ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : নিজের খেতে টমেটো পরিচর্যায় ব্যস্ত ছগীর মিয়া -সংবাদ
ভৈরবে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন ছগীর মিয়া নামে একজন চাষি। তিনি পৌর শহরের চন্ডিবের উত্তর এলাকার একজন প্রান্তিক চাষি। তিনি ইউটিউবের সহায়তায় গ্রাফটিং চারা, মালচিং চাষাবাদ পদ্ধতি ও স্কাইনেট ব্যবহার করে এই সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, টমেটো সাধারণত একটি শীতকালীন ফসল। তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রীষ্মকালেও এই সবজিটির আবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু টানা বৃষ্টি, তীব্র তাবদাহ আর জলাবদ্ধতার জন্য অধিকাংশ এলাকার কৃষকরা এই সময়ের টমেটো চাষে লোকসানের মুখে পড়েন।
সেই দিকটি মাথায় রেখে কৃষক ছগীর মিয়া ইউটিউব দেখে উন্নত বিশ্বের চাষবাদ গ্রাফটিং চারা তৈরি, মালচিং পদ্ধতি ও জমিতে স্কাইনেট ব্যবহার করেছেন। ফলে তিনি এই অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন।
টমেটোর চারা গ্রাফটিং হলো- দুটি ভিন্ন টমেটো গাছের অংশ যেমন- একটি শক্তিশালী মূল এবং একটি ফল উৎপাদনকারী অংশ একত্রিত করার পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি স্টক (Rootstock) নামক গাছের মূল অংশ ব্যবহার করা হয়, যা রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী এবং অন্যটি ‘স্কিয়ন’ নামক গাছের ফল উৎপাদনকারী অংশ ব্যবহার করা হয়- যা পছন্দসই ফল দেয়। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ফলন বৃদ্ধি এবং গাছের জীবনকাল দীর্ঘ করা যায়।
মালচিং হলো গাছের গোড়ার মাটি বিশেষ পলিপেপার দিয়ে ঢেকে দেয়ার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এতে করে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে। আগাছার বৃদ্ধি রোধ করে। মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মাটির গুণাগুণ উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রয়োজনীয় পানি ধরে রাখতে এবং ফেলে দিতে সাহায্য করে।
স্কাইনেট ব্যবহারে ফসলের ফুল, ফল ও চারাকে অতি রোদ-বৃষ্টি. পোকা, পাখি থেকে রক্ষা করে।
চাষি ছগীর মিয়া জানান, তিনি ৩৫ শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রাফটিং চারা রোপণ করে জমিতে স্কাইনেট ব্যবহার করে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। এই পদ্ধতি তার মোট খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকার মতো।
ফুল-ফলনে তার জমি এখন ভরপুর। প্রতিদিন তিনি এক থেকে দেড় মণ টমেটো সংগ্রহ করছেন। এই সময় বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি খুচরা ১৫০-১৬০ এবং পাইকারি ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৯০ হাজার টাকার এত বিক্রি করেছেন। সাড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি। এতে করে খরচ বাদে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা তার মুনাফা হবে বলে জানিয়েছেন।
এই পদ্ধতিতে সবজির আবাদ খুবই লাভজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষিতে তেমন লাভ নেই- এমন যারা বলেন, তাদের এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে। তিনি বলেন, সঠিক পদ্ধতি জেনে চাষাবাদ করলে অবশ্যই কৃষিতে মুনাফা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, টমেটো সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও, বর্তমানে গ্রীষ্মকালেও চাষাবাদ হয়। তবে গ্রাফটিং চারায় মালচিং পদ্ধতিতে স্কাইনেট ব্যবহার করে চাষাবাদ করলে কৃষক লাভবান হন।
চণ্ডিবের এলাকার কৃষক ছগীর মিয়াও এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সফল হয়েছেন। তিনি তার ৩৫ শতক জমিতে দুই লাখ টাকার খরচ করে টমেটোর আবাদ করে ৩ থেকে লাখ টাকা মুনাফা আশা করছেন।
ছগীর মিয়ার এত এমন উদ্যোগী কৃষকদের তার দপ্তর সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : নিজের খেতে টমেটো পরিচর্যায় ব্যস্ত ছগীর মিয়া -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট ২০২৫
ভৈরবে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন ছগীর মিয়া নামে একজন চাষি। তিনি পৌর শহরের চন্ডিবের উত্তর এলাকার একজন প্রান্তিক চাষি। তিনি ইউটিউবের সহায়তায় গ্রাফটিং চারা, মালচিং চাষাবাদ পদ্ধতি ও স্কাইনেট ব্যবহার করে এই সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, টমেটো সাধারণত একটি শীতকালীন ফসল। তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রীষ্মকালেও এই সবজিটির আবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু টানা বৃষ্টি, তীব্র তাবদাহ আর জলাবদ্ধতার জন্য অধিকাংশ এলাকার কৃষকরা এই সময়ের টমেটো চাষে লোকসানের মুখে পড়েন।
সেই দিকটি মাথায় রেখে কৃষক ছগীর মিয়া ইউটিউব দেখে উন্নত বিশ্বের চাষবাদ গ্রাফটিং চারা তৈরি, মালচিং পদ্ধতি ও জমিতে স্কাইনেট ব্যবহার করেছেন। ফলে তিনি এই অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন।
টমেটোর চারা গ্রাফটিং হলো- দুটি ভিন্ন টমেটো গাছের অংশ যেমন- একটি শক্তিশালী মূল এবং একটি ফল উৎপাদনকারী অংশ একত্রিত করার পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি স্টক (Rootstock) নামক গাছের মূল অংশ ব্যবহার করা হয়, যা রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী এবং অন্যটি ‘স্কিয়ন’ নামক গাছের ফল উৎপাদনকারী অংশ ব্যবহার করা হয়- যা পছন্দসই ফল দেয়। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ফলন বৃদ্ধি এবং গাছের জীবনকাল দীর্ঘ করা যায়।
মালচিং হলো গাছের গোড়ার মাটি বিশেষ পলিপেপার দিয়ে ঢেকে দেয়ার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এতে করে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে। আগাছার বৃদ্ধি রোধ করে। মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মাটির গুণাগুণ উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রয়োজনীয় পানি ধরে রাখতে এবং ফেলে দিতে সাহায্য করে।
স্কাইনেট ব্যবহারে ফসলের ফুল, ফল ও চারাকে অতি রোদ-বৃষ্টি. পোকা, পাখি থেকে রক্ষা করে।
চাষি ছগীর মিয়া জানান, তিনি ৩৫ শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রাফটিং চারা রোপণ করে জমিতে স্কাইনেট ব্যবহার করে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। এই পদ্ধতি তার মোট খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকার মতো।
ফুল-ফলনে তার জমি এখন ভরপুর। প্রতিদিন তিনি এক থেকে দেড় মণ টমেটো সংগ্রহ করছেন। এই সময় বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি খুচরা ১৫০-১৬০ এবং পাইকারি ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৯০ হাজার টাকার এত বিক্রি করেছেন। সাড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি। এতে করে খরচ বাদে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা তার মুনাফা হবে বলে জানিয়েছেন।
এই পদ্ধতিতে সবজির আবাদ খুবই লাভজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষিতে তেমন লাভ নেই- এমন যারা বলেন, তাদের এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে। তিনি বলেন, সঠিক পদ্ধতি জেনে চাষাবাদ করলে অবশ্যই কৃষিতে মুনাফা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, টমেটো সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও, বর্তমানে গ্রীষ্মকালেও চাষাবাদ হয়। তবে গ্রাফটিং চারায় মালচিং পদ্ধতিতে স্কাইনেট ব্যবহার করে চাষাবাদ করলে কৃষক লাভবান হন।
চণ্ডিবের এলাকার কৃষক ছগীর মিয়াও এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সফল হয়েছেন। তিনি তার ৩৫ শতক জমিতে দুই লাখ টাকার খরচ করে টমেটোর আবাদ করে ৩ থেকে লাখ টাকা মুনাফা আশা করছেন।
ছগীর মিয়ার এত এমন উদ্যোগী কৃষকদের তার দপ্তর সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।