ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির তিন নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘জাতীয় বেইমান’ আখ্যায়িত করে রংপুরে তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
সেই সঙ্গে ওই তিন নেতাকে রংপুরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে তারা।
দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ সব নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবিতে বুধবার,(১৩ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে রংপুর মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি।
বুধবার বিকেলে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে দলের কো-চেয়ারম্যান সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে একটি বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
মিছিলকারীরা জাপা থেকে ‘বহিষ্কৃত’ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুর ছবি দিয়ে কুশপুত্তলিকা বানিয়ে জুতা স্যান্ডেল লাগিয়ে সেই কুশপুত্তলিকা বহন করে নগরীর পায়রা চত্বরে নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তাদের কুশপুত্তলিকা পদদলিত করে ‘বেইমান’ আখ্যায়িত করে।
মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফিরে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন জাপার কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র এবং মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা জাপার আহ্বায়ক আজমল হোসেরন লেবু ও জাপা নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্য নেতারা।
সমাবেশে সাবেক সিটি মেয়র মোস্তফা অভিযোগ করেছেন ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে চরমভাবে ব্যর্থ। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। মববাজি, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি চলছে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সারাদেশে মব ভায়োলেন্সের নামে হত্যা গুম, চাঁদাবাজি সন্ত্রাসের মহোৎসব চলছে।
‘কয়েকদিন আগে রংপুরের তারাগঞ্জে দলিত সম্প্রদায়ের দুজনকে চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নগরীর বুড়িরহাটে ১২ বছরের শিশুকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে দিন-দুপুরে মানুষকে খুন করা হলেও কোনো
বিচার হচ্ছে না। দেশে মবতন্ত্র চললেও সরকার তা প্রতিরোধে ব্যর্থ।
তিনি বলেন, আমি বাড়ি নিরাপদে ফিরে যাব তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারোরই জীবনের নিরাপত্তা নেই আমরা আয়েমে জাহিলার যুগে পর্দাপণ করছি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আগামী বছরের ফ্রেরুযারিতে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে বিদেশেও তাই বলেছে। অথচ এনসিপির নেতা নাসির বলছেন নির্বাচন হবে না। এনসিপির এতবড় স্পর্ধা হয় কীভাবে? তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী মনে হয়?
মোস্তফা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার যে অবস্থা তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদি সেনাবাহিনী পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে কয়েক দফায় নির্বাচন করে তাহলেই নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদেরে চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে একটি খুনসহ ১৮টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। একইভাবে সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের নামে শত শত গায়েবি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। দেশের এক কোটি মানুষকে ওসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ফলে পুলিশও তদন্ত করে কুলকিনারা পাচ্ছে না। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
সেই সঙ্গে দলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতাকারী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল অমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে বেইমান আখ্যায়িত করে তাদের রংপুর বিভাগে অবাঞ্চিত ঘোষণা দিয়ে বলেন, এদের রংপুর বিভাগের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে তাদের ধরে এনে দিগম্বর করে যা করার তাই করা হবে। কারণ এরা জাতীয় বেইমান। এরা শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে নির্বাচন করেছে এরা এখন জাতীয় পার্টিকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
গত ৯ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় জিএম কাদেরবিরোধী নেতারা জাতীয় পার্টির (জাপা) দশম জাতীয় কাউন্সিলে করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচিত করে। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের ‘স্বীকৃতি’ চায় আনিসুল ও রুহুল আমিনের জাতীয় পার্টি; প্রত্যাহার জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে করা মামলা
জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিলে পরবর্তী নবনির্বাচিত নেতৃত্বের তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবের বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার এর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দেয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৯ আগস্ট গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সারাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার কাউন্সিলরের অংশগ্রহণে চারজনকে কণ্ঠভোটে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শীর্ষ পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। শিগগিরই কমিশনে হালনাগাদ তথ্য দেয়া হবে।’
তাদের এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলেন, ‘এখন পযন্ত ইসিতে জি এম কাদেরের দল নিবন্ধিত ও প্রতীক লাঙ্গল। এ নিয়ে অন্য কারও কাউন্সিল আমলে নেয়ার কথা নয়। তবু যেকোনো ধরনের আবেদন এলে ইসির কাছে উপস্থাপন করা হয়, কমিশন বিষয়টি আলোচনা করে নিষ্পত্তি করবে।’
এদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ষষ্ঠ যুগ্ম জেলা জজ রোবায়েত ফেরদৌস এই আদেশ দেয়। বাদী মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।
আদালতে মামলা প্রত্যাহারের পর জি এম কাদেরবিরোধী নেতারা বলেন, আদালতের এই পর্যবেক্ষণের ফলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা আইনিভাবে বৈধ নয়।
জাতীয় পার্টিতে কিছুদিন যাবৎ জি এম কাদের ও আনিসুল-রুহুল আমিনদের মধ্যে অর্ন্তদ্বন্দ্ব চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুলাই তখনকার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন জি এম কাদের। পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা আদালতের দ্বারস্থ হলে গত ৩১ জুলাই জি এম কাদের ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর তাকে বাদ দিয়েই গত শনিবার জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করেন বিদ্রোহী অংশ বলে পরিচিত আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার।
এর পরদিনই নবনির্বাচিত কমিটির চারজনের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন তারা। তালিকার অন্য দুজন হলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু।
বিদ্রোহী অংশের এ কউন্সিলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান ও রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচন করা হয়।
আনিসুল ইসলাম-রুহুল আমিনরা নিজেদের এ কমিটিকে জাতীয় পার্টির ‘মূল ধারা’ দাবি করে বলেন, ‘ওই কাউন্সিলকে গঠনতান্ত্রিকভাবে ‘বৈধ’, লাঙ্গল প্রতীক ব্যবহারের বৈধ অধিকার কেবল তাদের কমিটিরই রয়েছে।’ তবে চিঠিতে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
তবে জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অংশের কউন্সিলকে অবৈধ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী বলে দাবি করেছেন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় পার্টির তিন নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘জাতীয় বেইমান’ আখ্যায়িত করে রংপুরে তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
সেই সঙ্গে ওই তিন নেতাকে রংপুরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে তারা।
দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ সব নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবিতে বুধবার,(১৩ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে রংপুর মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি।
বুধবার বিকেলে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে দলের কো-চেয়ারম্যান সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে একটি বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
মিছিলকারীরা জাপা থেকে ‘বহিষ্কৃত’ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুর ছবি দিয়ে কুশপুত্তলিকা বানিয়ে জুতা স্যান্ডেল লাগিয়ে সেই কুশপুত্তলিকা বহন করে নগরীর পায়রা চত্বরে নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তাদের কুশপুত্তলিকা পদদলিত করে ‘বেইমান’ আখ্যায়িত করে।
মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফিরে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন জাপার কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র এবং মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা জাপার আহ্বায়ক আজমল হোসেরন লেবু ও জাপা নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্য নেতারা।
সমাবেশে সাবেক সিটি মেয়র মোস্তফা অভিযোগ করেছেন ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে চরমভাবে ব্যর্থ। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। মববাজি, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি চলছে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সারাদেশে মব ভায়োলেন্সের নামে হত্যা গুম, চাঁদাবাজি সন্ত্রাসের মহোৎসব চলছে।
‘কয়েকদিন আগে রংপুরের তারাগঞ্জে দলিত সম্প্রদায়ের দুজনকে চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নগরীর বুড়িরহাটে ১২ বছরের শিশুকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে দিন-দুপুরে মানুষকে খুন করা হলেও কোনো
বিচার হচ্ছে না। দেশে মবতন্ত্র চললেও সরকার তা প্রতিরোধে ব্যর্থ।
তিনি বলেন, আমি বাড়ি নিরাপদে ফিরে যাব তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারোরই জীবনের নিরাপত্তা নেই আমরা আয়েমে জাহিলার যুগে পর্দাপণ করছি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আগামী বছরের ফ্রেরুযারিতে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে বিদেশেও তাই বলেছে। অথচ এনসিপির নেতা নাসির বলছেন নির্বাচন হবে না। এনসিপির এতবড় স্পর্ধা হয় কীভাবে? তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী মনে হয়?
মোস্তফা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার যে অবস্থা তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদি সেনাবাহিনী পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে কয়েক দফায় নির্বাচন করে তাহলেই নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদেরে চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে একটি খুনসহ ১৮টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। একইভাবে সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের নামে শত শত গায়েবি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। দেশের এক কোটি মানুষকে ওসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ফলে পুলিশও তদন্ত করে কুলকিনারা পাচ্ছে না। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
সেই সঙ্গে দলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতাকারী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল অমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে বেইমান আখ্যায়িত করে তাদের রংপুর বিভাগে অবাঞ্চিত ঘোষণা দিয়ে বলেন, এদের রংপুর বিভাগের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে তাদের ধরে এনে দিগম্বর করে যা করার তাই করা হবে। কারণ এরা জাতীয় বেইমান। এরা শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে নির্বাচন করেছে এরা এখন জাতীয় পার্টিকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
গত ৯ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় জিএম কাদেরবিরোধী নেতারা জাতীয় পার্টির (জাপা) দশম জাতীয় কাউন্সিলে করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচিত করে। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের ‘স্বীকৃতি’ চায় আনিসুল ও রুহুল আমিনের জাতীয় পার্টি; প্রত্যাহার জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে করা মামলা
জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিলে পরবর্তী নবনির্বাচিত নেতৃত্বের তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবের বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার এর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দেয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৯ আগস্ট গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সারাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার কাউন্সিলরের অংশগ্রহণে চারজনকে কণ্ঠভোটে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শীর্ষ পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। শিগগিরই কমিশনে হালনাগাদ তথ্য দেয়া হবে।’
তাদের এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলেন, ‘এখন পযন্ত ইসিতে জি এম কাদেরের দল নিবন্ধিত ও প্রতীক লাঙ্গল। এ নিয়ে অন্য কারও কাউন্সিল আমলে নেয়ার কথা নয়। তবু যেকোনো ধরনের আবেদন এলে ইসির কাছে উপস্থাপন করা হয়, কমিশন বিষয়টি আলোচনা করে নিষ্পত্তি করবে।’
এদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ষষ্ঠ যুগ্ম জেলা জজ রোবায়েত ফেরদৌস এই আদেশ দেয়। বাদী মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।
আদালতে মামলা প্রত্যাহারের পর জি এম কাদেরবিরোধী নেতারা বলেন, আদালতের এই পর্যবেক্ষণের ফলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা আইনিভাবে বৈধ নয়।
জাতীয় পার্টিতে কিছুদিন যাবৎ জি এম কাদের ও আনিসুল-রুহুল আমিনদের মধ্যে অর্ন্তদ্বন্দ্ব চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুলাই তখনকার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন জি এম কাদের। পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা আদালতের দ্বারস্থ হলে গত ৩১ জুলাই জি এম কাদের ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর তাকে বাদ দিয়েই গত শনিবার জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করেন বিদ্রোহী অংশ বলে পরিচিত আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার।
এর পরদিনই নবনির্বাচিত কমিটির চারজনের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন তারা। তালিকার অন্য দুজন হলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু।
বিদ্রোহী অংশের এ কউন্সিলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান ও রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচন করা হয়।
আনিসুল ইসলাম-রুহুল আমিনরা নিজেদের এ কমিটিকে জাতীয় পার্টির ‘মূল ধারা’ দাবি করে বলেন, ‘ওই কাউন্সিলকে গঠনতান্ত্রিকভাবে ‘বৈধ’, লাঙ্গল প্রতীক ব্যবহারের বৈধ অধিকার কেবল তাদের কমিটিরই রয়েছে।’ তবে চিঠিতে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
তবে জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অংশের কউন্সিলকে অবৈধ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী বলে দাবি করেছেন।