাল পাড়ে প্রায় অর্ধশত অবৈধ ঘর-দরজা উচ্ছেদ করা হয়। এ অভিযান বর্তমানে চলমান রাখার দাবি এলাকাবাসীর।
কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। অধিকাংশ সরকারি খাল ভরাটসহ খালের ওপর গড়ে উঠেছে ঘর বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে চৌমুহনী পৌর এলাকাসহ নোয়াখালীতে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
বিগত দিনের ভয়াবহ বন্যা ও জলাবদ্ধতার পরও প্রশাসন অবৈধ দখল হয়ে যাওয়া এসব খালগুলো উদ্ধারে কোনো কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যার আশঙ্কায় স্থানীয়দের দাবির পরিপেক্ষিতে প্রশাসন চৌমুহনী খালসহ বিভিন্ন খালগুলো অবৈধ দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জুলাই থেকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর দক্ষিণ বাজার থেকে পুরোদমে শুরু হয় খালের দুপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল পরিষ্কার কাজ।
জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে চৌমুহনী শহরসহ বেগমগঞ্জের সরকারি রেকর্ডিয় অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। স্থানীয় ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারিদের যোগসাজশে একশ্রেণির ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখলসহ পানি প্রবাহের খালের ওপর গড়ে তুলেছে ঘর, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে বেগমগঞ্জসহ নোয়াখালীতে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের অভিযোগ বিগত ১৯২২ইং সনের সরকারি রেকর্ডিয় ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকডিয় ও নকশা-খতিয়ান অনুযায়ী সরকারি মালিকিয় জনগুরুত্বপূর্ণ পানি প্রবাহের খাল ও সরকারি সম্পত্তি কিভাবে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে দখল ও ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, বিশেষ করে ৯০ দশক এর পর থেকে ধাপে ধাপে রাজনৈতিক প্রভাবে স্থানীয়ভাবে সব দলের একশ্রেণির ভূমিদস্যুরা মিলে মিশে চৌমুহনী খালসহ বেগমগঞ্জের অধিকাংশ সরকারি খাল, নলা-নর্দমা বিভিন্ন ভাবে তাদের অবৈধ দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। চলমান উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে এলাকাবাসী বর্তমান সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আরো জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমান জানান, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমাতে খাল উদ্ধারে আমরা কাজ শুরু করেছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবো। সর্বশেষ বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকডিয় ও নকশা-খতিয়ান অনুযায়ী সরকারি মালিকিয় জনগুরত্বপূর্ণ পানি প্রবাহের চৌমুহনী খালসহ উপজেলার পানি প্রবাহের খালগুলো উদ্ধার করতে আইন অনুযায়ী সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, দীর্ঘদিন থেকে চৌমুহনীর এ খালটি সংস্কার ও দখলমুক্ত না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে সেনাবাহিনী আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। আমরা সকলের সহযোগিতায় এই কাজ অব্যাহত রাখতে চাই। এই খাল দিয়ে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ করে যাবো।
বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন -সংবাদ
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে নোয়াখালীবাসীকে রক্ষায় বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ চৌমুহনী খাল অবৈধ দখল মুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন স্থাপনা অপসারনের কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। এলাকাবাসী এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার দিনভর বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র্যাব,পুলিশসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চৌমুহনী বড়পোল সংলগ্ন পানি প্রবাহের খাল ভরাট করে যুগ যুগ ধরে প্রকাশ্যে বহুতলা ভবন নির্মাণ করা বহুল আলোচিত-সমালোচিত আজমির হোটেল নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ওই ভবন অবশেষে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে চৌমুহনী শহরসহ বেগমগঞ্জে বিভিন্ন খাল পাড়ে প্রায় অর্ধশত অবৈধ ঘর-দরজা উচ্ছেদ করা হয়। এ অভিযান বর্তমানে চলমান রাখার দাবি এলাকাবাসীর।
কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। অধিকাংশ সরকারি খাল ভরাটসহ খালের ওপর গড়ে উঠেছে ঘর বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে চৌমুহনী পৌর এলাকাসহ নোয়াখালীতে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
বিগত দিনের ভয়াবহ বন্যা ও জলাবদ্ধতার পরও প্রশাসন অবৈধ দখল হয়ে যাওয়া এসব খালগুলো উদ্ধারে কোনো কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যার আশঙ্কায় স্থানীয়দের দাবির পরিপেক্ষিতে প্রশাসন চৌমুহনী খালসহ বিভিন্ন খালগুলো অবৈধ দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জুলাই থেকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর দক্ষিণ বাজার থেকে পুরোদমে শুরু হয় খালের দুপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল পরিষ্কার কাজ।
জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে চৌমুহনী শহরসহ বেগমগঞ্জের সরকারি রেকর্ডিয় অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। স্থানীয় ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারিদের যোগসাজশে একশ্রেণির ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখলসহ পানি প্রবাহের খালের ওপর গড়ে তুলেছে ঘর, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে বেগমগঞ্জসহ নোয়াখালীতে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের অভিযোগ বিগত ১৯২২ইং সনের সরকারি রেকর্ডিয় ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকডিয় ও নকশা-খতিয়ান অনুযায়ী সরকারি মালিকিয় জনগুরুত্বপূর্ণ পানি প্রবাহের খাল ও সরকারি সম্পত্তি কিভাবে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে দখল ও ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, বিশেষ করে ৯০ দশক এর পর থেকে ধাপে ধাপে রাজনৈতিক প্রভাবে স্থানীয়ভাবে সব দলের একশ্রেণির ভূমিদস্যুরা মিলে মিশে চৌমুহনী খালসহ বেগমগঞ্জের অধিকাংশ সরকারি খাল, নলা-নর্দমা বিভিন্ন ভাবে তাদের অবৈধ দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। চলমান উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে এলাকাবাসী বর্তমান সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আরো জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমান জানান, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমাতে খাল উদ্ধারে আমরা কাজ শুরু করেছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবো। সর্বশেষ বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকডিয় ও নকশা-খতিয়ান অনুযায়ী সরকারি মালিকিয় জনগুরত্বপূর্ণ পানি প্রবাহের চৌমুহনী খালসহ উপজেলার পানি প্রবাহের খালগুলো উদ্ধার করতে আইন অনুযায়ী সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, দীর্ঘদিন থেকে চৌমুহনীর এ খালটি সংস্কার ও দখলমুক্ত না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে সেনাবাহিনী আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। আমরা সকলের সহযোগিতায় এই কাজ অব্যাহত রাখতে চাই। এই খাল দিয়ে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ করে যাবো।