১৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় চোরের অপবাদে গ্রেপ্তারকৃত দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিবার।
গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সাটুরিয়া প্রেসক্লাবের কার্যালয়ে লিখিত সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থী আকাশের পিতা বিল্লাল হোসেন। এ সময় শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেনের পরিবার ও উপস্থিত ছিলেন।
জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী দুই স্কুল শিক্ষার্থীর একজনের বয়স ১২ বছর ১ মাস ১ দিন এবং অন্যজনের ১৬ বছর ১১ মাস ২২ দিন। বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের আগ সাভার গ্রামে।
জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী একজনের জন্মতারিখ ২৬ মে ২০১৩ এবং অন্যজনের ৫ আগস্ট ২০০৮।
এর মধ্যে ২৬ মে ২০১৩ সালে জন্ম নেওয়া শিশুটি বালিয়াটি দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অন্যজন আব্দুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে বিল্লাল হোসেন বলেন, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের সাভার এলাকার শফিকুল ইসলাম, উজ্জল মিয়া, মান্নান উদ্দিন, জীবন আহমেদ জয়, নুরুল ইসলাম , মামুন, মাহবুব ওরফে নজরুল ইসলাম এবং মিলনসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজন তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। উল্লিখিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় আমাদের পরিবারের নিকট চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৩ জুলাই বালিয়াটি দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্র লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনকে (১২) দাদার বাড়ি সাভার বাজার সেলুনের পাশ থেকে এবং আব্দুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র আকাশকে (১৬) আমার নিজ বাড়ি থেকে ১ নং বিবাদী সফিকুল ইসলাম এর সারের গোডউনের সাটার বন্ধ করে অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করলে দুই স্কুল শিক্ষার্থী মারাত্মক আহত হয়।
বিল্লাল হোসেন আরো বলেন, মান্নান প্লাস দিয়ে আকাশের ডান পায়ে মাংস ছিড়ে ফেলে। পরে অন্যান্য আসামীরা গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে। চাঁদার টাকা না পাওায় সকাল ৮ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত তাদের মারধর করতে থাকে। স্কুল শিক্ষার্থীদের অমানবিক নির্যাতনে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মিথ্যার চোর অপবাদে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের আহত অবস্থায় থানায় পাঠান । থানা পুলিশ তাদের শরীরের বিভিন্ন আঘাত দেখে সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন এবং পরে বয়স বাড়িয়ে মামলা নিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও সাটুরিয়া থানা পুলিশ এখনো চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে করা মামলা নেননি বলে অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থীর পরিবার।
এদিকে মো. আলমগীর হোসেনের পিতা লাল মিয়া অভিযোগ করেছেন চাঁদা না দেয়ার কারনেই শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন মিলে তার ছেলেকে মারধর করে থানায় মিথ্যা মামলা করেছে। এ ব্যাপারে তিনি সাটুরিয়া থানায় গত ২৬ জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে সম্প্রতি লাল মিয়া একটি জমি কেনেন। এই জমির কেনার জন্য শফিকুল ইসলাম,উজ্জল মিয়া, জীবন আহমেদ, মান্নান উদ্দিন, মিলন, মামুন,নজরুল ইসলাম নামের কয়েকজন তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদ না দিলে ওই জমি দখল করে নেবে বলেও হুমকি দেয়। অভিযোগে আরও বলা হয় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত বুধবার তার মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে আলমগীর হোসেনকে মারধর করে। এক পর্যায়ে উজ্জলের মোবাইল ফোন (০১৭১৫৫১০৪০৮) থেকে তার (লাল মিয়া) নাম্বারে (০১৯২৭১০৮১৩৪) ফোন করে চাঁদার টাকা দিতে বলে। তিনি অস্বীকার করলে আমার ছেলে আলমগীরের উপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। অভিযুক্ত আরেক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র আকাশকে দিয়ে আমার ছেলের উপর নির্যাতন করিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করে সেই ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে শফিক গংরা। পরে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে একই গ্রামের অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম ওই দুই শিক্ষার্থীর মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, গত ২৩ জুলাই বুধবার রাতে তাঁর বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি স্মার্টফোন, ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ আরও বেশ কিছু মালপত্র চুরি হয়ে যায়। চুরির মাল ফেরত না দেওয়ায় গত ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া থানায় ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে থানার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী থেকে জানা গেছে, দুই শিশুর বিরুদ্ধে সিঁধেল চুরির অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। দুজনের বয়স ১৮ দেখানো হয়েছে এই বিবরণীতে।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া থানার ওসি মো. শহিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দুই স্কুল শিক্ষার্থীদের আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। বয়স কম হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের গাজীপুর টঙ্গী কিশোর অপরাধ ও সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
১৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় চোরের অপবাদে গ্রেপ্তারকৃত দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিবার।
গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সাটুরিয়া প্রেসক্লাবের কার্যালয়ে লিখিত সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থী আকাশের পিতা বিল্লাল হোসেন। এ সময় শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেনের পরিবার ও উপস্থিত ছিলেন।
জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী দুই স্কুল শিক্ষার্থীর একজনের বয়স ১২ বছর ১ মাস ১ দিন এবং অন্যজনের ১৬ বছর ১১ মাস ২২ দিন। বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের আগ সাভার গ্রামে।
জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী একজনের জন্মতারিখ ২৬ মে ২০১৩ এবং অন্যজনের ৫ আগস্ট ২০০৮।
এর মধ্যে ২৬ মে ২০১৩ সালে জন্ম নেওয়া শিশুটি বালিয়াটি দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অন্যজন আব্দুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে বিল্লাল হোসেন বলেন, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের সাভার এলাকার শফিকুল ইসলাম, উজ্জল মিয়া, মান্নান উদ্দিন, জীবন আহমেদ জয়, নুরুল ইসলাম , মামুন, মাহবুব ওরফে নজরুল ইসলাম এবং মিলনসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজন তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। উল্লিখিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় আমাদের পরিবারের নিকট চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৩ জুলাই বালিয়াটি দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্র লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনকে (১২) দাদার বাড়ি সাভার বাজার সেলুনের পাশ থেকে এবং আব্দুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র আকাশকে (১৬) আমার নিজ বাড়ি থেকে ১ নং বিবাদী সফিকুল ইসলাম এর সারের গোডউনের সাটার বন্ধ করে অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করলে দুই স্কুল শিক্ষার্থী মারাত্মক আহত হয়।
বিল্লাল হোসেন আরো বলেন, মান্নান প্লাস দিয়ে আকাশের ডান পায়ে মাংস ছিড়ে ফেলে। পরে অন্যান্য আসামীরা গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে। চাঁদার টাকা না পাওায় সকাল ৮ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত তাদের মারধর করতে থাকে। স্কুল শিক্ষার্থীদের অমানবিক নির্যাতনে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মিথ্যার চোর অপবাদে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের আহত অবস্থায় থানায় পাঠান । থানা পুলিশ তাদের শরীরের বিভিন্ন আঘাত দেখে সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন এবং পরে বয়স বাড়িয়ে মামলা নিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও সাটুরিয়া থানা পুলিশ এখনো চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে করা মামলা নেননি বলে অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থীর পরিবার।
এদিকে মো. আলমগীর হোসেনের পিতা লাল মিয়া অভিযোগ করেছেন চাঁদা না দেয়ার কারনেই শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন মিলে তার ছেলেকে মারধর করে থানায় মিথ্যা মামলা করেছে। এ ব্যাপারে তিনি সাটুরিয়া থানায় গত ২৬ জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে সম্প্রতি লাল মিয়া একটি জমি কেনেন। এই জমির কেনার জন্য শফিকুল ইসলাম,উজ্জল মিয়া, জীবন আহমেদ, মান্নান উদ্দিন, মিলন, মামুন,নজরুল ইসলাম নামের কয়েকজন তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদ না দিলে ওই জমি দখল করে নেবে বলেও হুমকি দেয়। অভিযোগে আরও বলা হয় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত বুধবার তার মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে আলমগীর হোসেনকে মারধর করে। এক পর্যায়ে উজ্জলের মোবাইল ফোন (০১৭১৫৫১০৪০৮) থেকে তার (লাল মিয়া) নাম্বারে (০১৯২৭১০৮১৩৪) ফোন করে চাঁদার টাকা দিতে বলে। তিনি অস্বীকার করলে আমার ছেলে আলমগীরের উপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। অভিযুক্ত আরেক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র আকাশকে দিয়ে আমার ছেলের উপর নির্যাতন করিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করে সেই ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে শফিক গংরা। পরে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে একই গ্রামের অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম ওই দুই শিক্ষার্থীর মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, গত ২৩ জুলাই বুধবার রাতে তাঁর বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি স্মার্টফোন, ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ আরও বেশ কিছু মালপত্র চুরি হয়ে যায়। চুরির মাল ফেরত না দেওয়ায় গত ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া থানায় ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে থানার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী থেকে জানা গেছে, দুই শিশুর বিরুদ্ধে সিঁধেল চুরির অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। দুজনের বয়স ১৮ দেখানো হয়েছে এই বিবরণীতে।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া থানার ওসি মো. শহিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দুই স্কুল শিক্ষার্থীদের আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। বয়স কম হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের গাজীপুর টঙ্গী কিশোর অপরাধ ও সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।