রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে ষ্টেশন বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশন। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীর পদচারণা ঘটে এই ষ্টেশনে। ভৌগলিক কারণে বগুড়ার জেলার পাশাপশি আশপাশের নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলার প্রচুর মানুষ ট্রেনপথে এই ষ্টেশন দিয়ে চলাচল করে । এই স্টেশনের ওপর দিয়ে ১১ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করে। গুরুত্বপৃর্ণ স্টেশন হওয়ায় এই স্টেশনের সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলির টিকিটের আসন সংখ্যার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু সে তুলনায় টিকিট বরাদ্দ কম। ফলে দীর্ঘদিন থেকে যাত্রীদের টিকিট নিয়ে ভোগান্তির সীমা নেই। টিকিট বরাদ্দ কম থাকায় বাধ্য হয়ে যাত্রীদের কালোবাজারে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়। বিশেষত ঈদ মৌসুমে এই সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে।
রেলওয়ে পশ্চিম জোন রাজশাহী দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার স্টেশন থেকে দিনে ও রাতে ঢাকাগামী ৯টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এগুলি হলো, পঞ্চগড়, চিলাহাটি, দ্রুতযান, নীলসাগর, লালমনি, রংপুর, একতা, বুড়িমারী ও কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেন। এ ছাড়া আরো দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন দোলনচাঁপা ও করতোয়া এক্সপ্রেস পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের মধ্যে চলচাল করে । সান্তাহার ষ্টেশন রেলসূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের নিয়মানুসারে ট্রেনের নিদিষ্ট দিন থেকে ১০ দিন আগে টিকিট কাউন্টারে ও অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু টিকিটের বরাদ্দ তুলনায় টিকিটের আসন কম থাকায় অধিকাংশ যাত্রীদের কাঙ্খিত টিকিট পেতে হিমসীম খেতে হয়। অন্যদিকে রেলযাত্রা সহজ,আরামদায়ক ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া দুরপাল্লার বাসের টিকিটের মূল্যর চেয়ে ট্রেনের টিকিটের মূল্য কম হওয়ায়ও ট্রেন যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী দুরপাল্লার বাসের টিকিটের মূল্য ৭০০-৮০০ টাকা। অন্যদিকে সান্তাহার থেকে ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটের মূল্য শোভন ৪৭৫ টাকা। তাই দিন দিন ট্রেনের যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ট্রেনের টিকিট সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।
সান্তাহার জংসন স্টেশনের বুকিং দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাগামী রংপুর আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিটের সংখ্যা ৪৫টি, একতা আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিট বরাদ্দ ৫০টি,কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা ৭৮টি,লালমনি আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা মোট ৫০টি,পঞ্চগড় আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা ১১৯টি,চিলাহাটি আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিট আসন ৮৪টি, বুড়িমারী আন্তঃনগর ট্রেনের আসন বরাদ্দ ২৫টি।
সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী ৯টি আন্তঃনগর ট্রেনের সর্বমোট আসন সংখ্যা ৬৬০টি, অপরদিকে এই টিকিটের বিপরীতে যাত্রীদের প্রতিদিনের টিকিটের চাহিদা হাজারেরও বেশি। সান্তাহার স্টেশনের বুকিং সহকারী সোহেল রানা জানান, জংসন শহর হওয়ায় এখানে টিকিটের চাহিদা অনেক। টিকিট নিয়ে আমরা হিমসিম খাচ্ছি। এই স্টেশনে আরো টিকিট বরাদ্দ দরকার। নিয়ম অনুসারে সকাল ৮টায় টিকিট কাউন্টারে খুলে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সব টিকিট প্রায় শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে একজন যাত্রী কাউন্টারে একসাথে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট পায়। আবার ঈদ মৌসুমে অধিক টিকিটের চাহিদা থাকায় পরিস্থিতি আরো গভীর সংকটে পরিনত হয়। তখন যাত্রীরা ট্রেনের ছাদে ভ্রমন করতে বাধ্য হয়। টিকিট কালোবাজারির দৌরাত্মও বেড়ে যায়।
ঢাকাগামী যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সান্তাহার জংসন স্টেশনে প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে চাহিদা মোতাবেক আসন অথবা সান্তাহারের জন্য অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ করা প্রয়োজন বলে যাত্রীরা মনে করেন। এ বিষয়ে সান্তাহার নাগরিক কমিটির অন্যতম নেতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, সান্তাহার জংশন একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহি স্টেশন। নওগাঁর ১১টি উপজেলাসহ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সহস্্রাধিক মানুষ প্রতিদিন এ ষ্টেশন দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। তাই এই স্টেশনের টিকিটের আসন বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। সান্তাহার জংসন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোছা. খাতিজা বেগম জানান, সান্তাহার স্টেশনে টিকিটের আসনের তুলনায় চাহিদা বেশি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই স্টেশনের টিকিটের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য আবেদন করেছি।
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে ষ্টেশন বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশন। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীর পদচারণা ঘটে এই ষ্টেশনে। ভৌগলিক কারণে বগুড়ার জেলার পাশাপশি আশপাশের নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলার প্রচুর মানুষ ট্রেনপথে এই ষ্টেশন দিয়ে চলাচল করে । এই স্টেশনের ওপর দিয়ে ১১ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করে। গুরুত্বপৃর্ণ স্টেশন হওয়ায় এই স্টেশনের সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলির টিকিটের আসন সংখ্যার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু সে তুলনায় টিকিট বরাদ্দ কম। ফলে দীর্ঘদিন থেকে যাত্রীদের টিকিট নিয়ে ভোগান্তির সীমা নেই। টিকিট বরাদ্দ কম থাকায় বাধ্য হয়ে যাত্রীদের কালোবাজারে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়। বিশেষত ঈদ মৌসুমে এই সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে।
রেলওয়ে পশ্চিম জোন রাজশাহী দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার স্টেশন থেকে দিনে ও রাতে ঢাকাগামী ৯টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এগুলি হলো, পঞ্চগড়, চিলাহাটি, দ্রুতযান, নীলসাগর, লালমনি, রংপুর, একতা, বুড়িমারী ও কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেন। এ ছাড়া আরো দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন দোলনচাঁপা ও করতোয়া এক্সপ্রেস পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের মধ্যে চলচাল করে । সান্তাহার ষ্টেশন রেলসূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের নিয়মানুসারে ট্রেনের নিদিষ্ট দিন থেকে ১০ দিন আগে টিকিট কাউন্টারে ও অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু টিকিটের বরাদ্দ তুলনায় টিকিটের আসন কম থাকায় অধিকাংশ যাত্রীদের কাঙ্খিত টিকিট পেতে হিমসীম খেতে হয়। অন্যদিকে রেলযাত্রা সহজ,আরামদায়ক ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া দুরপাল্লার বাসের টিকিটের মূল্যর চেয়ে ট্রেনের টিকিটের মূল্য কম হওয়ায়ও ট্রেন যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী দুরপাল্লার বাসের টিকিটের মূল্য ৭০০-৮০০ টাকা। অন্যদিকে সান্তাহার থেকে ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটের মূল্য শোভন ৪৭৫ টাকা। তাই দিন দিন ট্রেনের যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ট্রেনের টিকিট সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।
সান্তাহার জংসন স্টেশনের বুকিং দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাগামী রংপুর আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিটের সংখ্যা ৪৫টি, একতা আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিট বরাদ্দ ৫০টি,কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা ৭৮টি,লালমনি আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা মোট ৫০টি,পঞ্চগড় আন্তঃনগর ট্রেনে আসন সংখ্যা ১১৯টি,চিলাহাটি আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিট আসন ৮৪টি, বুড়িমারী আন্তঃনগর ট্রেনের আসন বরাদ্দ ২৫টি।
সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী ৯টি আন্তঃনগর ট্রেনের সর্বমোট আসন সংখ্যা ৬৬০টি, অপরদিকে এই টিকিটের বিপরীতে যাত্রীদের প্রতিদিনের টিকিটের চাহিদা হাজারেরও বেশি। সান্তাহার স্টেশনের বুকিং সহকারী সোহেল রানা জানান, জংসন শহর হওয়ায় এখানে টিকিটের চাহিদা অনেক। টিকিট নিয়ে আমরা হিমসিম খাচ্ছি। এই স্টেশনে আরো টিকিট বরাদ্দ দরকার। নিয়ম অনুসারে সকাল ৮টায় টিকিট কাউন্টারে খুলে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সব টিকিট প্রায় শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে একজন যাত্রী কাউন্টারে একসাথে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট পায়। আবার ঈদ মৌসুমে অধিক টিকিটের চাহিদা থাকায় পরিস্থিতি আরো গভীর সংকটে পরিনত হয়। তখন যাত্রীরা ট্রেনের ছাদে ভ্রমন করতে বাধ্য হয়। টিকিট কালোবাজারির দৌরাত্মও বেড়ে যায়।
ঢাকাগামী যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সান্তাহার জংসন স্টেশনে প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে চাহিদা মোতাবেক আসন অথবা সান্তাহারের জন্য অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ করা প্রয়োজন বলে যাত্রীরা মনে করেন। এ বিষয়ে সান্তাহার নাগরিক কমিটির অন্যতম নেতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, সান্তাহার জংশন একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহি স্টেশন। নওগাঁর ১১টি উপজেলাসহ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সহস্্রাধিক মানুষ প্রতিদিন এ ষ্টেশন দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। তাই এই স্টেশনের টিকিটের আসন বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। সান্তাহার জংসন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোছা. খাতিজা বেগম জানান, সান্তাহার স্টেশনে টিকিটের আসনের তুলনায় চাহিদা বেশি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই স্টেশনের টিকিটের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য আবেদন করেছি।