সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি জাতীয় সংসদে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা জাতীয় সংসদে মোট আসন সংখ্যা ৪৫০-এ উন্নিত করে , সেখানে ১৫০ আসন নারীদের জন্য রাখার কথা বলেছে। এই ব্যবস্থা সংসদের ২ বা ৩ মেয়াদের জন্য বলবৎ রাখার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার,(১৩ আগস্ট ২০২৫) সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। বিবৃতিতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তকে ‘পশ্চাৎপদ’ হিসেবে উল্লেখ করে তা ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছে ‘সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি’। রাজনৈতিক দলগুলো এরকম একটি ‘পশ্চাৎপদ’ সিদ্ধান্তে কীভাবে একমত হলো, সে বিষয়েও সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি ‘গভীর বিস্ময়’ প্রকাশ করেছে।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে নারী সমাজের দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও দাবিটিকে ‘গুরুত্ব’ দেয়া হয়নি। ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের এই প্ল্যাটফরম গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদে মনোনয়নের মাধ্যমে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত নারীদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি তা ‘তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে’।”
বিবৃতিতে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি সব রাজনৈতিক দলকে মনোনয়নের মাধ্যমে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়।
গত ৩১ জুলাই রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক ১৯টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছার কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, যেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন দলের কাছ থেকে ১০টিতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ এসেছে। এর মধ্যে নারীদের আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নোট অব ডিসেন্ট আসার কথা বলেছিলেন আলী রীয়াজ।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সরাসরি ভোট চেয়েছে। তবে জামায়াতেসহ ইসলামী দলগুলো সংখ্যানুপাতিক হারে ১০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিসহ সমমনারা বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব দেয়।
এমন প্রেক্ষাপটে গত ১৪ জুলাই সংশোধিত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, কোনো দল ২৫টির বেশি আসনে মনোনয়ন দিলে সেখানে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। তবে ওইদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। গত ২৭ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন, যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে। এরপর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তাব দেয় দলটি।
এ অবস্থায় গত ৩০ জুলাই বৈঠকে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল আগামী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে।
রাজনৈতিক দলগুলো এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে সংসদে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০-তে উন্নীত করবে। পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নারীদেরকে মনোনয়ন দেবে যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে সমান অধিকার, সম-মর্যাদা, দায়িত্বের সঙ্গে ফলপ্রসূ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে বাংলাদেশের নারীরা এখন প্রস্তুত রয়েছে। তারা নারী ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে নারীর স্বার্থে দৃশ্যমান প্রভাব রাখতেও সক্ষম। সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এলে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও শক্তিশালী হবে যা নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে আরও বিস্তৃত ও অর্থবহ করে তুলবে।’
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি জাতীয় সংসদে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা জাতীয় সংসদে মোট আসন সংখ্যা ৪৫০-এ উন্নিত করে , সেখানে ১৫০ আসন নারীদের জন্য রাখার কথা বলেছে। এই ব্যবস্থা সংসদের ২ বা ৩ মেয়াদের জন্য বলবৎ রাখার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার,(১৩ আগস্ট ২০২৫) সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। বিবৃতিতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তকে ‘পশ্চাৎপদ’ হিসেবে উল্লেখ করে তা ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছে ‘সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি’। রাজনৈতিক দলগুলো এরকম একটি ‘পশ্চাৎপদ’ সিদ্ধান্তে কীভাবে একমত হলো, সে বিষয়েও সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি ‘গভীর বিস্ময়’ প্রকাশ করেছে।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে নারী সমাজের দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও দাবিটিকে ‘গুরুত্ব’ দেয়া হয়নি। ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের এই প্ল্যাটফরম গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদে মনোনয়নের মাধ্যমে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত নারীদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি তা ‘তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে’।”
বিবৃতিতে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি সব রাজনৈতিক দলকে মনোনয়নের মাধ্যমে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়।
গত ৩১ জুলাই রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক ১৯টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছার কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, যেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন দলের কাছ থেকে ১০টিতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ এসেছে। এর মধ্যে নারীদের আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নোট অব ডিসেন্ট আসার কথা বলেছিলেন আলী রীয়াজ।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সরাসরি ভোট চেয়েছে। তবে জামায়াতেসহ ইসলামী দলগুলো সংখ্যানুপাতিক হারে ১০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিসহ সমমনারা বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব দেয়।
এমন প্রেক্ষাপটে গত ১৪ জুলাই সংশোধিত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, কোনো দল ২৫টির বেশি আসনে মনোনয়ন দিলে সেখানে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। তবে ওইদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। গত ২৭ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন, যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে। এরপর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তাব দেয় দলটি।
এ অবস্থায় গত ৩০ জুলাই বৈঠকে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল আগামী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে।
রাজনৈতিক দলগুলো এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে সংসদে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০-তে উন্নীত করবে। পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নারীদেরকে মনোনয়ন দেবে যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে সমান অধিকার, সম-মর্যাদা, দায়িত্বের সঙ্গে ফলপ্রসূ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে বাংলাদেশের নারীরা এখন প্রস্তুত রয়েছে। তারা নারী ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে নারীর স্বার্থে দৃশ্যমান প্রভাব রাখতেও সক্ষম। সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এলে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও শক্তিশালী হবে যা নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে আরও বিস্তৃত ও অর্থবহ করে তুলবে।’