জবা ফুলের ছবিটি বেতাগী সরকারি কলেজের সামনে সহকারী শিক্ষক লিপিকা মন্ডলের বাড়ির ছাদে লাগানো টব থেকে নেয়া -সংবাদ
সুস্থ মন, সুস্থ শরীর। আর এ মন ভালো রাখে ফুল। এটা মানসিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে ফুল। ভালো ঘুমের জন্য সাহায্য করে। জবা ফুল খাওয়া যায় এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এবং চুলের যত্নে জবা ফুল চমৎকার কাজ করে। জবা একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। গোলাপী, সাদা, লাল, হলুদ ইত্যাদি নানা বর্ণের জবা ফুল পাওয়া যায়।
সরেজমিনে বেতাগী পৌর শহরে ঘুরে দেখা গেল, বাড়ির ছাদে অনেকেই টবে এই জবা ফুলের চাষ করেছেন। বেতাগী সরকারি কলেজের সামনে বাড়ির ছাদে শখ করে জবা ফুলের চাষ করেছেন বিএলবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিপিকা মণ্ডল। ফুলের ছবি তোলা হলো কয়েকটি। এরপর তার সঙ্গে এই ফুলের চাষের অভিজ্ঞতা শুনলাম। লিপিকা মণ্ডল বলেন, ‘বাড়ির ছাদে তিনি ১৮টি ফুলের টবে লাল, সাদা, গোলাপী জবা, গোলাপ, চাঁপা, বেলি, নীলকণ্ঠ ফুলের চাষ করেছেন। অবসর সময় তিনি টবে ফুলের আগাছা নিড়িয়ে দেয়, কীটনাশক ও জৈব সার দেয়। জবা ফুল যখন ফোটে তখন আনন্দে মন ভরে যায়।’
এটা গধষাধপবধব (মালভেসি) গোত্রের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। জবার বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus rosa-sinensis.
.
এতে ক্যারোটিনয়েডস, ফ্ল্যাভানয়েডস, ফেনোলিক অ্যাসিড, অ্যান্থোসায়ানিনসে উপাদান রয়েছে। এ ছাড়া প্রোটিন, ক্যারোটিন, তেল, ভিটামিন এবং স্যাকারাইড জাতীয় পুষ্টিগুলোও জবা ফুলে রয়েছে। জবা ফুল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোলেস্টেরলও কমায়। জবাফুলের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তা লিভারের জন্য বেশ ভালো। লিভারের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এই যৌগটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জবাফুলে থাকা বিশেষ একটি যৌগ ক্যানসারের এত দুরারোগ্য ব্যধিকেও প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
চিকিৎসক তিথি মহালদার বলেন, ‘রক্তচাপ বাড়লে এবং নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া না করলে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। সেখান থেকে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে। জবার চা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং কোলেস্টেরলও জমতে দেয় না।’ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পুষ্টিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুজন মালী বলেন, জবা ফুলে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম আছে। এতে ফুলের মধ্যে থাকা উপাদানগুলো দেহের বিপাকের মান ভালো করে। ফুলের চা উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণণ করে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় খুব বেশি। মূত্রনালির সংক্রমণ কমাতে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ দেন চিকিৎসকরা।’
বেতাগী সরকারি কলেজের উত্তর পাশে বধূয়া বিউটি পার্লারের পরিচালক দীপা দাস বলেন, জবা ফুলের তেল চুলের গোড়া শক্ত করে। চুল পড়া রোধে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহার করে আসছে। এই তেল আস্তে আস্তে মাথার তালুতে মালিশ করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ও মাথার ত্বক পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জবা ফুলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এর ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে অনেক উপকারো পাওয়া যায়। ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এন্ড মিডফোর্ড হাসপাতালের শিশু-কিশোর ও গাইনী রোগে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, জবা ফুল দিয়ে বানানো চা খাওয়া যায়, তাহলে নারীদের পিরিয়েড যন্ত্রণা অনেকটাই কমে। সেই সঙ্গে অন্যান্য অস্বস্তি দূর হয়। হরমোনাল ইমব্যালেন্স কমাতেও পারে জবা ফুল। এতে উপস্থিত উপকারি ভিটামিন এবং মিনারেল স্নায়ুতন্ত্রে তৈরি হওয়া প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি অ্যাংজাইটি কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
জবা ফুলের ছবিটি বেতাগী সরকারি কলেজের সামনে সহকারী শিক্ষক লিপিকা মন্ডলের বাড়ির ছাদে লাগানো টব থেকে নেয়া -সংবাদ
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
সুস্থ মন, সুস্থ শরীর। আর এ মন ভালো রাখে ফুল। এটা মানসিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে ফুল। ভালো ঘুমের জন্য সাহায্য করে। জবা ফুল খাওয়া যায় এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এবং চুলের যত্নে জবা ফুল চমৎকার কাজ করে। জবা একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। গোলাপী, সাদা, লাল, হলুদ ইত্যাদি নানা বর্ণের জবা ফুল পাওয়া যায়।
সরেজমিনে বেতাগী পৌর শহরে ঘুরে দেখা গেল, বাড়ির ছাদে অনেকেই টবে এই জবা ফুলের চাষ করেছেন। বেতাগী সরকারি কলেজের সামনে বাড়ির ছাদে শখ করে জবা ফুলের চাষ করেছেন বিএলবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিপিকা মণ্ডল। ফুলের ছবি তোলা হলো কয়েকটি। এরপর তার সঙ্গে এই ফুলের চাষের অভিজ্ঞতা শুনলাম। লিপিকা মণ্ডল বলেন, ‘বাড়ির ছাদে তিনি ১৮টি ফুলের টবে লাল, সাদা, গোলাপী জবা, গোলাপ, চাঁপা, বেলি, নীলকণ্ঠ ফুলের চাষ করেছেন। অবসর সময় তিনি টবে ফুলের আগাছা নিড়িয়ে দেয়, কীটনাশক ও জৈব সার দেয়। জবা ফুল যখন ফোটে তখন আনন্দে মন ভরে যায়।’
এটা গধষাধপবধব (মালভেসি) গোত্রের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। জবার বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus rosa-sinensis.
.
এতে ক্যারোটিনয়েডস, ফ্ল্যাভানয়েডস, ফেনোলিক অ্যাসিড, অ্যান্থোসায়ানিনসে উপাদান রয়েছে। এ ছাড়া প্রোটিন, ক্যারোটিন, তেল, ভিটামিন এবং স্যাকারাইড জাতীয় পুষ্টিগুলোও জবা ফুলে রয়েছে। জবা ফুল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোলেস্টেরলও কমায়। জবাফুলের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তা লিভারের জন্য বেশ ভালো। লিভারের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এই যৌগটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জবাফুলে থাকা বিশেষ একটি যৌগ ক্যানসারের এত দুরারোগ্য ব্যধিকেও প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
চিকিৎসক তিথি মহালদার বলেন, ‘রক্তচাপ বাড়লে এবং নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া না করলে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। সেখান থেকে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে। জবার চা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং কোলেস্টেরলও জমতে দেয় না।’ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পুষ্টিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুজন মালী বলেন, জবা ফুলে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম আছে। এতে ফুলের মধ্যে থাকা উপাদানগুলো দেহের বিপাকের মান ভালো করে। ফুলের চা উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণণ করে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় খুব বেশি। মূত্রনালির সংক্রমণ কমাতে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ দেন চিকিৎসকরা।’
বেতাগী সরকারি কলেজের উত্তর পাশে বধূয়া বিউটি পার্লারের পরিচালক দীপা দাস বলেন, জবা ফুলের তেল চুলের গোড়া শক্ত করে। চুল পড়া রোধে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহার করে আসছে। এই তেল আস্তে আস্তে মাথার তালুতে মালিশ করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ও মাথার ত্বক পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জবা ফুলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এর ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে অনেক উপকারো পাওয়া যায়। ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এন্ড মিডফোর্ড হাসপাতালের শিশু-কিশোর ও গাইনী রোগে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, জবা ফুল দিয়ে বানানো চা খাওয়া যায়, তাহলে নারীদের পিরিয়েড যন্ত্রণা অনেকটাই কমে। সেই সঙ্গে অন্যান্য অস্বস্তি দূর হয়। হরমোনাল ইমব্যালেন্স কমাতেও পারে জবা ফুল। এতে উপস্থিত উপকারি ভিটামিন এবং মিনারেল স্নায়ুতন্ত্রে তৈরি হওয়া প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি অ্যাংজাইটি কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।