সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) : শাপলা বাজারজাতকরণে ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
বর্ষার জলমগ্ন মাঠে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। চোখ জুড়ানো এ দৃশ্য শুধু দৃষ্টির আরামই এনে দেয় না, বরং বহু পরিবারের জন্য হয়ে উঠেছে আয়ের প্রধান উৎস। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শতাধিক পরিবার এখন শাপলা সংগ্রহ ও বিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্ষায় কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের চাষাবাদ সাময়িকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে এতে ভিন্নভাবে লাভবান হয়েছেন অনেকে। কৃষিকাজে কম সময় লাগায়, অনেকেই এখন শাপলা সংগ্রহে মনোযোগ দিচ্ছেন। উপজেলার রশুনিয়া, লতব্দী, নিমতলা ও তালতলা এলাকায় গড়ে উঠেছে শাপলার পাইকারি ক্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ শাপলা কিনে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ পাইকারি বাজারে নিয়ে যান বিক্রেতারা। এরপর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। লতব্দী ইউনিয়নের চরনিমতলার বাসিন্দা সফিউল ইসলাম জানান, প্রতিদিন একজন শ্রমিক সারাদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ মোঠা শাপলা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতিটি মোঠায় থাকে ৪০টি করে ফুল।
পাইকারদের কাছে এসব বিক্রি করে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করছেন সংগ্রাহকেরা। এ বছর বর্ষায় ডুবে যাওয়া ধান ও পাটখেতের বদলে শাপলার বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইছামতী খালের বিলজুড়েও দেখা মিলছে রঙিন শাপলার। মৌসুম চলাকালীন, অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এই ফুল পাওয়া যায়। মৌসুমের শেষদিকে এর পরিমাণ কমে এলেও, শুরুতে চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই বেশি থাকে। বাসাইল ইউনিয়নের পাইকার সাগর হাওলাদার জানান, তিনি প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা সংগ্রহ করেন। প্রতি মোঠা ১২ থেকে ১৫ টাকায় কেনা হলেও, পরিবহন, শ্রমিক, আড়তদারি খরচ মিলিয়ে দাম পড়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পরে যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ আড়তে তা বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, কয়েক বছর ধরে শাপলা ব্যবসা এখানে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবেই কৃষি জমিতে শাপলা ফুল ফোটে।
এই ফুল সংগ্রহ করে সঠিকভাবে বাজারজাত করা গেলে তা কৃষকের জন্য একটি লাভজনক আয়ের উৎস হতে পারে। শাপলার সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখন এটি হয়ে উঠেছে জীবিকার অবলম্বন। বর্ষার প্রাকৃতিক আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে সিরাজদিখানের মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পথেই হাঁটছে।
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) : শাপলা বাজারজাতকরণে ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
বর্ষার জলমগ্ন মাঠে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। চোখ জুড়ানো এ দৃশ্য শুধু দৃষ্টির আরামই এনে দেয় না, বরং বহু পরিবারের জন্য হয়ে উঠেছে আয়ের প্রধান উৎস। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শতাধিক পরিবার এখন শাপলা সংগ্রহ ও বিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্ষায় কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের চাষাবাদ সাময়িকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে এতে ভিন্নভাবে লাভবান হয়েছেন অনেকে। কৃষিকাজে কম সময় লাগায়, অনেকেই এখন শাপলা সংগ্রহে মনোযোগ দিচ্ছেন। উপজেলার রশুনিয়া, লতব্দী, নিমতলা ও তালতলা এলাকায় গড়ে উঠেছে শাপলার পাইকারি ক্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ শাপলা কিনে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ পাইকারি বাজারে নিয়ে যান বিক্রেতারা। এরপর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। লতব্দী ইউনিয়নের চরনিমতলার বাসিন্দা সফিউল ইসলাম জানান, প্রতিদিন একজন শ্রমিক সারাদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ মোঠা শাপলা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতিটি মোঠায় থাকে ৪০টি করে ফুল।
পাইকারদের কাছে এসব বিক্রি করে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করছেন সংগ্রাহকেরা। এ বছর বর্ষায় ডুবে যাওয়া ধান ও পাটখেতের বদলে শাপলার বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইছামতী খালের বিলজুড়েও দেখা মিলছে রঙিন শাপলার। মৌসুম চলাকালীন, অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এই ফুল পাওয়া যায়। মৌসুমের শেষদিকে এর পরিমাণ কমে এলেও, শুরুতে চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই বেশি থাকে। বাসাইল ইউনিয়নের পাইকার সাগর হাওলাদার জানান, তিনি প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা সংগ্রহ করেন। প্রতি মোঠা ১২ থেকে ১৫ টাকায় কেনা হলেও, পরিবহন, শ্রমিক, আড়তদারি খরচ মিলিয়ে দাম পড়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পরে যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ আড়তে তা বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, কয়েক বছর ধরে শাপলা ব্যবসা এখানে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবেই কৃষি জমিতে শাপলা ফুল ফোটে।
এই ফুল সংগ্রহ করে সঠিকভাবে বাজারজাত করা গেলে তা কৃষকের জন্য একটি লাভজনক আয়ের উৎস হতে পারে। শাপলার সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখন এটি হয়ে উঠেছে জীবিকার অবলম্বন। বর্ষার প্রাকৃতিক আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে সিরাজদিখানের মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পথেই হাঁটছে।