ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২ গ্রামের ফসলি জমি উজানের ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি মাসের শুরু থেকে জমিগুলো জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। পানির কারণে অধিকাংশ ধানের চারা পচে গেছে। এতে স্থানীয় কয়েকশ কৃষক পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বিশালপুর ইউনিয়নের ৩০০ একর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে কৃষকের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির আশঙ্কা করছে না তারা। তবে ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রায় ১ হাজার ২০০ একর রোপা আমন ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ধান চাষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জানা যায়, বিশালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠগুলোতে থইথই করছে পানি। তলিয়ে আছে রোপা আমনের চারা। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এই ইউনিয়নের পাঁচদেউলী, কচুয়াপাড়া, সাতবাড়িয়া, ঘোলঘরিয়া, মুকুন্দপুর, সিংড়াপাড়া, শাহনগর, সগুনিয়া, বেওড়াপাড়া, চাটাইল, সিরাজনগর, হাঁসাগাড়ি, দোয়ালসারা, দুবলাইসহ অন্তত ২০টি গ্রামের কৃষকের জমি তলিয়ে গেছে। এর পরিমাণ কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ একর। এসব এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে রোপা আমনের চারা লাগানো হয়েছিল। এতে তারা একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অন্যদিকে নতুন লাগানোর চারার সংকটের আশঙ্কা করছেন।
সিংড়াপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, এই এলাকার পানি সিমলা, নাওডারা, রানীর জাঙ্গাল, ভাদাই ও খাড়ি খালের এবং ভদ্রাবতী নদীর মাধ্যমে চলন বিলে চলে যায়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে এগুলোর নাব্যতা কমে গেছে এবং অনেক অঞ্চলে দখল হয়ে গেছে। এ জন্য পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। আবার অপরিকল্পিতভাবে খালগুলোর ওপর বিএডিসির অর্থায়নে বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুগুলো প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ও নিচু। ফলে পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। সগুনিয়া এলাকায় ভদ্রাবতী নদীর ওপর নির্মিত স্লুইসগেট সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বগুড়া ও নাটোর জেলাকে বিভক্ত করেছে এই ভদ্রাবতী নদী। এক দশক আগে নদীর দুই দিকে সংকুচিত করে সগুনিয়া স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। তখন থেকেই জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে। সগুনিয়া গ্রামের মঞ্জুরুল আলম বলেন, এই স্লুইসগেটের কারণে পানি চলন বিলে যেতে পারে না।
গত বছর স্থানীয় চেয়ারম্যান সবগুলো গেট খুলে ফেলেছেন। তাতেও সমস্যা সমাধান হয়নি। এবারে আমার আবাদি জমি ও বসত বাড়ি তলিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, রোপা আমনে জন্য এখনও ২০ দিন সময় আছে। আশা করি, কৃষকেরা নতুন করে চারা উৎপাদন করতে পারবেন। এতে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে না।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশিক খান জানান, অবৈধ দখলদার ও যাদের কারণে খাল সংকুচিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত খালে নাব্যতা বৃদ্ধি ও পানি নিষ্কাশনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, যাতে কৃষকদের ক্ষতি রোধ করা যায়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২ গ্রামের ফসলি জমি উজানের ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি মাসের শুরু থেকে জমিগুলো জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। পানির কারণে অধিকাংশ ধানের চারা পচে গেছে। এতে স্থানীয় কয়েকশ কৃষক পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বিশালপুর ইউনিয়নের ৩০০ একর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে কৃষকের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির আশঙ্কা করছে না তারা। তবে ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রায় ১ হাজার ২০০ একর রোপা আমন ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ধান চাষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জানা যায়, বিশালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠগুলোতে থইথই করছে পানি। তলিয়ে আছে রোপা আমনের চারা। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এই ইউনিয়নের পাঁচদেউলী, কচুয়াপাড়া, সাতবাড়িয়া, ঘোলঘরিয়া, মুকুন্দপুর, সিংড়াপাড়া, শাহনগর, সগুনিয়া, বেওড়াপাড়া, চাটাইল, সিরাজনগর, হাঁসাগাড়ি, দোয়ালসারা, দুবলাইসহ অন্তত ২০টি গ্রামের কৃষকের জমি তলিয়ে গেছে। এর পরিমাণ কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ একর। এসব এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে রোপা আমনের চারা লাগানো হয়েছিল। এতে তারা একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অন্যদিকে নতুন লাগানোর চারার সংকটের আশঙ্কা করছেন।
সিংড়াপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, এই এলাকার পানি সিমলা, নাওডারা, রানীর জাঙ্গাল, ভাদাই ও খাড়ি খালের এবং ভদ্রাবতী নদীর মাধ্যমে চলন বিলে চলে যায়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে এগুলোর নাব্যতা কমে গেছে এবং অনেক অঞ্চলে দখল হয়ে গেছে। এ জন্য পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। আবার অপরিকল্পিতভাবে খালগুলোর ওপর বিএডিসির অর্থায়নে বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুগুলো প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ও নিচু। ফলে পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। সগুনিয়া এলাকায় ভদ্রাবতী নদীর ওপর নির্মিত স্লুইসগেট সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বগুড়া ও নাটোর জেলাকে বিভক্ত করেছে এই ভদ্রাবতী নদী। এক দশক আগে নদীর দুই দিকে সংকুচিত করে সগুনিয়া স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। তখন থেকেই জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে। সগুনিয়া গ্রামের মঞ্জুরুল আলম বলেন, এই স্লুইসগেটের কারণে পানি চলন বিলে যেতে পারে না।
গত বছর স্থানীয় চেয়ারম্যান সবগুলো গেট খুলে ফেলেছেন। তাতেও সমস্যা সমাধান হয়নি। এবারে আমার আবাদি জমি ও বসত বাড়ি তলিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, রোপা আমনে জন্য এখনও ২০ দিন সময় আছে। আশা করি, কৃষকেরা নতুন করে চারা উৎপাদন করতে পারবেন। এতে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে না।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশিক খান জানান, অবৈধ দখলদার ও যাদের কারণে খাল সংকুচিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত খালে নাব্যতা বৃদ্ধি ও পানি নিষ্কাশনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, যাতে কৃষকদের ক্ষতি রোধ করা যায়।