বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উত্তরাঞ্চলের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- যা উত্তরবঙ্গের বাতিঘর নামেও পরিচিত। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্থায়ী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট কাউন্সেলিং সেন্টার নেই। ফলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে মানসিক চাপ, হতাশা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা।
বিভিন্ন বিভাগ ও বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও শিক্ষাজনিত চাপে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। সেই মানসিক চাপ থেকে অনেক শিক্ষার্থী আবার জড়িয়ে পড়ছে মাদক সেবনে। ফলে অনেকে মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ না থাকায় তারা তাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাচ্ছেন না নিয়মিত কোন পরামর্শ। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে চলছে। সঠিক পরামর্শ ও কাউন্সিলিংয়ের অভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ। এসব ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত একাধিক ঘটনা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।
গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৩তম ব্যাচের জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা নামের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পর এই উদ্বেগ আশঙ্কা জনক হারে বেড়েছে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার বলেন, বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা, মানসিক চাপ ও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোনো পেশাদার সাইকোলজিস্ট বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা।
শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত পরীক্ষার চাপ, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও পারিবারিক প্রত্যাশায় ভুগছে। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও কারো সঙ্গে খোলামেলা কথা বলার সুযোগ পায় না।
এই প্রেক্ষাপটে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিস্ট নিয়োগ জরুরি। একজন দক্ষ সাইকোলজিস্ট শুধু মানসিক সমস্যা মোকাবেলায় পরামর্শ দেন না, বরং শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতেও সহায়তা করেন।
উন্নত বিশ্বে ‘স্টুডেন্ট কাউন্সেলিং সেন্টার’ বাধ্যতামূলক। আমাদের দেশেও শিক্ষার্থীরা এমন সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে।
আজ সময় এসেছে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব দেওয়ার। তাই আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের সুস্থ জীবন ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া জরুরি।
একাধিক অভিভাবক বলেন, আমাদের সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বা মেসে থাকে। আমরা একসঙ্গে থাকি না। এই দূরত্ব শুধু শারীরিক নয়, মাঝে মাঝে মানসিক দূরত্বও তৈরি হয়। আগের এত সবকিছু বুঝতে পারি না, ওদের মন-মেজাজ, অনুভূতিগুলো বোঝা কঠিন হয়ে যায়। ফোনে হয়তো কথা হয়, কিন্তু ওদের ভেতরের চাপ বা হতাশা সব সময় আমরা বুঝে উঠতে পারি না। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে নানা রকম প্রতিযোগিতা, পড়ালেখার চাপ, চাকরির দুশ্চিন্তা, সম্পর্কের জটিলতা। এসব ওদের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। আবার পরিবার থেকে দূরে থাকার কারণে যেটুকু মানসিক সাপোর্ট দরকার, সেটা সব সময় ওরা পায় না। আমাদের মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য করা, যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের কথা সহজে কাউকে বলতে পারে এবং মানসিক চাপ কমাতে ঠিক সময়ে ঠিক পরামর্শ ও যথাযথ পরিচর্যা পায়।
অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সাইফুদ্দীন খালেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুধু শিক্ষা অর্জনের নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও ব্যক্তিত্ব গঠনের সময়কাল। এই সময়ে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার চাপে, ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায়, পারিবারিক ও আর্থিক দুশ্চিন্তায়, এমনকি সম্পর্কজনিত জটিলতায়ও ভুগে থাকে। এসব চ্যালেঞ্জ অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এক পর্যায়ে তা একাডেমিক ব্যর্থতা, একাকীত্ব, হতাশা বা আত্মহননের এত চরম সিদ্ধান্তে গিয়ে ঠেকে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাদার সাইকোলজিস্ট থাকা অত্যন্ত জরুরি। একজন শিক্ষার্থীর যেমন শিক্ষকের প্রয়োজন জ্ঞানার্জনের জন্য, তেমনি তার মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন একজন পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শদাতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বক্ষডুক একজন পেশাদার সাইকোলজিস্ট থাকলে শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা বজায় রেখে সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলে, মানসিক চাপ মোকাবিলায় কৌশল শেখাতে পারেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিতে পারবেন। শিক্ষার সফলতা মানে কেবল পঠিত বিষয়ের জ্ঞান নয়- একজন সুস্থ, স্থিতিশীল ও সচেতন মানুষ গড়ে তোলা। সেজন্যই আমি মনে করি, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন বা একাধিক পূর্ণকালীন সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করা উচিত এবং সময়ের দাবি। ইতোমধ্যে আমাদের উপাযার্চ স্যার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সাইকোলজিস্ট খ-কালীন নিয়োগ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি, যা আমাদের জন্য ভলো লাগার বিষয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমাদের মেডিকেল সমস্যা সমাধানের জন্য আমি নিজেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। চারজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমরা নেব। এ বিষয়ে আমরা রংপুর মেডিকেল কলেজ ও সরকারি জেনারেল হাসপাতালে লিখেছি এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এখানে পার্টটাইম জব করতে আসবেন না এবং রংপুর মেডিকেল চলাকালীন সময়ে তারা এখানে সময় দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আমাদের। তারপর আমরা প্রাইম মেডিকেল কলেজের সঙ্গে কথা বলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং একজন গাইনি ডাক্তার ঠিক করা হয়েছে। খুব দ্রুত পার্টটাইম হিসেবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ দেয়া হবে তাদের। তারা সপ্তাহে দুই বা তিন দিন নির্ধারিত সময়ে আসবেন এবং আমাদের তালিকাভুক্ত রোগীদের দেখে চলে যাবেন।
রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উত্তরাঞ্চলের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- যা উত্তরবঙ্গের বাতিঘর নামেও পরিচিত। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্থায়ী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট কাউন্সেলিং সেন্টার নেই। ফলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে মানসিক চাপ, হতাশা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা।
বিভিন্ন বিভাগ ও বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও শিক্ষাজনিত চাপে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। সেই মানসিক চাপ থেকে অনেক শিক্ষার্থী আবার জড়িয়ে পড়ছে মাদক সেবনে। ফলে অনেকে মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ না থাকায় তারা তাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাচ্ছেন না নিয়মিত কোন পরামর্শ। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে চলছে। সঠিক পরামর্শ ও কাউন্সিলিংয়ের অভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ। এসব ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত একাধিক ঘটনা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।
গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৩তম ব্যাচের জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা নামের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পর এই উদ্বেগ আশঙ্কা জনক হারে বেড়েছে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার বলেন, বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা, মানসিক চাপ ও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোনো পেশাদার সাইকোলজিস্ট বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা।
শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত পরীক্ষার চাপ, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও পারিবারিক প্রত্যাশায় ভুগছে। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও কারো সঙ্গে খোলামেলা কথা বলার সুযোগ পায় না।
এই প্রেক্ষাপটে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিস্ট নিয়োগ জরুরি। একজন দক্ষ সাইকোলজিস্ট শুধু মানসিক সমস্যা মোকাবেলায় পরামর্শ দেন না, বরং শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতেও সহায়তা করেন।
উন্নত বিশ্বে ‘স্টুডেন্ট কাউন্সেলিং সেন্টার’ বাধ্যতামূলক। আমাদের দেশেও শিক্ষার্থীরা এমন সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে।
আজ সময় এসেছে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব দেওয়ার। তাই আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের সুস্থ জীবন ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া জরুরি।
একাধিক অভিভাবক বলেন, আমাদের সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বা মেসে থাকে। আমরা একসঙ্গে থাকি না। এই দূরত্ব শুধু শারীরিক নয়, মাঝে মাঝে মানসিক দূরত্বও তৈরি হয়। আগের এত সবকিছু বুঝতে পারি না, ওদের মন-মেজাজ, অনুভূতিগুলো বোঝা কঠিন হয়ে যায়। ফোনে হয়তো কথা হয়, কিন্তু ওদের ভেতরের চাপ বা হতাশা সব সময় আমরা বুঝে উঠতে পারি না। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে নানা রকম প্রতিযোগিতা, পড়ালেখার চাপ, চাকরির দুশ্চিন্তা, সম্পর্কের জটিলতা। এসব ওদের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। আবার পরিবার থেকে দূরে থাকার কারণে যেটুকু মানসিক সাপোর্ট দরকার, সেটা সব সময় ওরা পায় না। আমাদের মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য করা, যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের কথা সহজে কাউকে বলতে পারে এবং মানসিক চাপ কমাতে ঠিক সময়ে ঠিক পরামর্শ ও যথাযথ পরিচর্যা পায়।
অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সাইফুদ্দীন খালেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুধু শিক্ষা অর্জনের নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও ব্যক্তিত্ব গঠনের সময়কাল। এই সময়ে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার চাপে, ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায়, পারিবারিক ও আর্থিক দুশ্চিন্তায়, এমনকি সম্পর্কজনিত জটিলতায়ও ভুগে থাকে। এসব চ্যালেঞ্জ অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এক পর্যায়ে তা একাডেমিক ব্যর্থতা, একাকীত্ব, হতাশা বা আত্মহননের এত চরম সিদ্ধান্তে গিয়ে ঠেকে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাদার সাইকোলজিস্ট থাকা অত্যন্ত জরুরি। একজন শিক্ষার্থীর যেমন শিক্ষকের প্রয়োজন জ্ঞানার্জনের জন্য, তেমনি তার মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন একজন পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শদাতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বক্ষডুক একজন পেশাদার সাইকোলজিস্ট থাকলে শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা বজায় রেখে সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলে, মানসিক চাপ মোকাবিলায় কৌশল শেখাতে পারেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিতে পারবেন। শিক্ষার সফলতা মানে কেবল পঠিত বিষয়ের জ্ঞান নয়- একজন সুস্থ, স্থিতিশীল ও সচেতন মানুষ গড়ে তোলা। সেজন্যই আমি মনে করি, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন বা একাধিক পূর্ণকালীন সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করা উচিত এবং সময়ের দাবি। ইতোমধ্যে আমাদের উপাযার্চ স্যার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সাইকোলজিস্ট খ-কালীন নিয়োগ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি, যা আমাদের জন্য ভলো লাগার বিষয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমাদের মেডিকেল সমস্যা সমাধানের জন্য আমি নিজেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। চারজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমরা নেব। এ বিষয়ে আমরা রংপুর মেডিকেল কলেজ ও সরকারি জেনারেল হাসপাতালে লিখেছি এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এখানে পার্টটাইম জব করতে আসবেন না এবং রংপুর মেডিকেল চলাকালীন সময়ে তারা এখানে সময় দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আমাদের। তারপর আমরা প্রাইম মেডিকেল কলেজের সঙ্গে কথা বলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং একজন গাইনি ডাক্তার ঠিক করা হয়েছে। খুব দ্রুত পার্টটাইম হিসেবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ দেয়া হবে তাদের। তারা সপ্তাহে দুই বা তিন দিন নির্ধারিত সময়ে আসবেন এবং আমাদের তালিকাভুক্ত রোগীদের দেখে চলে যাবেন।