দেশ-বিদেশে চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত ও পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট চা বাগানে অবস্থিত ডাকঘর বাংলাদেশের ডাক বিভাগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত এই ডাকঘরটি দেশের চা-শিল্পাঞ্চলের প্রথম ডাকঘর হিসেবে বিবেচিত।
ব্রিটিশ আমলে চা-শিল্পের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। চা-বাগানগুলোর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ব্রিটিশ কর্মকর্তারা (সাহেবরা) তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ডাকঘরের প্রয়োজন অনুভব করেন। এই প্রেক্ষাপটে ১৯২৩ সালে শ্রীমঙ্গল থানার কালীঘাট চা-বাগানে কালীঘাট পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ডাকঘরটি চা-শ্রমিকদের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার বার্তা আদান-প্রদানের একমাত্র মাধ্যম ছিল।
কালীঘাট ডাকঘরটি শুধু চা-শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাহেব ও শ্রমিকদের জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের মানুষের জন্য যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল। চিঠি, টেলিগ্রাম, পোস্টকার্ডের মাধ্যমে মানুষ তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। ডাকঘরটি একটি সামাজিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করত, যেখানে মানুষ চিঠির অপেক্ষায় থাকতেন এবং ডাকপিয়নের আগমনে আনন্দিত হতেন।
বর্তমানে কালীঘাট ডাকঘরটি তার শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। যদিও আধুনিক প্রযুক্তির কারণে চিঠি আদান-প্রদানের হার কমে গেছে, তবুও এই ডাকঘরটি এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে একজন সাব-পোস্টমাস্টার, একজন পোস্টম্যান এবং একজন রানার রয়েছেন। ডাকঘরটি লাল রঙের টিনের তৈরি এবং সময়-সময় রঙ করে রাখা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং দর্শনার্থীরা এই ঐতিহাসিক ডাকঘরটি দেখতে আসেন এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গলের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক রাসেন্দ্র দত্ত চৌধুরী বলেন, কালীঘাট ডাকঘরটি শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যের একটি অংশ। তিনি বলেন, “এই ডাকঘর প্রমাণ করে, এখানে শত বছর আগেও একটি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত ছিল। এটি যেহেতু শত বছরের উপর হয়ে গেছে, ডাক বিভাগ ও এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদের উচিত এটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য, স্থানীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য টিকিয়ে রাখা।”
এই ঐতিহাসিক কালীঘাট ডাকঘরটি দেশের ডাক বিভাগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সরকারের দায়িত্ব, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে এবং এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে।
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
দেশ-বিদেশে চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত ও পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট চা বাগানে অবস্থিত ডাকঘর বাংলাদেশের ডাক বিভাগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত এই ডাকঘরটি দেশের চা-শিল্পাঞ্চলের প্রথম ডাকঘর হিসেবে বিবেচিত।
ব্রিটিশ আমলে চা-শিল্পের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। চা-বাগানগুলোর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ব্রিটিশ কর্মকর্তারা (সাহেবরা) তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ডাকঘরের প্রয়োজন অনুভব করেন। এই প্রেক্ষাপটে ১৯২৩ সালে শ্রীমঙ্গল থানার কালীঘাট চা-বাগানে কালীঘাট পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ডাকঘরটি চা-শ্রমিকদের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার বার্তা আদান-প্রদানের একমাত্র মাধ্যম ছিল।
কালীঘাট ডাকঘরটি শুধু চা-শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাহেব ও শ্রমিকদের জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের মানুষের জন্য যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল। চিঠি, টেলিগ্রাম, পোস্টকার্ডের মাধ্যমে মানুষ তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। ডাকঘরটি একটি সামাজিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করত, যেখানে মানুষ চিঠির অপেক্ষায় থাকতেন এবং ডাকপিয়নের আগমনে আনন্দিত হতেন।
বর্তমানে কালীঘাট ডাকঘরটি তার শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। যদিও আধুনিক প্রযুক্তির কারণে চিঠি আদান-প্রদানের হার কমে গেছে, তবুও এই ডাকঘরটি এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে একজন সাব-পোস্টমাস্টার, একজন পোস্টম্যান এবং একজন রানার রয়েছেন। ডাকঘরটি লাল রঙের টিনের তৈরি এবং সময়-সময় রঙ করে রাখা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং দর্শনার্থীরা এই ঐতিহাসিক ডাকঘরটি দেখতে আসেন এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গলের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক রাসেন্দ্র দত্ত চৌধুরী বলেন, কালীঘাট ডাকঘরটি শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যের একটি অংশ। তিনি বলেন, “এই ডাকঘর প্রমাণ করে, এখানে শত বছর আগেও একটি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত ছিল। এটি যেহেতু শত বছরের উপর হয়ে গেছে, ডাক বিভাগ ও এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদের উচিত এটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য, স্থানীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য টিকিয়ে রাখা।”
এই ঐতিহাসিক কালীঘাট ডাকঘরটি দেশের ডাক বিভাগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সরকারের দায়িত্ব, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে এবং এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে।