হবিগঞ্জ : পলিমাটিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে কুশিয়ারা নদী -সংবাদ
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের মরা কুশিয়ারা নদীর (বড় একুয়া গ্রুপ) জলমহালটি পলিমাটি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে মৎস্যজীবি ও এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবিরা ওই জল মহালটি সংস্কার বা খননের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও কার্যকরি প্রদক্ষেপ না নেয়ায় চলতি মওসুমে সেখান থেকে কাক্সিক্ষত উৎপাদন হবে না। এতে মৎস্যজীবিদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বলদীবাদে ও বানিয়াচং উপজেলার সাতাল উত্তর মৌজার মরা কুশিয়ারা নদীর (বড় একুয়া গ্রুপ) জলমহালটি দীর্ঘদিন ধরে আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমিতি লীজ নিয়ে মাছ উৎপাদন করে আসছেন। ওই জল মহালের উৎপাদিত মাছ দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু ২০১৮ সালের দিকে জলমহালটি প্রাকৃতিক ভাবে পলিমাটি পড়ে বরাট হয়ে যায়। এতে যেমন মৎস্যজীবিরা সেখানে মাছ উৎপাদন করতে পাচ্ছে না। তেমনি ভরাট হওয়ার কারণে সেখানে মাছ চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নষ্ট হয়, যার ফলে মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং মৎস্যজীবীদের আয় কমে যায়। এছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে জলমহাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা থেকে বিচ্যুত হতে বাধ্য হচ্ছেন। জলমহালটিতে বর্ষা মওসুমে যেমন প্রাকৃতিক মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। সেখানে মৎস্যজীবিরা মাছ চাষ করতে পারছেন না।
পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ উৎপাদন না হওয়ায় ফলে আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: শতাধিক সদস্যদের পরিবার পরির্জন নিয়ে জীবিকা নির্বাহে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: এর সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ২০১৯ সালে জল মহালটি খনন করার জন্য জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখায় লিখিত আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর এ বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২ বছর পর ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ০৫.৪৬.৩৬০২.০০০.৩৩.০০৮.২১-৩২৪নং স্মারকে জলমহালটি খননের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু অদ্যবর্তী পর্যন্ত জলমহালটি খনন করার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জলমহাল খনন না করায় ইজারাদার আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: সদস্যসহ স্থানীয় মৎস্যজীবি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তেমনি সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বোরো মওসুমে কৃষদের সেচ ব্যবস্থাপনায় ব্যাঘাত ঘটছে। এ অবস্থায় নদীটি সংস্কার করা জরুরী বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আড়িয়া মুগুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: সভাপতি জয় চন্দ্র দাস জানান, জলমহালটি ভরাটের কারণে আমরা মৎস্য আহরণ করতে পাচ্ছি না।
মৎস্যজীবিরা নিরুপায় হয়ে জলমহালিট খনন করার কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করছি। সর্বশেষ ২০২৫ সালের শুরুতে আরেকটি আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় মৎস্যজীবিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জলমহালটি খনন করলে আমরা মাছ উৎপাদনে যেমন লাভবান হতাম, তেমিন সরকারও সেখান থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব পেতেন।
অবিলম্বে জলমহালটি খননের দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে আড়িয়ামুগর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি মেম্বার মিষ্ট লাল দাস জানান, জলমহালটি দ্রুত খনন প্রয়োজন। খনন করা হলে এখান থেকে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এতে মৎস্যজীবি ও এলাকার কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সরকারও লাভবান হবেন।
হবিগঞ্জ : পলিমাটিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে কুশিয়ারা নদী -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের মরা কুশিয়ারা নদীর (বড় একুয়া গ্রুপ) জলমহালটি পলিমাটি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে মৎস্যজীবি ও এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবিরা ওই জল মহালটি সংস্কার বা খননের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও কার্যকরি প্রদক্ষেপ না নেয়ায় চলতি মওসুমে সেখান থেকে কাক্সিক্ষত উৎপাদন হবে না। এতে মৎস্যজীবিদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বলদীবাদে ও বানিয়াচং উপজেলার সাতাল উত্তর মৌজার মরা কুশিয়ারা নদীর (বড় একুয়া গ্রুপ) জলমহালটি দীর্ঘদিন ধরে আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমিতি লীজ নিয়ে মাছ উৎপাদন করে আসছেন। ওই জল মহালের উৎপাদিত মাছ দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু ২০১৮ সালের দিকে জলমহালটি প্রাকৃতিক ভাবে পলিমাটি পড়ে বরাট হয়ে যায়। এতে যেমন মৎস্যজীবিরা সেখানে মাছ উৎপাদন করতে পাচ্ছে না। তেমনি ভরাট হওয়ার কারণে সেখানে মাছ চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নষ্ট হয়, যার ফলে মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং মৎস্যজীবীদের আয় কমে যায়। এছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে জলমহাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা থেকে বিচ্যুত হতে বাধ্য হচ্ছেন। জলমহালটিতে বর্ষা মওসুমে যেমন প্রাকৃতিক মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। সেখানে মৎস্যজীবিরা মাছ চাষ করতে পারছেন না।
পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ উৎপাদন না হওয়ায় ফলে আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: শতাধিক সদস্যদের পরিবার পরির্জন নিয়ে জীবিকা নির্বাহে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: এর সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ২০১৯ সালে জল মহালটি খনন করার জন্য জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখায় লিখিত আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর এ বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২ বছর পর ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ০৫.৪৬.৩৬০২.০০০.৩৩.০০৮.২১-৩২৪নং স্মারকে জলমহালটি খননের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু অদ্যবর্তী পর্যন্ত জলমহালটি খনন করার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জলমহাল খনন না করায় ইজারাদার আড়িয়ামুগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: সদস্যসহ স্থানীয় মৎস্যজীবি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তেমনি সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বোরো মওসুমে কৃষদের সেচ ব্যবস্থাপনায় ব্যাঘাত ঘটছে। এ অবস্থায় নদীটি সংস্কার করা জরুরী বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আড়িয়া মুগুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: সভাপতি জয় চন্দ্র দাস জানান, জলমহালটি ভরাটের কারণে আমরা মৎস্য আহরণ করতে পাচ্ছি না।
মৎস্যজীবিরা নিরুপায় হয়ে জলমহালিট খনন করার কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করছি। সর্বশেষ ২০২৫ সালের শুরুতে আরেকটি আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় মৎস্যজীবিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জলমহালটি খনন করলে আমরা মাছ উৎপাদনে যেমন লাভবান হতাম, তেমিন সরকারও সেখান থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব পেতেন।
অবিলম্বে জলমহালটি খননের দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে আড়িয়ামুগর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি মেম্বার মিষ্ট লাল দাস জানান, জলমহালটি দ্রুত খনন প্রয়োজন। খনন করা হলে এখান থেকে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এতে মৎস্যজীবি ও এলাকার কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সরকারও লাভবান হবেন।