রাজশাহীতে হিমাগারে ডাকাতি, লুটপাট, ২ ডাকাত গ্রেপ্তার: সিআইডি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দুর্বল নিরাপত্তার কারণে নাটোর জেলার রাষ্ট্রায়ত্ত সুগার মিলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর মতিঝিল চিনি ভবনের গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম তদন্ত শেষে সম্প্রতি এমন রিপোর্ট পেশ করেছেন। চিনি ভবনের সচিব মজিবুর রহমান শনিবার,(১৬ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে সংবাদকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এরপরও মিলে ডাকাতির ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে ও মালামাল উদ্ধারে জেলা পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজশাহীতে হিমাগারের শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা ও চোখ বেঁধে ৩ লাখ ৩৩ হাজার নগদ টাকাসহ ৬৩ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় জড়িত ২ ডাকাতকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির মালিকবাগ প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন খান সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান শনিবার সংবাদকে জানান, সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন আদালতে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
জেলা পুলিশ ও সিআইডি যৌথভাবে সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করছেন। এখন মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। শিগগিরই মালামাল উদ্ধার হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য গত ২ আগস্ট শনিবার গভীর রাত থেকে ৩ আগস্ট ভোর পর্যন্ত সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতদল মিলের ভিতর থেকে ৯০ লাখ ৪০ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) অঞ্জন কুমার রায় বাদী হয়ে নাটোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার পরপর নাটোর সুগার মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক অঞ্জন কুমার রায় থানায় লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ডাকাতদলের সংখ্যা অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জন হবে। ডাকাতরা সুগার মিলের কারখানার ভিতরের প্রধান গেইট ভেঙে ভিতরে ঢুকে। তারা কারখানার ১০ জন নিরাপত্তা প্রহরীর হাঁত ও মুখ বেঁধে সবাইকে একত্রিত করে একটি রুমে নিয়ে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখে। ওই সময় কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরীকে মারপিট করেছে।
ডাকাতদল কারখানার ভিতরে থাকা মালামাল লুট করে পিকআপ ট্রাকযোগে নিয়ে যায়। তাদের কথা ও ধরনের বোঝা গেছে তারা নাটোরের স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে। আশপাশের জেলার কয়েকজন আছে বলে তাদের কথাবার্তায় বোঝা গেছে। ডাকাতদলের সদস্যদের মধ্যে কয়েকজনের পরনে লুঙ্গি ও হাফফ্যান্ট ছিল।
লুটকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে মিল হাউজ গান মেটাল জার্নাল বিয়ারিং। প্রতিটি বিয়ারিংয়ের ওজন ১৬০ কেজি। এ ধরনের ১০টি বিয়ারিং- যার মূল্য প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। ওয়েল্ডিং ক্যাবল ১ পিস। মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন সাইজের ব্রাশ শ্যাফট (ওজন প্রায় ৩শ’ কেজি) ১২টি। মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন পাম্পের ইম্মেরাল ব্রাশ ৮পিস। মূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা। বিভিন্ন পাম্পের ইনারপ্লেট ৪ পিস। মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, মিল হাউজের ফিটিং বুশ, ২ পিস। মূল্য ২০ হাজার টাকা। নিরাপ পাম্প ১ পিস। মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। ব্যবহৃত আলমারির দরকারি ট্যুলস। মূল্য ৫ লাখ টাকা। মোলাসেল পাম্পের স্টার ও রোটর ব্রাশ ২ পিস। মূল্য ২ লাখ টাকা। মিল হাউজের স্ক্রীল্ড জুন পাম্প ২টি, মূল্য ৬ লাখ টাকা। পুরনো বাতিলকৃত বিভিন্ন সাইজের বুশ ৬০টি। মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ওয়েব্রীজের মালামাল লোড সেল- ৫ টনের ১৯টিসহ বিভিন্ন মালামাল। মূল্য ২ লাখ টাকা। ইলেকট্রিক্যাল তারসহ বিভিন্ন প্রকারের মালামাল। যার মূল্য ১০ লাখ টাকাসহ লুণ্ঠিত মালামালের আনুমানিক মূল্য ৯০ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
সুগার মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মামলা দায়ের করার পর সংবাদকে জানান, নাটোরে প্রায় ৩৫ একর জায়গার ওপর এ সুগার মিলস্। কারাখান ছাড়াও আবাসিক, কলোনী, স্কুল, খেলার মাঠ, ভিতরে পুকুরসহ অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। ১৯৮৪ সাল থেকে এই চিনির কলটি চালু আছে। প্রতি বছর গড়ে ৬ হাজারের বেশি টন চিনি উৎপাদন করা হয়। ১১৮০ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ৫২৫ জন জনবল আছে।
সুগার মিলের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে ৩৮ জন শ্রমিক। তারা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে তিন শিফটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার দিন রাতে ভিতরে ৮ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। ডাকাতির সময় ওই এলাকায় প্রচ- বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে ডাকাতি ও ট্রাকযোগে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ৩৫ একর জায়গার ওপর সুগার মিল। অথচ সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। খোদ চিনি ভবনের তদন্ত কমিটি সরজমিনে তদন্ত করে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তাদের তদন্তে বলা হচ্ছে, দুর্বল নিরাপত্তার কারণে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে বলে তারা তদন্তে বলেছেন। সেখানে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো দরকার বলে পুলিশসহ স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
নাটোর জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, নাটোর সুগার মিল বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল। পর্যাপ্ত বাউন্ডারি নেই। ভিতরে লোকজন যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানেন। তাদেরকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনাটি তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
হিমাগারে ডাকাতি :
সিআইডি মালিবাগ প্রধান কার্যালয় থেকে সংবাদকে জানিয়েছেন, গত ৭ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার দেশ কোল্ড স্টোর নামক একটি হিমাগারে একদল ডাকাত ঢুকে। তারা নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমিকদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হিমাগারের পাওয়ার হাউজ, প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্ষিত মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
শুধু তাই না, হিমাগারের অফিসের বিভিন্ন রুমের আলমারি ভাঙচুর করে নগদ ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকাসহ প্রায় ৬৩ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় মোহনপুর থানায় গত ৭ আগস্ট একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অজ্ঞাত নামা ৩০ থেকে ৩৫ জন ডাকাতের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ডাকাতরা শ্রমিকদেরকে হাত-পা ও চোখ বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেছিল বলে এজাহারে বলা হয়েছে। ট্রাকযোগে লুটকৃত মালামাল নিয়ে গেছে।
সিআইডির টিম ও মেট্রোর বিশেষদল আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খোদ ঢাকার আশুলিয়া ও গাজীপুরের কোণাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাজেদুল ইসলাম ও রুবেল নামে ২ সন্দেহভাজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে সিআইডি কাজ করছেন।
নাটোরে সুগার মিলে ডাকাতি ও রাজশাহীতে হিমাগারে ডাকাতির ঘটনা সিআইডির টিম কাজ করছে। সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।
রাজশাহীতে হিমাগারে ডাকাতি, লুটপাট, ২ ডাকাত গ্রেপ্তার: সিআইডি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
দুর্বল নিরাপত্তার কারণে নাটোর জেলার রাষ্ট্রায়ত্ত সুগার মিলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর মতিঝিল চিনি ভবনের গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম তদন্ত শেষে সম্প্রতি এমন রিপোর্ট পেশ করেছেন। চিনি ভবনের সচিব মজিবুর রহমান শনিবার,(১৬ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে সংবাদকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এরপরও মিলে ডাকাতির ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে ও মালামাল উদ্ধারে জেলা পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজশাহীতে হিমাগারের শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা ও চোখ বেঁধে ৩ লাখ ৩৩ হাজার নগদ টাকাসহ ৬৩ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় জড়িত ২ ডাকাতকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির মালিকবাগ প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন খান সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান শনিবার সংবাদকে জানান, সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন আদালতে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
জেলা পুলিশ ও সিআইডি যৌথভাবে সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করছেন। এখন মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। শিগগিরই মালামাল উদ্ধার হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য গত ২ আগস্ট শনিবার গভীর রাত থেকে ৩ আগস্ট ভোর পর্যন্ত সুগার মিলে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতদল মিলের ভিতর থেকে ৯০ লাখ ৪০ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) অঞ্জন কুমার রায় বাদী হয়ে নাটোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার পরপর নাটোর সুগার মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক অঞ্জন কুমার রায় থানায় লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ডাকাতদলের সংখ্যা অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জন হবে। ডাকাতরা সুগার মিলের কারখানার ভিতরের প্রধান গেইট ভেঙে ভিতরে ঢুকে। তারা কারখানার ১০ জন নিরাপত্তা প্রহরীর হাঁত ও মুখ বেঁধে সবাইকে একত্রিত করে একটি রুমে নিয়ে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখে। ওই সময় কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরীকে মারপিট করেছে।
ডাকাতদল কারখানার ভিতরে থাকা মালামাল লুট করে পিকআপ ট্রাকযোগে নিয়ে যায়। তাদের কথা ও ধরনের বোঝা গেছে তারা নাটোরের স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে। আশপাশের জেলার কয়েকজন আছে বলে তাদের কথাবার্তায় বোঝা গেছে। ডাকাতদলের সদস্যদের মধ্যে কয়েকজনের পরনে লুঙ্গি ও হাফফ্যান্ট ছিল।
লুটকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে মিল হাউজ গান মেটাল জার্নাল বিয়ারিং। প্রতিটি বিয়ারিংয়ের ওজন ১৬০ কেজি। এ ধরনের ১০টি বিয়ারিং- যার মূল্য প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। ওয়েল্ডিং ক্যাবল ১ পিস। মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন সাইজের ব্রাশ শ্যাফট (ওজন প্রায় ৩শ’ কেজি) ১২টি। মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন পাম্পের ইম্মেরাল ব্রাশ ৮পিস। মূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা। বিভিন্ন পাম্পের ইনারপ্লেট ৪ পিস। মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, মিল হাউজের ফিটিং বুশ, ২ পিস। মূল্য ২০ হাজার টাকা। নিরাপ পাম্প ১ পিস। মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। ব্যবহৃত আলমারির দরকারি ট্যুলস। মূল্য ৫ লাখ টাকা। মোলাসেল পাম্পের স্টার ও রোটর ব্রাশ ২ পিস। মূল্য ২ লাখ টাকা। মিল হাউজের স্ক্রীল্ড জুন পাম্প ২টি, মূল্য ৬ লাখ টাকা। পুরনো বাতিলকৃত বিভিন্ন সাইজের বুশ ৬০টি। মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ওয়েব্রীজের মালামাল লোড সেল- ৫ টনের ১৯টিসহ বিভিন্ন মালামাল। মূল্য ২ লাখ টাকা। ইলেকট্রিক্যাল তারসহ বিভিন্ন প্রকারের মালামাল। যার মূল্য ১০ লাখ টাকাসহ লুণ্ঠিত মালামালের আনুমানিক মূল্য ৯০ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
সুগার মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মামলা দায়ের করার পর সংবাদকে জানান, নাটোরে প্রায় ৩৫ একর জায়গার ওপর এ সুগার মিলস্। কারাখান ছাড়াও আবাসিক, কলোনী, স্কুল, খেলার মাঠ, ভিতরে পুকুরসহ অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। ১৯৮৪ সাল থেকে এই চিনির কলটি চালু আছে। প্রতি বছর গড়ে ৬ হাজারের বেশি টন চিনি উৎপাদন করা হয়। ১১৮০ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ৫২৫ জন জনবল আছে।
সুগার মিলের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে ৩৮ জন শ্রমিক। তারা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে তিন শিফটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার দিন রাতে ভিতরে ৮ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। ডাকাতির সময় ওই এলাকায় প্রচ- বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে ডাকাতি ও ট্রাকযোগে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ৩৫ একর জায়গার ওপর সুগার মিল। অথচ সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। খোদ চিনি ভবনের তদন্ত কমিটি সরজমিনে তদন্ত করে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তাদের তদন্তে বলা হচ্ছে, দুর্বল নিরাপত্তার কারণে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে বলে তারা তদন্তে বলেছেন। সেখানে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো দরকার বলে পুলিশসহ স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
নাটোর জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, নাটোর সুগার মিল বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল। পর্যাপ্ত বাউন্ডারি নেই। ভিতরে লোকজন যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানেন। তাদেরকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনাটি তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
হিমাগারে ডাকাতি :
সিআইডি মালিবাগ প্রধান কার্যালয় থেকে সংবাদকে জানিয়েছেন, গত ৭ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার দেশ কোল্ড স্টোর নামক একটি হিমাগারে একদল ডাকাত ঢুকে। তারা নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমিকদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হিমাগারের পাওয়ার হাউজ, প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্ষিত মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
শুধু তাই না, হিমাগারের অফিসের বিভিন্ন রুমের আলমারি ভাঙচুর করে নগদ ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকাসহ প্রায় ৬৩ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় মোহনপুর থানায় গত ৭ আগস্ট একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অজ্ঞাত নামা ৩০ থেকে ৩৫ জন ডাকাতের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ডাকাতরা শ্রমিকদেরকে হাত-পা ও চোখ বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেছিল বলে এজাহারে বলা হয়েছে। ট্রাকযোগে লুটকৃত মালামাল নিয়ে গেছে।
সিআইডির টিম ও মেট্রোর বিশেষদল আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খোদ ঢাকার আশুলিয়া ও গাজীপুরের কোণাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাজেদুল ইসলাম ও রুবেল নামে ২ সন্দেহভাজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে সিআইডি কাজ করছেন।
নাটোরে সুগার মিলে ডাকাতি ও রাজশাহীতে হিমাগারে ডাকাতির ঘটনা সিআইডির টিম কাজ করছে। সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।