ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন। স্বাধীনতা অর্জনে তার অবদান এবং ত্যাগ আমরা স্বীকার করি। কিন্তু তার শাসনামলে যে জাতীয় ট্র্যাজেডির অবতারণা হয়েছিল, সে কথাও আমরা স্মরণ করি।’
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ৫০তম বার্ষিকীতে এক ফেইসবুক পোস্টে শেখ মুজিবের বন্দনাকে ‘মুজিববাদ’ ও ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কেন্দ্র’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
ইংরেজিতে দেয়া নাহিদের পোস্টে বলা হয়েছে, শেখ মুজিবের শাসনামলে বাংলাদেশ ‘ভারতের করদ রাজ্যে’ পরিণত হয়েছিল। ১৯৭২ সালে একটি ‘গণবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল’। আর সেখানেই ‘লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যা এবং এক দলীয় স্বৈরতন্ত্র বাকশালের ভিত্তি’ স্থাপিত হয়েছিল।
স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি। তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি। বিদেশে থাকায় কেবল প্রাণে বেঁচে যান তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এনসিপি নেতা নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূলেই রয়েছে মুজিব পূজা ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা। রাজনৈতিক এই ব্যক্তি পূজার মাধ্যমে জনগণের ওপর নিপীড়ন, লুটতরাজ এবং জাতিকে প্রথম শ্রেণী দ্বিতীয় শ্রেণীতে বিভক্ত করাই ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এটি গণতন্ত্রের নামে আধুনিক সামন্ততন্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল সব মানুষের সংগ্রাম।’
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের ‘রাজনীতির মূলোৎপাটন’ হয়েছে দাবি করে নাহিদ বলেন, ‘বহু বছর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে পৈতৃক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছে। শাসন ব্যবস্থার মধ্যে কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। শেখ মুজিবের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি ও দমনপীড়নকে ন্যায্যতা দিয়েছে।’
‘২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান এই জামিদারির মূলোৎপাটন করেছে। আগামী দিনে কোনো ব্যক্তি, কোনো পরিবার কিংবা মতাদর্শ আবার নতুন করে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। কিংবা নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে পারবে না।’
শেখ মুজিবের ‘জাতির পিতা’ উপাধি আওয়ামী লীগের বানানো একটি ‘অস্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘এটা হচ্ছে ভিন্ন মত দমন ও রাষ্ট্রে একদলীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অস্ত্র। বাংলাদেশ এদেশের সব নাগরিকের। একক কোনো ব্যক্তি এই রাষ্ট্রের অভ্যুদয় কিংবা ভবিষ্যতের একক মালিকানা দাবি করতে পারে না।’
আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের সমালোচনা করতে গিয়ে বার বার ‘মুজিববাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন নাহিদ।
তিনি লিখেছেন, ‘মুজিববাদ’ হচ্ছে শেখ মুজিব ও স্বাধীনতা যুদ্ধের নামে একটি ফ্যাসিবাদী মতবাদ। আমাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় বরং ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে।’
‘মুজিবাদ হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ও বিভক্তির মতবাদ। এর প্রয়োগ হচ্ছে- গুম, হত্যা, ধর্ষণ এবং পদ্ধতিগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ হচ্ছে জাতীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার। এর প্রয়োগ হয়েছে- ইসলামবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘুদের জমি দখল। এর মানে হলো বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া। বিগত ১৬ বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে জিইয়ে রাখা হয়েছিল; আর তার সেই মূর্তির আড়ালে চলেছে অপহরণ, হত্যা, লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ।’
এনসিপি আহ্বায়ক লিখেছেন, ‘মুজিববাদ একটা বাস্তব আপদ, যা দমন করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক, আদর্শিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। আমাদের সংগ্রাম একটি রিপাবলিক বা জনগণের রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। সমান নাগরিক অধিকারের একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। যেখানে কোনো দল, কোনো পরিবার জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না। বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয় এটি জনগণের রাষ্ট্র।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন। স্বাধীনতা অর্জনে তার অবদান এবং ত্যাগ আমরা স্বীকার করি। কিন্তু তার শাসনামলে যে জাতীয় ট্র্যাজেডির অবতারণা হয়েছিল, সে কথাও আমরা স্মরণ করি।’
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ৫০তম বার্ষিকীতে এক ফেইসবুক পোস্টে শেখ মুজিবের বন্দনাকে ‘মুজিববাদ’ ও ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কেন্দ্র’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
ইংরেজিতে দেয়া নাহিদের পোস্টে বলা হয়েছে, শেখ মুজিবের শাসনামলে বাংলাদেশ ‘ভারতের করদ রাজ্যে’ পরিণত হয়েছিল। ১৯৭২ সালে একটি ‘গণবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল’। আর সেখানেই ‘লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যা এবং এক দলীয় স্বৈরতন্ত্র বাকশালের ভিত্তি’ স্থাপিত হয়েছিল।
স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি। তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি। বিদেশে থাকায় কেবল প্রাণে বেঁচে যান তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এনসিপি নেতা নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূলেই রয়েছে মুজিব পূজা ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা। রাজনৈতিক এই ব্যক্তি পূজার মাধ্যমে জনগণের ওপর নিপীড়ন, লুটতরাজ এবং জাতিকে প্রথম শ্রেণী দ্বিতীয় শ্রেণীতে বিভক্ত করাই ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এটি গণতন্ত্রের নামে আধুনিক সামন্ততন্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল সব মানুষের সংগ্রাম।’
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের ‘রাজনীতির মূলোৎপাটন’ হয়েছে দাবি করে নাহিদ বলেন, ‘বহু বছর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে পৈতৃক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছে। শাসন ব্যবস্থার মধ্যে কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। শেখ মুজিবের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি ও দমনপীড়নকে ন্যায্যতা দিয়েছে।’
‘২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান এই জামিদারির মূলোৎপাটন করেছে। আগামী দিনে কোনো ব্যক্তি, কোনো পরিবার কিংবা মতাদর্শ আবার নতুন করে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। কিংবা নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে পারবে না।’
শেখ মুজিবের ‘জাতির পিতা’ উপাধি আওয়ামী লীগের বানানো একটি ‘অস্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘এটা হচ্ছে ভিন্ন মত দমন ও রাষ্ট্রে একদলীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অস্ত্র। বাংলাদেশ এদেশের সব নাগরিকের। একক কোনো ব্যক্তি এই রাষ্ট্রের অভ্যুদয় কিংবা ভবিষ্যতের একক মালিকানা দাবি করতে পারে না।’
আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের সমালোচনা করতে গিয়ে বার বার ‘মুজিববাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন নাহিদ।
তিনি লিখেছেন, ‘মুজিববাদ’ হচ্ছে শেখ মুজিব ও স্বাধীনতা যুদ্ধের নামে একটি ফ্যাসিবাদী মতবাদ। আমাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় বরং ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে।’
‘মুজিবাদ হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ও বিভক্তির মতবাদ। এর প্রয়োগ হচ্ছে- গুম, হত্যা, ধর্ষণ এবং পদ্ধতিগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ হচ্ছে জাতীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার। এর প্রয়োগ হয়েছে- ইসলামবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘুদের জমি দখল। এর মানে হলো বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া। বিগত ১৬ বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে জিইয়ে রাখা হয়েছিল; আর তার সেই মূর্তির আড়ালে চলেছে অপহরণ, হত্যা, লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ।’
এনসিপি আহ্বায়ক লিখেছেন, ‘মুজিববাদ একটা বাস্তব আপদ, যা দমন করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক, আদর্শিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। আমাদের সংগ্রাম একটি রিপাবলিক বা জনগণের রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। সমান নাগরিক অধিকারের একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। যেখানে কোনো দল, কোনো পরিবার জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না। বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয় এটি জনগণের রাষ্ট্র।’