স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও চিকিৎসক। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার। ছবিটি গতকাল শুক্রবার রাত ১০টায় তোলা হয়েছে -সংবাদ
বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে রাতে বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন চিকিৎসক ও রোগীরা। বিদ্যুৎবিহীন রাতগুলিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। রোগী এবং তাদের স্বজনদের এত চিকিৎসকরাও একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়ছেন।
ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্য ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময়ভুক্তভোগি রোগিরা বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকা দরকার।
কোন কোন দিন ভোল্টেজ এতটাই কম থাকে যে যন্ত্রপাতি সচল রাখা সম্ভব হয় না। সিজারিয়ান অপারেশন, ডেলিভারি, ইনজেকশন ও স্যালাইন দেওয়াসহ জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি ইনডোরে থাকা রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা পেতে বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বে কর্মরত এক সিনিয়র স্টাফ নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের টর্চ লাইট বা মোবাইল ফোনের আলোয় কাজ চালাতে হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তখন অবস্থা ভয়াবহ হয়।’
গতকাল শুক্রবার রাতের শিফটে জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, অন্ধকারে কাজ করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি বিরক্তিকরও। পর্যাপ্ত আলোর অভাবে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। ইনডোরে ভর্তি থাকা রোগীরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন, অনেক সময় শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী সমীর হাওলাদার (৫৪) বলেন, রাতের বেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভেতরে বিদ্যুৎ না থাকায় ভূতুরে বাড়িতে পরিনত হচ্ছে এবং এ সময় ভর্তিকৃত রোগী এবং রোগীর স্বজনদের দ্বিগুন কষ্ট করতে দেখা গেছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েকবার স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বিষয়টি জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের কর্মপরিকল্পনায় বড় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। রোগীদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম সিকদার বলেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি না পড়লে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়্যদ আমারুল বলেন, এই সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প হিসেবে জেনারেটর সচল রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা ছাড়া এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও চিকিৎসক। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার। ছবিটি গতকাল শুক্রবার রাত ১০টায় তোলা হয়েছে -সংবাদ
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে রাতে বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন চিকিৎসক ও রোগীরা। বিদ্যুৎবিহীন রাতগুলিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। রোগী এবং তাদের স্বজনদের এত চিকিৎসকরাও একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়ছেন।
ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্য ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময়ভুক্তভোগি রোগিরা বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকা দরকার।
কোন কোন দিন ভোল্টেজ এতটাই কম থাকে যে যন্ত্রপাতি সচল রাখা সম্ভব হয় না। সিজারিয়ান অপারেশন, ডেলিভারি, ইনজেকশন ও স্যালাইন দেওয়াসহ জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি ইনডোরে থাকা রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা পেতে বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বে কর্মরত এক সিনিয়র স্টাফ নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের টর্চ লাইট বা মোবাইল ফোনের আলোয় কাজ চালাতে হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তখন অবস্থা ভয়াবহ হয়।’
গতকাল শুক্রবার রাতের শিফটে জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, অন্ধকারে কাজ করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি বিরক্তিকরও। পর্যাপ্ত আলোর অভাবে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। ইনডোরে ভর্তি থাকা রোগীরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন, অনেক সময় শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী সমীর হাওলাদার (৫৪) বলেন, রাতের বেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভেতরে বিদ্যুৎ না থাকায় ভূতুরে বাড়িতে পরিনত হচ্ছে এবং এ সময় ভর্তিকৃত রোগী এবং রোগীর স্বজনদের দ্বিগুন কষ্ট করতে দেখা গেছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েকবার স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বিষয়টি জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের কর্মপরিকল্পনায় বড় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। রোগীদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম সিকদার বলেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি না পড়লে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়্যদ আমারুল বলেন, এই সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প হিসেবে জেনারেটর সচল রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা ছাড়া এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়।