গারো সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হতোসেরেজিং গানের মাধ্যমে। এ সময় সামাজিক সাংস্কৃতিক পর্বগুলো জমে উঠত এ গানে। যুবক যুবতিরা দলভিত্তিক পরিবেশনার মধ্যে ফুটিয়ে তুলতো ঐতিহ্যে ভরা সংস্কৃতি। বিয়ে সাদি,পূজা পার্বন, জুম, ফসল কাটার উৎসবসহ অন্যান্য সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সেরেজিং গান পরিবেশন ছিল লক্ষনীয়।
সুর তাল চর্চা রচনায় ছিল তাদের নিজস্ব জাতিগোষ্ঠীর নানা উপজীব্য বিষয়। এখন দিন দিন নানা কারণে চর্চা রচনা আগের মতো হয়ে উঠছে না। আগের দিনের শিল্পীদের মধ্যে প্রবীনরা মারা যাচ্ছে। সে হারে নতুনরা গড়ে উঠছে না। আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব পড়ছে নতুন প্রজন্মে।
তবে এখনো মধুপুর গড়ে গারোদের বিভিন্ন পর্বে পরিবেশন হয়সেরেজিংসহ নানালোক সংস্কৃতি। সরকারিবেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার কালচারাল একাডেমি স্থাপনের দাবি স্থানীয়দের। গড় অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে গারো সম্প্রদায়েরলোকদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানাগেছে। সরজমিনে পীরগাছা থানারবাইদ সাইনামারিসহ কয়েকটি মান্দি গ্রাম ঘুরে গারো সম্প্রদায়েরলোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সেরেজিং গান তাদের এক প্রকারলোকসংগীত। যা গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গানগুলো সাধারণত তাদের উৎসব, পার্বণ, বা সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় এবং প্রকৃতি,প্রেম, জীবন ও গারো সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক এতে প্রতিফলিত হয়। সেরেজিং গানগুলি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শুধু বিনোদনের মাধ্যমে নয়, ঐতিহ্য ওলোক কাহিনি প্রজন্মথেকে প্রজন্মেপৌঁছেদেওয়ারও একটি মাধ্যমও।
নৃতাত্তি¦ক জনগোষ্ঠীর এ গারো সম্প্রদায়ের রয়েছে বৈচিত্র্যময় জীবনধারা। রয়েছে তাদের নিজস্ব খাদ্য প্রণালী।পোষাকথেকে শুরু করে আচার অনুষ্ঠান উৎসব পার্বণ সামাজিক সাংস্কৃতিকক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য রয়েছে। বিভিন্ন পর্বে চলে তাদের জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যেই। জমে উঠে তাদের উৎসব সামাজিক সাংস্কৃতিকসহ নানা বর্নাঢ্য অনুষ্ঠান। তাদেরলোকজ সংস্কৃতির মধ্যেরেরে,আজিয়া,সেরেজিংসহ নানালোক সংস্কৃতি। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এসবলোক সংস্কৃতি।এর মধ্যেসেরেজিং অন্যতম। বিভিন্ন পর্ব পার্বনগুলো উৎসবমুখর হয়ে উঠে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যে। কথা হয়লোকজ সংস্কৃতিরসেরেজিং গানের শিল্পী তৃপ্তিরেমা (৪৭)’র সাথে। তিনি ওয়ানগালাথেকে শুরু করে তাদের নিজস্ব বিভিন্ন পর্বে গান গেয়ে থাকে। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরের থানার বাইদ গ্রামে। গত মঙ্গলবার মধুপুর শহরে ১৩ কিমি. দূরে ফুলবাগচালা ইউনিয়নের থানার বাইদ গ্রামে কথা হয় তৃপ্তিরেমার সাথে। কথা হয়লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে। তিনি যখন তৃতীয়শ্রেনীতে পড়েন তখনথেকেই গান শুরু। স্কুল বাড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেছোট কালথেকেই গান করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি চলত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডও। এভাবেই তাদের নিজস্ব জাতিগোষ্ঠীর গানশেখা। তিনি বলেন, এক সময় তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠানে এসব গান হতো। জমে উঠতো অনুষ্ঠান।
তৃপ্তি রেমা জানালেন, সেরেজিং ছাড়াও রেরে, আজিয়াসহ বিভিন্ন গান হতো সমানতালে। এখন দিন দিন কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের সম্প্রদায়েরলোক সংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেরেজিং। যা ইতিহাস ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে অবিচ্ছেদ্য। বিভিন্ন গানের মধ্যে এ গানটি অনেকটাই জনপ্রিয়। এ গানের প্রকৃতি প্রেম ভালোবাসাফোটে উঠে। তাদের নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ও উৎসব পূজা পার্বনে এ পরিবেশন হয়ে থাকে। থানার বাইদ গ্রামের বিজয় মৃ বলেন, সেরেজিং গানগুলোতে সাধারণত এক ধরনের বিশেষ সুর ও তাল থাকে, যা গারোলোকসংগীতের বৈশিষ্ট্য বহন করে। গানগুলি গারো ভাষায় গাওয়া হয়।
, যা গারো সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গানগুলিতে প্রকৃতি, প্রেম, জীবন, গারোদের ঐতিহ্য ও সামাজিক রীতিনীতি, এমনকি ঐতিহাসিক ঘটনাও প্রতিফলিত হয়ে থাকে।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক বলেন, এটা পালাগানের মতো। যুবক যুবতিরা দলগত ভাবে এ গান গাইত। বাংলা হিন্দি গানের প্রভাবে এ গান গানের চর্চা কমে যাচ্ছে। গানলেখা ও চর্চার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য সরকারিবেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা হলে ভালো হবে বলে তিনি মনে করেন।
নেত্রকোনা বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক পরাগ রিছিল বলেন, এক সময় বিভিন্ন গ্রামেসেরেজিং গানের দল ছিল। এখন দুই একটা দল রয়েছে কলমাকান্দায় এলাকায়। এ গান অনেক উচ্চ ক্ল্যাসিক ধরনের। এ গানের শিল্পীরা সাধারণত দিন মজুর খেটে খাওয়া লোক। কর্মের সন্ধানে তাদের দিন কাটে। এ জন্য শিল্পী সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
গারো সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হতোসেরেজিং গানের মাধ্যমে। এ সময় সামাজিক সাংস্কৃতিক পর্বগুলো জমে উঠত এ গানে। যুবক যুবতিরা দলভিত্তিক পরিবেশনার মধ্যে ফুটিয়ে তুলতো ঐতিহ্যে ভরা সংস্কৃতি। বিয়ে সাদি,পূজা পার্বন, জুম, ফসল কাটার উৎসবসহ অন্যান্য সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সেরেজিং গান পরিবেশন ছিল লক্ষনীয়।
সুর তাল চর্চা রচনায় ছিল তাদের নিজস্ব জাতিগোষ্ঠীর নানা উপজীব্য বিষয়। এখন দিন দিন নানা কারণে চর্চা রচনা আগের মতো হয়ে উঠছে না। আগের দিনের শিল্পীদের মধ্যে প্রবীনরা মারা যাচ্ছে। সে হারে নতুনরা গড়ে উঠছে না। আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব পড়ছে নতুন প্রজন্মে।
তবে এখনো মধুপুর গড়ে গারোদের বিভিন্ন পর্বে পরিবেশন হয়সেরেজিংসহ নানালোক সংস্কৃতি। সরকারিবেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার কালচারাল একাডেমি স্থাপনের দাবি স্থানীয়দের। গড় অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে গারো সম্প্রদায়েরলোকদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানাগেছে। সরজমিনে পীরগাছা থানারবাইদ সাইনামারিসহ কয়েকটি মান্দি গ্রাম ঘুরে গারো সম্প্রদায়েরলোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সেরেজিং গান তাদের এক প্রকারলোকসংগীত। যা গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গানগুলো সাধারণত তাদের উৎসব, পার্বণ, বা সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় এবং প্রকৃতি,প্রেম, জীবন ও গারো সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক এতে প্রতিফলিত হয়। সেরেজিং গানগুলি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শুধু বিনোদনের মাধ্যমে নয়, ঐতিহ্য ওলোক কাহিনি প্রজন্মথেকে প্রজন্মেপৌঁছেদেওয়ারও একটি মাধ্যমও।
নৃতাত্তি¦ক জনগোষ্ঠীর এ গারো সম্প্রদায়ের রয়েছে বৈচিত্র্যময় জীবনধারা। রয়েছে তাদের নিজস্ব খাদ্য প্রণালী।পোষাকথেকে শুরু করে আচার অনুষ্ঠান উৎসব পার্বণ সামাজিক সাংস্কৃতিকক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য রয়েছে। বিভিন্ন পর্বে চলে তাদের জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যেই। জমে উঠে তাদের উৎসব সামাজিক সাংস্কৃতিকসহ নানা বর্নাঢ্য অনুষ্ঠান। তাদেরলোকজ সংস্কৃতির মধ্যেরেরে,আজিয়া,সেরেজিংসহ নানালোক সংস্কৃতি। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এসবলোক সংস্কৃতি।এর মধ্যেসেরেজিং অন্যতম। বিভিন্ন পর্ব পার্বনগুলো উৎসবমুখর হয়ে উঠে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যে। কথা হয়লোকজ সংস্কৃতিরসেরেজিং গানের শিল্পী তৃপ্তিরেমা (৪৭)’র সাথে। তিনি ওয়ানগালাথেকে শুরু করে তাদের নিজস্ব বিভিন্ন পর্বে গান গেয়ে থাকে। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরের থানার বাইদ গ্রামে। গত মঙ্গলবার মধুপুর শহরে ১৩ কিমি. দূরে ফুলবাগচালা ইউনিয়নের থানার বাইদ গ্রামে কথা হয় তৃপ্তিরেমার সাথে। কথা হয়লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে। তিনি যখন তৃতীয়শ্রেনীতে পড়েন তখনথেকেই গান শুরু। স্কুল বাড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেছোট কালথেকেই গান করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি চলত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডও। এভাবেই তাদের নিজস্ব জাতিগোষ্ঠীর গানশেখা। তিনি বলেন, এক সময় তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠানে এসব গান হতো। জমে উঠতো অনুষ্ঠান।
তৃপ্তি রেমা জানালেন, সেরেজিং ছাড়াও রেরে, আজিয়াসহ বিভিন্ন গান হতো সমানতালে। এখন দিন দিন কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের সম্প্রদায়েরলোক সংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেরেজিং। যা ইতিহাস ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে অবিচ্ছেদ্য। বিভিন্ন গানের মধ্যে এ গানটি অনেকটাই জনপ্রিয়। এ গানের প্রকৃতি প্রেম ভালোবাসাফোটে উঠে। তাদের নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ও উৎসব পূজা পার্বনে এ পরিবেশন হয়ে থাকে। থানার বাইদ গ্রামের বিজয় মৃ বলেন, সেরেজিং গানগুলোতে সাধারণত এক ধরনের বিশেষ সুর ও তাল থাকে, যা গারোলোকসংগীতের বৈশিষ্ট্য বহন করে। গানগুলি গারো ভাষায় গাওয়া হয়।
, যা গারো সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গানগুলিতে প্রকৃতি, প্রেম, জীবন, গারোদের ঐতিহ্য ও সামাজিক রীতিনীতি, এমনকি ঐতিহাসিক ঘটনাও প্রতিফলিত হয়ে থাকে।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক বলেন, এটা পালাগানের মতো। যুবক যুবতিরা দলগত ভাবে এ গান গাইত। বাংলা হিন্দি গানের প্রভাবে এ গান গানের চর্চা কমে যাচ্ছে। গানলেখা ও চর্চার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য সরকারিবেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা হলে ভালো হবে বলে তিনি মনে করেন।
নেত্রকোনা বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক পরাগ রিছিল বলেন, এক সময় বিভিন্ন গ্রামেসেরেজিং গানের দল ছিল। এখন দুই একটা দল রয়েছে কলমাকান্দায় এলাকায়। এ গান অনেক উচ্চ ক্ল্যাসিক ধরনের। এ গানের শিল্পীরা সাধারণত দিন মজুর খেটে খাওয়া লোক। কর্মের সন্ধানে তাদের দিন কাটে। এ জন্য শিল্পী সংখ্যা কমে যাচ্ছে।