alt

সারাদেশ

‘ঘুষের’ আখড়া; রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস!

প্রতিনিধি, রাণীনগর (নওগাঁ) : বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫

নওগাঁর রাণীনগরে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ অফিসের উপ-সহকারী (নায়েব) সহ অফিসে কর্মরতদের চাহিদা মতো ঘুষ দিলেই হয় কাজ, না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাগ্রহীতাদের।

অভিযোগ উঠেছে, মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী দুরুল হুদা, প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ। তারা তিনজন মিলেমিশে এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে ঘুষের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ও মিরাট ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস ছিল কাশিমপুরে। ভূমিসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত এলাকা মিরাট ইউনিয়নের জন্য গত প্রায় সাত মাস আগে হামিদপুর বাজার এলাকায় নতুন করে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস করা হয়। ওই ভূমি অফিসের উপ-সহকারী হিসেবে যোগদান করেন দুরুল হুদা। আর প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে- খাজনার অনুমোদন, খাজনার চেক করে দিতে, খারিজের প্রতিবেদন-প্রস্তাব, হোল্ডিং এন্ট্রিসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন দিতে দুই হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার, ২০ হাজার, এমনকি লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন দুরুল হুদা, কুদ্দুস ও সোহাগ। সেবাপ্রত্যাশীরা তাদের চাহিদা মতো ঘুষ দিলে কাজ হয়, না দিলে ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অফিসে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগও। অফিসের স্টাফদের মতে দুইজন দালাল সব সময় থাকেন অফিসে। দালালদের মধ্যস্ততায় সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তারা।

জায়গা-জমির খারিজ (নামজারি) করিয়ে দিতে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা নেয়া হয় ঘুষ। খারিজের জন্য কেউ ঘুষ দিয়েও ঘুরছে দিনের পর দিন। আবার টাকার বিনিময়ে গোপনে দেয়া হয় প্রস্তাবিত খতিয়ান। খারিজ শেষে কেউ হোল্ডিং খুলতে গেলে বা কেউ খাজনা দিতে গেলে সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানি করে। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজ সম্পন্ন করে দেয়।

মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের রায়হান রাফু জানান, আমাদের একটি জমির খারিজের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মিসকেস করেছে। এই মিসকেস থেকে কীভাবে উদ্ধার হওয়া যায় সেজন্য মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবের কাছে যাই। নায়েব দুরুল হুদা ও তার সঙ্গে থাকা একজন দালাল আমাদের জমির সব সম্যসা সমাধান করে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। তারা দুইজন মিলে প্রথমে ১৫ হাজার টাকা নেয়। এরপর নায়েব দুরুল হুদা বলে এই সামান্য টাকা দিয়ে কাজ হবে না। পরে এক দালালসহ আমাদের সঙ্গে ৯৭ হাজার টাকা চুক্তি করেন। কয়েক ধাপে নায়েব ও তার দালাল ৯৭ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই কাজের কোনো সমাধান হয়নি বা নায়েব আমাদের টাকাও ফেরত দেয়নি।

ধনপাড়া গ্রামের মোছা. মেঘনা নামে ভুক্তভোগী এক নারী জানান, জমি খারিজের পর খাজনা দেয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি। কিন্তু অফিসের নায়েব অনুমোদন দেননি। আবার আবেদন করেছি। প্রায় ৬ মাস ধরে অফিসে ঘুরছি। অফিসের পিওন সোহাগের কাছেও ঘুরেছি। এখনও অনুমোদন মেলেনি, খাজনাও দিতে পারিনি।

পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার তুরুকবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে নায়েবের কাছে গেলে তার একজন দালাল আমার কাছ থেকে জমির কাগজপত্র নেয়। পরে কী-জানি এন্টি করতে হবে এজন্য ২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। আমি তাদের চাহিদামতো টাকা দিইনি বলে খাজনা দেয়া হয়নি। এছাড়া চলতি বছরে আমার কয়েক দাগে জমির খারিজ করে নিয়েছি। সেই খাজিরের ৪৬ শতাংশ জমির খাজনা দিতে অফিসে গেলে নায়েব দুরুল হুদা আমার কাছে ৩১ হাজার ৮১৮ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা তাকে না দেয়ায় খাজনা দিতে পারিনি। পরে নায়েবের কাছে আবার গেলে তিনি আমার জমির হোল্ডিং বের করে জমির নানা সমস্যা তুলে ধরেন। এরপর টাকা না পেয়ে হোল্ডিংয়ে লাল কালির চিহ্ন দিয়ে দেয়।

হরিশপুর গ্রামের সোলাইমান জানান, আমার ৪৫ শতাংশ জমির খাজনা দেয়ার জন্য পিওন সোহাগ খাজনার চেক করে দিবে বলে ১৩ হাজার টাকা দাবি করেন। সেইদিন চাহিদামতো টাকা দিইনি বলে খাজনা করে দেননি।

মিরাট উত্তরপাড়া গ্রামের ফাহাদ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে গেলে অফিসের কুদ্দুস ও সোহাগ ১০ হাজার টাকা চায়। এরপর তারা আমাকে বেশ কয়েকদিন ঘুরিয়ে ১০ হাজার টাকা নিয়ে মাত্র ৭৭২ টাকার খাজনার চেক করে দিয়েছে। একই এলাকার ফজলু সরদার ও মজনু সরদার দুই ভাই। তারা কয়েক মাস আগে পৃথক দলিলে ৬ শতাংশ জমির খারিজের জন্য সোহাগের হাতে ঘুষ দিয়েছিলেন ৫ হাজার টাকা। কাজ হওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী আরও ৭ হাজার টাকা দেয়ার কথা আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ঘুরেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী দুরুল হুদা কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আমি কোনো কথা বলবো না।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে প্রসেস সার্ভার কুদ্দুসের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পিওন সোহাগও ফোন রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

তারাগজ্ঞে মব সন্ত্রাসে দুই জনকে হত্যা: ৮ পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত, তদন্তে কমিটি

ছবি

চলে গেলেন বামপন্থি তাত্ত্বিক ও শিক্ষাবিদ যতীন সরকার

ছবি

রংপুরে জাতীয় পার্টির তিন নেতার কুশপুত্তলিকা দাহ

ছবি

সংসদে নারী আসন ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির

ছবি

মধুপুর গড়ে ফলছে একসঙ্গে ছয় ফসল

ছবি

ভেড়ামারায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু

ছবি

হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম সাপের কামড়ে ৫ জনের মৃত্যু

ছবি

লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

গজারিয়ার বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু

ছবি

হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ কালিহাতীবাসী

ছবি

সিলেটে ২ হাজার টাকার জন্য যুবককে খুন

ছবি

গোয়ালন্দে যুব ও কৃষক লীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ১৫ স্বর্ণবার উদ্ধার

ছবি

শেরপুরে ঢলের পানিতে ফসলি জমি থইথই

ছবি

ঝালকাঠিতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

ছবি

আড়াইহাজারে ট্রাক, সিএনজি ও অটোরিক্সা মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২, আহত ৫

ছবি

পটিয়া বাইপাস সড়কে বাস-কার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ১২

ছবি

বিপৎসীমার দ্বারপ্রান্তে পদ্মা, ডুবেছে চর, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি

গ্রাহকের আমানত আত্মসাৎ: আহমেদীয়া সমবায়ের ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ছবি

জন্ম নিবন্ধন জটিলতা: বিচার বঞ্চিত যৌনকর্মী ও পথশিশুরা

ছবি

চার দিনে বিমান তৈরি, আকাশে উড়ালো রাজবাড়ীর খুদে আবিষ্কারক রাহুল

ছবি

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: ময়মনসিংহে ৪৬তম বিসিএসের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন

ছবি

একুশে পদকপ্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয়সংগীত সাধক পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরীর জীবনাবসান

ছবি

বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়লো ১৫ কেজির পাঙাশ

ছবি

না ফেরার দেশে ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি মাহফুজা খানম

ছবি

চট্টগ্রামে আ’লীগের মিছিল থেকে পুলিশকে কুপিয়ে জখম, দুই মামলায় গ্রেপ্তার ১৮

ছবি

জাতিসংঘ শান্তিপদক পেলেন বাংলাদেশের ৬৮ নারী পুলিশ

ছবি

ধর্ষণচেষ্টার আসামি আদালতে জামিন না পাওয়ায় আবারও বাদীর পরিবারকে মারধর

ছবি

কালিহাতীতে বয়েল মাঠে দৃষ্টিনন্দন খড়ের গাদা

ছবি

কুষ্টিয়ায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, স্বামীর হত্যার দায় স্বীকার

ছবি

বাগেরহাট পৌরসভার অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

ছবি

প্রেমের টানে চীনা যুবক দিনাজপুরে

ছবি

ঘিওরে শিক্ষকদের নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক কর্মশালা

ছবি

ধনবাড়ী জমিদার বাড়ির পুকুরের মাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা!

ছবি

গোয়ালন্দে যুব দিবস উদযাপন

ছবি

দীঘিনালায় দুর্যোগবিষয়ক অধিপরামর্শক সভা

tab

সারাদেশ

‘ঘুষের’ আখড়া; রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস!

প্রতিনিধি, রাণীনগর (নওগাঁ)

বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫

নওগাঁর রাণীনগরে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ অফিসের উপ-সহকারী (নায়েব) সহ অফিসে কর্মরতদের চাহিদা মতো ঘুষ দিলেই হয় কাজ, না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাগ্রহীতাদের।

অভিযোগ উঠেছে, মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী দুরুল হুদা, প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ। তারা তিনজন মিলেমিশে এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে ঘুষের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ও মিরাট ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস ছিল কাশিমপুরে। ভূমিসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত এলাকা মিরাট ইউনিয়নের জন্য গত প্রায় সাত মাস আগে হামিদপুর বাজার এলাকায় নতুন করে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস করা হয়। ওই ভূমি অফিসের উপ-সহকারী হিসেবে যোগদান করেন দুরুল হুদা। আর প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে- খাজনার অনুমোদন, খাজনার চেক করে দিতে, খারিজের প্রতিবেদন-প্রস্তাব, হোল্ডিং এন্ট্রিসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন দিতে দুই হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার, ২০ হাজার, এমনকি লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন দুরুল হুদা, কুদ্দুস ও সোহাগ। সেবাপ্রত্যাশীরা তাদের চাহিদা মতো ঘুষ দিলে কাজ হয়, না দিলে ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অফিসে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগও। অফিসের স্টাফদের মতে দুইজন দালাল সব সময় থাকেন অফিসে। দালালদের মধ্যস্ততায় সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তারা।

জায়গা-জমির খারিজ (নামজারি) করিয়ে দিতে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা নেয়া হয় ঘুষ। খারিজের জন্য কেউ ঘুষ দিয়েও ঘুরছে দিনের পর দিন। আবার টাকার বিনিময়ে গোপনে দেয়া হয় প্রস্তাবিত খতিয়ান। খারিজ শেষে কেউ হোল্ডিং খুলতে গেলে বা কেউ খাজনা দিতে গেলে সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানি করে। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজ সম্পন্ন করে দেয়।

মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের রায়হান রাফু জানান, আমাদের একটি জমির খারিজের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মিসকেস করেছে। এই মিসকেস থেকে কীভাবে উদ্ধার হওয়া যায় সেজন্য মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবের কাছে যাই। নায়েব দুরুল হুদা ও তার সঙ্গে থাকা একজন দালাল আমাদের জমির সব সম্যসা সমাধান করে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। তারা দুইজন মিলে প্রথমে ১৫ হাজার টাকা নেয়। এরপর নায়েব দুরুল হুদা বলে এই সামান্য টাকা দিয়ে কাজ হবে না। পরে এক দালালসহ আমাদের সঙ্গে ৯৭ হাজার টাকা চুক্তি করেন। কয়েক ধাপে নায়েব ও তার দালাল ৯৭ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই কাজের কোনো সমাধান হয়নি বা নায়েব আমাদের টাকাও ফেরত দেয়নি।

ধনপাড়া গ্রামের মোছা. মেঘনা নামে ভুক্তভোগী এক নারী জানান, জমি খারিজের পর খাজনা দেয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি। কিন্তু অফিসের নায়েব অনুমোদন দেননি। আবার আবেদন করেছি। প্রায় ৬ মাস ধরে অফিসে ঘুরছি। অফিসের পিওন সোহাগের কাছেও ঘুরেছি। এখনও অনুমোদন মেলেনি, খাজনাও দিতে পারিনি।

পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার তুরুকবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে নায়েবের কাছে গেলে তার একজন দালাল আমার কাছ থেকে জমির কাগজপত্র নেয়। পরে কী-জানি এন্টি করতে হবে এজন্য ২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। আমি তাদের চাহিদামতো টাকা দিইনি বলে খাজনা দেয়া হয়নি। এছাড়া চলতি বছরে আমার কয়েক দাগে জমির খারিজ করে নিয়েছি। সেই খাজিরের ৪৬ শতাংশ জমির খাজনা দিতে অফিসে গেলে নায়েব দুরুল হুদা আমার কাছে ৩১ হাজার ৮১৮ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা তাকে না দেয়ায় খাজনা দিতে পারিনি। পরে নায়েবের কাছে আবার গেলে তিনি আমার জমির হোল্ডিং বের করে জমির নানা সমস্যা তুলে ধরেন। এরপর টাকা না পেয়ে হোল্ডিংয়ে লাল কালির চিহ্ন দিয়ে দেয়।

হরিশপুর গ্রামের সোলাইমান জানান, আমার ৪৫ শতাংশ জমির খাজনা দেয়ার জন্য পিওন সোহাগ খাজনার চেক করে দিবে বলে ১৩ হাজার টাকা দাবি করেন। সেইদিন চাহিদামতো টাকা দিইনি বলে খাজনা করে দেননি।

মিরাট উত্তরপাড়া গ্রামের ফাহাদ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে গেলে অফিসের কুদ্দুস ও সোহাগ ১০ হাজার টাকা চায়। এরপর তারা আমাকে বেশ কয়েকদিন ঘুরিয়ে ১০ হাজার টাকা নিয়ে মাত্র ৭৭২ টাকার খাজনার চেক করে দিয়েছে। একই এলাকার ফজলু সরদার ও মজনু সরদার দুই ভাই। তারা কয়েক মাস আগে পৃথক দলিলে ৬ শতাংশ জমির খারিজের জন্য সোহাগের হাতে ঘুষ দিয়েছিলেন ৫ হাজার টাকা। কাজ হওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী আরও ৭ হাজার টাকা দেয়ার কথা আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ঘুরেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী দুরুল হুদা কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আমি কোনো কথা বলবো না।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে প্রসেস সার্ভার কুদ্দুসের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পিওন সোহাগও ফোন রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top