ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ছালাভরা-কোলাবাজার জেসি সড়কের কোলাবাজারে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি এখন পানির নিচে। লাগাতর ভারী বর্ষায় বেগবতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কোলা ও পার্শ্ববর্তী জামাল ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষ। এখন বাজারের এপার থেকে ওপারে যেতে মাত্র ২ মিনিটের পথ ঘুরতে হচ্ছে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটারের রাস্তা। এমন অবস্থায় কোনো রকমে পারাপারের জন্য গতকাল সোমবার এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক বাঁশের একটি সাঁকো তৈরি করা হয়েছে- যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে কয়েক দিন আগে লোকজনের পারাপারের ভোগান্তিরোধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি ট্রলার দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।
পারখালকুলা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কোলাবাজারের বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি পাশ্ববর্তী জামাল ও কোলা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সেতুবন্ধনকারী হিসেবে মনে করা হয়। তারা বলেন, কোলাবাজারটি দেশের গ্রামাঞ্চালের মধ্যে একটি অন্যতম বৃহদ বাজার। যেখানে ছোট বড় মিলে কমপক্ষে সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট রয়েছে। এ বাজারটির এপার ওপারে কলেজ, মাধ্যমিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে ব্যাংক বীমা, পুলিশ ফাঁড়িসহ অসংখ্য অফিস। ফলে নদী পারাপারের ব্যবস্থা থাকা খুব জরুরি। কিন্তু গত কয়দিন ধরে তারা নদী পার হয়ে আসা যাওয়া করতে পারেছিলেন না। আসতে হলে ঘুরতে হচ্ছিল কমপক্ষে ১০ কিলোমিটারের রাস্তা। উপায়ান্তর না পেয়ে নিজেরা কোনোভাবে পার হওয়া মতো বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। উল্লেখ্য, উপজেলার ছালাভরা-কোলা জেসি সড়কের কোলাবাজারে বেগবতী নদীর ওপরে ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মানের কাজ বেশ আগেই শুরু হয়। নির্মাণের সময়কাল নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতিতে এখনও এ সেতুর কাজ তেমন একটা দৃশ্যমান হয়নি। এদিকে লোকজনের পারাপারের জন্য পাশেই যে বিকল্প সড়কের ওপর কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল তা ছিল অত্যন্ত সরু। যে কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানি ও বিগত কিছু দিনের লাগাতর ভারী বর্ষার পানি একাকার হয়ে মাত্রাতিরিক্ত পানি বেড়ে যায় নদীতে। বিকল্প কাঠের সরু সেতু দিয়ে পানি নিষ্কাশন ঠিকমতো হয়নি। ফলে বলরামপুর স্লুইসগেট দিয়ে নিয়ামতপুর ও আশপাশের ইউনিয়নের ২৭ গ্রামের মাঠের পানি বেগবতী নদীতে নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্থ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই ভাবে সদর উপজেলার মহারাজপুর ও কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী যশাইখালি স্লুইসগেট দিয়ে বেগবতী নদীতে পানি যেতে বাধার সৃষ্টি হয়। ফলে গান্না, মহারাজপুর ও কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের অনেকগুলো গ্রামের মাঠ পানিতে তলিয়ে যায়। হাজার হাজার কৃষকের ক্ষেতের পানি নিষ্কাষনে কোলাবাজারের বিকল্প কাঠের সেতুর দুই পাশ বেশ গভীর করে বাড়ানো হয়। এর ফলে কমতে শুরু করেছে মাঠগুলোর পানি। কিন্ত লোক চলাচল বন্ধ হয়ে মহাভোগান্তি সৃষ্টি হয়। যে কারণে এলাকাবাসী লোক পারাপারের জন্য গতকাল সোমবার তৈরি করেছে একটি এক বাঁশের সাঁকো। এতে কিছুটা হলেও মানুষের মধ্যে আপাতত ফিরেছে স্বস্তি।