২৭ গ্রামের কৃষক পরিবারে অভাবের আগাম হাতছানি
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : বলরামপুর ভোলপাড়া স্লুইসগেট -সংবাদ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কমপক্ষে ২৭ গ্রামের মাঠের পানি বেগবতী নদীতে নিষ্কাশনের জন্য বলরামপুর ভোলপাড়া খালের ওপর নির্মাণ করা হয় স্লুইসগেট। যে গেট দিয়ে বর্ষা মৌসুমে আশপাশের বিস্তর এলাকার মাঠের পানি নদীতে নেমে যায়। এতে ফসল নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পান হাজার হাজার কৃষক। কিন্তু এ বছর লাগাতর ভারী বর্ষা আর বেগবতী নদীতে পানির প্রবাহ কম হওয়ায় উল্টো নদীর পানি ঢুকে গেছে আশপাশের মাঠগুলোতে। এতে কৃষকদের আমন রোপণের আশা শেষ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমের আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়াও কোলাবাজারে বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কে যে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত সরু করে। যে কারণে একদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানি, অন্যদিকে লাগাতর ভারী বৃষ্টিতে জমে থাকা এ এলাকার পানি একাকার হয়ে কোলাবাজারের বেগবতীর সরু বিকল্প কাঠের সেতু দিয়ে নামতে পারছে না।
এদিকে জনভোগান্তি রোধে গত বুধবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেদারুল ইসলাম কোলাবাজারের কাঠের সেতুটি পরিদর্শন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প কাঠের সেতুটি পানি নিষ্কাষণের উপযোগী করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে একটানা রাতভর ভারী বর্ষা শুরু হয়। এতে নদীতে পানির চাপ আরও বেড়ে যায়।
ভোলপাড়া বলরামপুর গ্রামের কৃষক আবেদ আলী জানান, বেগবতী নদীর পানি বলরামপুর ভোলপাড়া স্লুইসগেট দিয়ে নেমে যাওয়ার বদলে উল্টো স্লুইসগেট দিয়ে বিস্তর এলাকার মাঠে প্রবেশ করেছে।
এতে নতুন করে তলিয়ে গেছে, নিয়ামতপুর ও আশপাশের ইউনিয়নের ভোলপাড়া, বলরামপুর মহেশ্বরচাঁদা, হরিগোবিন্দপুর, আড়–য়াসলুয়া, অনুপমপুর, বলাকান্দর, মল্লিকপুর, মথুরাপুর, কামালহাট, নাখোরাজপাড়া, দৌলতপুর, কাদিরডাঙ্গা, কাকলাশ, হাজরেগাছিসহ অনেকগুলো গ্রামের মাঠ। ফলে আমন রোপণ আর হলো না। তিনি বলেন, এ বছর হাজার হাজার কৃষক পরিবারে আগাম অভাবের হাতছানি দেখছেন তারা।
এদিকে ভোলপাড়া স্লুইসগেট দিয়ে বেগবতী নদী থেকে ধেয়ে আসা পানি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকাবাসী কাঠ দিয়ে নিজেরা পানি প্রতিবন্ধকতার বাধ দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
ভুক্তভোগীদের একজন উজ্জল মৌলিক জানান, সারাজীবন দেখছি পানি স্লুইসগেট দিয়ে নদীতে যেতে। কিন্ত এ বছর উল্টো নদীর পানি বিস্তর এলাকার মাঠে ঢুকছে। তিনি বলেন, এ কারণে তাদের গ্রামসহ আশপাশের কমপক্ষে ২৭ গ্রামের মাঠের ফসল শেষ হয়ে গেছে। আরও ভারী বৃষ্টি হলে এবং স্লুইসগেটের পানি না ঠোকানো গেলে এরপর তাদের বসতবাড়িতেও পানিতে তলিয়ে যাবে এমন আশঙ্কা করছেন তারা।
এদিকে কোলাবাজারে নির্মিত বিকল্প সড়ক ভেঙে গেছে। এখন কোলা ও জামাল ইউনিয়ের লোকজন নদী পার হয়ে এপার-ওপার যাওয়া আসা করতে পারছেন না। কোলাবাজারে আসতে বিকল্প রামচন্দ্রপুর ও বলরামপুর বাজার হয়ে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার দুরের পথ পাড়ি দিয়ে কোলাবাজারে আসছেন। এটা তাদের জন্য এক বিরাট ভোগান্তি।
২৭ গ্রামের কৃষক পরিবারে অভাবের আগাম হাতছানি
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : বলরামপুর ভোলপাড়া স্লুইসগেট -সংবাদ
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কমপক্ষে ২৭ গ্রামের মাঠের পানি বেগবতী নদীতে নিষ্কাশনের জন্য বলরামপুর ভোলপাড়া খালের ওপর নির্মাণ করা হয় স্লুইসগেট। যে গেট দিয়ে বর্ষা মৌসুমে আশপাশের বিস্তর এলাকার মাঠের পানি নদীতে নেমে যায়। এতে ফসল নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পান হাজার হাজার কৃষক। কিন্তু এ বছর লাগাতর ভারী বর্ষা আর বেগবতী নদীতে পানির প্রবাহ কম হওয়ায় উল্টো নদীর পানি ঢুকে গেছে আশপাশের মাঠগুলোতে। এতে কৃষকদের আমন রোপণের আশা শেষ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমের আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়াও কোলাবাজারে বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কে যে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত সরু করে। যে কারণে একদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানি, অন্যদিকে লাগাতর ভারী বৃষ্টিতে জমে থাকা এ এলাকার পানি একাকার হয়ে কোলাবাজারের বেগবতীর সরু বিকল্প কাঠের সেতু দিয়ে নামতে পারছে না।
এদিকে জনভোগান্তি রোধে গত বুধবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেদারুল ইসলাম কোলাবাজারের কাঠের সেতুটি পরিদর্শন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প কাঠের সেতুটি পানি নিষ্কাষণের উপযোগী করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে একটানা রাতভর ভারী বর্ষা শুরু হয়। এতে নদীতে পানির চাপ আরও বেড়ে যায়।
ভোলপাড়া বলরামপুর গ্রামের কৃষক আবেদ আলী জানান, বেগবতী নদীর পানি বলরামপুর ভোলপাড়া স্লুইসগেট দিয়ে নেমে যাওয়ার বদলে উল্টো স্লুইসগেট দিয়ে বিস্তর এলাকার মাঠে প্রবেশ করেছে।
এতে নতুন করে তলিয়ে গেছে, নিয়ামতপুর ও আশপাশের ইউনিয়নের ভোলপাড়া, বলরামপুর মহেশ্বরচাঁদা, হরিগোবিন্দপুর, আড়–য়াসলুয়া, অনুপমপুর, বলাকান্দর, মল্লিকপুর, মথুরাপুর, কামালহাট, নাখোরাজপাড়া, দৌলতপুর, কাদিরডাঙ্গা, কাকলাশ, হাজরেগাছিসহ অনেকগুলো গ্রামের মাঠ। ফলে আমন রোপণ আর হলো না। তিনি বলেন, এ বছর হাজার হাজার কৃষক পরিবারে আগাম অভাবের হাতছানি দেখছেন তারা।
এদিকে ভোলপাড়া স্লুইসগেট দিয়ে বেগবতী নদী থেকে ধেয়ে আসা পানি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকাবাসী কাঠ দিয়ে নিজেরা পানি প্রতিবন্ধকতার বাধ দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
ভুক্তভোগীদের একজন উজ্জল মৌলিক জানান, সারাজীবন দেখছি পানি স্লুইসগেট দিয়ে নদীতে যেতে। কিন্ত এ বছর উল্টো নদীর পানি বিস্তর এলাকার মাঠে ঢুকছে। তিনি বলেন, এ কারণে তাদের গ্রামসহ আশপাশের কমপক্ষে ২৭ গ্রামের মাঠের ফসল শেষ হয়ে গেছে। আরও ভারী বৃষ্টি হলে এবং স্লুইসগেটের পানি না ঠোকানো গেলে এরপর তাদের বসতবাড়িতেও পানিতে তলিয়ে যাবে এমন আশঙ্কা করছেন তারা।
এদিকে কোলাবাজারে নির্মিত বিকল্প সড়ক ভেঙে গেছে। এখন কোলা ও জামাল ইউনিয়ের লোকজন নদী পার হয়ে এপার-ওপার যাওয়া আসা করতে পারছেন না। কোলাবাজারে আসতে বিকল্প রামচন্দ্রপুর ও বলরামপুর বাজার হয়ে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার দুরের পথ পাড়ি দিয়ে কোলাবাজারে আসছেন। এটা তাদের জন্য এক বিরাট ভোগান্তি।