ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ মেড্ডা এলাকা থেকে কুমারশীল মোড় পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তা। আর সে পাড়ি দিতে এখন সময় লাগে এক ঘণ্টারও বেশি। সকাল হোক বা দুপুর বা রাত সারাদিনই এই অবস্থা। সেটা সপ্তাহের যেদিনই হোক।
এই শহরের সড়কজুড়ে থাকে ভারী ট্রাক, পণ্যবাহী লরি ও সিএনজিচালিত অবৈধ অটোরিকশার দীর্ঘ সারি। এটা প্রতিদিনের চিত্র। যানজট এখন এই শহরের নিত্যদিনের যন্ত্রণা।
কেন এই যানজট?
নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই সড়কে ভারী যান চলাচল নিষেধ। কিন্তু প্রতিদিনই সেই নিষেধাজ্ঞা ভেঙে নির্বিঘ্নে চলছে এসব যানবাহন। এ পথে ট্রাফিক পুলিশের অন্তত তিনটি চেকপোস্ট থাকলেও কোনো বাধা ছাড়াই ট্রাক প্রবেশ করছে শহরে।
এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন শত শত রোগী শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাতায়াত করেন। অনেক সময় জরুরি অ্যাম্বুলেন্সও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে যানজটে।
মানুষ কি বলছে?
সদর হাসপাতালের সামনে কথা হলো রুবিনা আক্তারের সঙ্গে। আমার বাবাকে জরুরি ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সংবাদকে বলেন, “মেড্ডা থেকে হাসপাতালে আসতে অ্যাম্বুলেন্সে ৫০ মিনিট লেগেছে। এমন হলে তো রোগী ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। কে নেবে এর দায়িত্ব?”
প্রতিদিন একই সড়ক ব্যবহার করে স্কুল-কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী। সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিমা হক বলেন,
“পরীক্ষার দিনেও একই অবস্থা। আধা কিলোমিটার যেতে ৪০–৫০ মিনিট লেগে যায়।”
মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা রমজান মিয়াও ক্ষোভ ঝাড়লেন, “তিনটা চেকপোস্ট পার হয়ে ট্রাক শহরে ঢোকে—এটা কি সম্ভব? পুলিশ জানে না? তারা চাইলে আটকাতে পারে, কিন্তু নিজেরাই ম্যানেজ হয়ে যায়।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন,
“শহরে ঢুকতে বা বের হতে ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। ব্যবসা সব নষ্ট হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শুধু কাগজে থাকলে হবে না, বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে।”
চালক দিলেন ‘গোপন’ তথ্য
ট্রাফিক পুলিশ দাবি করছে, তারা নিয়মিত মামলা করছে। কিন্তু চালকদের দাবি ভিন্ন।
সিএনজি-অটো চালক মনির মিয়া বললেন, “যাদের সাথে ট্রাফিকের ‘লাইন’ আছে, তাদের মামলাই দেয় না। আর বড় গাড়ির সাথে আছে ‘বড় লাইন’। মামলা দেয় কিছু গাড়িকে— আমরা রোগী নিয়ে গেলেও আমাদের মামলা দেয় কারণ আমাদের ’লাইন’ নাই ।”
তথ্য দিতে তাল বাহানা
জুলাই মাসে কতটি ভারী যান আটক, মামলা ও খালাস হয়েছে—সে বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে সংবাদের প্রতিবেদক ট্রাফিক পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন জমা দেন। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হলেও তারা কোনো তথ্য দেয়নি।
ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা মীর আনোয়ার জানান, পুলিশ সুপারের কাছে তথ্য চাইতে হবে। তবে ১৫ দিন অপেক্ষার পরও পুলিশ সুপারের কাছ থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ ‘হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্যের’
ট্রাফিক সার্জেন্ট ধীমান শীলের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী রিকশা চালক ও সাধারণ সিএনজি চালকদের হয়রানি ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে ধীমান শীল বলেন তিনি নিয়মের মধ্যেই দায়িত্ব পালন।করছেন। আর ওই রিকশা চালক যে প্রতিবন্ধী তা তাকে তিনি বলেন নি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মীর আনোয়ারের বক্তব্য, “সিএনজি চালকরা ধীমানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।”
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ মেড্ডা এলাকা থেকে কুমারশীল মোড় পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তা। আর সে পাড়ি দিতে এখন সময় লাগে এক ঘণ্টারও বেশি। সকাল হোক বা দুপুর বা রাত সারাদিনই এই অবস্থা। সেটা সপ্তাহের যেদিনই হোক।
এই শহরের সড়কজুড়ে থাকে ভারী ট্রাক, পণ্যবাহী লরি ও সিএনজিচালিত অবৈধ অটোরিকশার দীর্ঘ সারি। এটা প্রতিদিনের চিত্র। যানজট এখন এই শহরের নিত্যদিনের যন্ত্রণা।
কেন এই যানজট?
নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই সড়কে ভারী যান চলাচল নিষেধ। কিন্তু প্রতিদিনই সেই নিষেধাজ্ঞা ভেঙে নির্বিঘ্নে চলছে এসব যানবাহন। এ পথে ট্রাফিক পুলিশের অন্তত তিনটি চেকপোস্ট থাকলেও কোনো বাধা ছাড়াই ট্রাক প্রবেশ করছে শহরে।
এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন শত শত রোগী শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাতায়াত করেন। অনেক সময় জরুরি অ্যাম্বুলেন্সও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে যানজটে।
মানুষ কি বলছে?
সদর হাসপাতালের সামনে কথা হলো রুবিনা আক্তারের সঙ্গে। আমার বাবাকে জরুরি ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সংবাদকে বলেন, “মেড্ডা থেকে হাসপাতালে আসতে অ্যাম্বুলেন্সে ৫০ মিনিট লেগেছে। এমন হলে তো রোগী ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। কে নেবে এর দায়িত্ব?”
প্রতিদিন একই সড়ক ব্যবহার করে স্কুল-কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী। সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিমা হক বলেন,
“পরীক্ষার দিনেও একই অবস্থা। আধা কিলোমিটার যেতে ৪০–৫০ মিনিট লেগে যায়।”
মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা রমজান মিয়াও ক্ষোভ ঝাড়লেন, “তিনটা চেকপোস্ট পার হয়ে ট্রাক শহরে ঢোকে—এটা কি সম্ভব? পুলিশ জানে না? তারা চাইলে আটকাতে পারে, কিন্তু নিজেরাই ম্যানেজ হয়ে যায়।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন,
“শহরে ঢুকতে বা বের হতে ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। ব্যবসা সব নষ্ট হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শুধু কাগজে থাকলে হবে না, বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে।”
চালক দিলেন ‘গোপন’ তথ্য
ট্রাফিক পুলিশ দাবি করছে, তারা নিয়মিত মামলা করছে। কিন্তু চালকদের দাবি ভিন্ন।
সিএনজি-অটো চালক মনির মিয়া বললেন, “যাদের সাথে ট্রাফিকের ‘লাইন’ আছে, তাদের মামলাই দেয় না। আর বড় গাড়ির সাথে আছে ‘বড় লাইন’। মামলা দেয় কিছু গাড়িকে— আমরা রোগী নিয়ে গেলেও আমাদের মামলা দেয় কারণ আমাদের ’লাইন’ নাই ।”
তথ্য দিতে তাল বাহানা
জুলাই মাসে কতটি ভারী যান আটক, মামলা ও খালাস হয়েছে—সে বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে সংবাদের প্রতিবেদক ট্রাফিক পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন জমা দেন। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হলেও তারা কোনো তথ্য দেয়নি।
ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা মীর আনোয়ার জানান, পুলিশ সুপারের কাছে তথ্য চাইতে হবে। তবে ১৫ দিন অপেক্ষার পরও পুলিশ সুপারের কাছ থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ ‘হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্যের’
ট্রাফিক সার্জেন্ট ধীমান শীলের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী রিকশা চালক ও সাধারণ সিএনজি চালকদের হয়রানি ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে ধীমান শীল বলেন তিনি নিয়মের মধ্যেই দায়িত্ব পালন।করছেন। আর ওই রিকশা চালক যে প্রতিবন্ধী তা তাকে তিনি বলেন নি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মীর আনোয়ারের বক্তব্য, “সিএনজি চালকরা ধীমানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।”