চট্টগ্রাম মহানগরের কাট্টলী ও হালিশহর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ১১৭ একর জমি অবৈধ দখলমুক্ত করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড।
৩৯ প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি দখল করে রেখেছিলেন। অবৈধ দখলদারের মধ্যে সাবেক সিটি মেয়র, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ছিলেন। এই ১১৭ একর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা জমির মূল্য দাঁড়ায় ১১৭০ কোটি টাকা। এসব জমিতে বনায়ন ও পরিবেশবান্ধব পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে পাউবোর।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর-১) শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, উদ্ধার করা জমিতে বনায়ন ও পরিবেশবান্ধব পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, এই এলাকায় তিনটি খাল দখল ও ভরাট হয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে। এসব খাল পুনরুদ্ধার করে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে সৌন্দর্যবৃদ্ধি, নগরবাসীর পর্যটনকেন্দ্র ও জলাবদ্ধতা নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১৯৭০ সালে ২ হাজার ৬৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল পাউবো। বাঁধ-কাম সড়ক নির্মাণের পর বিপুল পরিমাণ জায়গা অব্যবহৃত রয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তা দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা।
যার ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড অবৈধ ৩৯ দখলদার চিহ্নিত করেছিল। এসব প্রভাবশালীর কাছে হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকার প্রায় ৩২ একর জায়গা দখলে ছিল। ১৬ বছর ধরে এসব জায়গা দখল করে কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, ডিপো, ডেইরি ফার্ম, গাড়ির গ্যারেজ, হোটেল, ভাড়া ঘরসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করছিলেন প্রভাবশালীরা। এর মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, সাবেক মেয়র মনজুর আলম, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নিছার উদ্দিন আহমদ নেছার, যমুনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ, সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসেমসহ আরও অনেকে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দখলদারের তালিকায় বিএনপি নেতাও রয়েছেন। তবে স্থানীয়রা জানান, দখলদারদের অনেকেই দখলস্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখলদারমুক্ত করা জমি ইজারা পেতে আবেদন করেছেন অনেকেই। এর মধ্যে সম্প্রতি উচ্ছেদ করা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজ, সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালী নেতা ও পাকা স্থাপনার মালিকেরাও আছেন। এসব আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজসহ ভারী স্থাপনা নয়, ইজারা পেলে গবাদি পশুর ও হাঁস-মুরগির খামার এবং মাছ চাষ করতে চান তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব শাখা সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থাবর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নির্দেশনা-২০১৭ মতে, কৃষি লিজের ক্ষেত্রে প্রতি শতকের বিপরীতে ৫০ হাজার টাকার জামানত ও ৪ হাজার টাকার ভাড়া নির্ধারণ রয়েছে। আর বাণিজ্যিক লিজের ক্ষেত্রে শতকপ্রতি ৯০ হাজার টাকার জামানত ও ৯ হাজার টাকার ভাড়া গুনতে হবে। বড় অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিতে আবেদনকারীরা কৃষি লিজের আবেদন করেছেন। অথচ আবেদন করা জায়গায় আগের দখলকারীরা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজ, পাকা স্থাপনাসহ বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করেছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ আরও বলেন, উদ্ধার করা জমি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। নিজেদের ব্যবহারের পর অবশিষ্ট জমি ইজারা দিলে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব পাবে।
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রাম মহানগরের কাট্টলী ও হালিশহর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ১১৭ একর জমি অবৈধ দখলমুক্ত করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড।
৩৯ প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি দখল করে রেখেছিলেন। অবৈধ দখলদারের মধ্যে সাবেক সিটি মেয়র, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ছিলেন। এই ১১৭ একর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা জমির মূল্য দাঁড়ায় ১১৭০ কোটি টাকা। এসব জমিতে বনায়ন ও পরিবেশবান্ধব পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে পাউবোর।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর-১) শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, উদ্ধার করা জমিতে বনায়ন ও পরিবেশবান্ধব পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, এই এলাকায় তিনটি খাল দখল ও ভরাট হয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে। এসব খাল পুনরুদ্ধার করে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে সৌন্দর্যবৃদ্ধি, নগরবাসীর পর্যটনকেন্দ্র ও জলাবদ্ধতা নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১৯৭০ সালে ২ হাজার ৬৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল পাউবো। বাঁধ-কাম সড়ক নির্মাণের পর বিপুল পরিমাণ জায়গা অব্যবহৃত রয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তা দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা।
যার ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড অবৈধ ৩৯ দখলদার চিহ্নিত করেছিল। এসব প্রভাবশালীর কাছে হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকার প্রায় ৩২ একর জায়গা দখলে ছিল। ১৬ বছর ধরে এসব জায়গা দখল করে কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, ডিপো, ডেইরি ফার্ম, গাড়ির গ্যারেজ, হোটেল, ভাড়া ঘরসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করছিলেন প্রভাবশালীরা। এর মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, সাবেক মেয়র মনজুর আলম, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নিছার উদ্দিন আহমদ নেছার, যমুনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ, সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসেমসহ আরও অনেকে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দখলদারের তালিকায় বিএনপি নেতাও রয়েছেন। তবে স্থানীয়রা জানান, দখলদারদের অনেকেই দখলস্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখলদারমুক্ত করা জমি ইজারা পেতে আবেদন করেছেন অনেকেই। এর মধ্যে সম্প্রতি উচ্ছেদ করা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজ, সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালী নেতা ও পাকা স্থাপনার মালিকেরাও আছেন। এসব আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজসহ ভারী স্থাপনা নয়, ইজারা পেলে গবাদি পশুর ও হাঁস-মুরগির খামার এবং মাছ চাষ করতে চান তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব শাখা সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থাবর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নির্দেশনা-২০১৭ মতে, কৃষি লিজের ক্ষেত্রে প্রতি শতকের বিপরীতে ৫০ হাজার টাকার জামানত ও ৪ হাজার টাকার ভাড়া নির্ধারণ রয়েছে। আর বাণিজ্যিক লিজের ক্ষেত্রে শতকপ্রতি ৯০ হাজার টাকার জামানত ও ৯ হাজার টাকার ভাড়া গুনতে হবে। বড় অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিতে আবেদনকারীরা কৃষি লিজের আবেদন করেছেন। অথচ আবেদন করা জায়গায় আগের দখলকারীরা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজ, পাকা স্থাপনাসহ বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করেছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ আরও বলেন, উদ্ধার করা জমি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। নিজেদের ব্যবহারের পর অবশিষ্ট জমি ইজারা দিলে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব পাবে।