পীরগঞ্জ (রংপুর) : আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে ধস -সংবাদ
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ধসে পড়েছে। গত সপ্তাহ থেকে বাঁধের ব্লকগুলো খসে পড়া শুরু করে। ভাঙন রোধে এখন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের কাজ, দুর্বল মনিটরিং এবং যথাযথ ডাম্পিং ছাড়া বৃষ্টির মধ্যে ব্লক বসানোর কারণে এ ধসের ঘটনা ঘটে। তাদের দাবি, প্রকল্প শুরুর পর থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
চতরা এলাকার গফুর মিয়া বলেন, এ যাবতে নদীর বাম সাইটের প্রায় ২শ মিটার ব্লক ২ বার ধসে পড়ছে এবং ঠিকাদারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গেই মেরামত করছে। নদীর পানিতে ব্লক ডাম্পিং নেই যে কারণে পানিতে ঢলে পরছে ব্লক। পাথর সিমেন্টের কাজ বাঁশ দিয়ে করা যায় না।
একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম জানান, জোড়াতালি দিয়ে করা হচ্ছে নদী সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে বর্ষা মৌসুমে। ব্লকের কাজে ওই নদীর বালুও ব্যাবহার করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু স্থানের ব্লক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও নি¤œমানের ইটের খোয়ার ওপর ব্লক বসানোর কারণে ভেঙ্গে ও দেবে যাচ্ছে।
ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে তারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই বাঁধ ধসে পড়েছে। কাজ নিম্নমানের হয়েছে বলেই এ ঘটনা ঘটেছে নদী তীরের চতরা আশয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা পরিমল চন্দ্র। তিনি বলেন, নদীর সাইড ঠিকভাবে দুরমুজ বা ফিনিশিং না করে পানির মধ্যে ব্লক বসিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার। এজন্য আমার ঘরের সামনে ব্লক ফাটল ধরেছে। নদীর বাম তীর পুরোটাই ধসে যাওয়ার ভয়ে আছি। কারণ এই সাইটের অনেক ব্লক এমনিতেই দেবে ও ফাঁকা হচ্ছে। সঠিকভাবে তদারকির অভাবে এ কাজটি খারা করা হয়েছে।
কাজটি রংপুরের হাসিবুর রহমান নামে এক ঠিকাদার পেলেও সেটি বাস্তবায়ন করছ ভরদ প্রসাদ নামে এক ঠিকাদার। ওই ঠিকাদারের ম্যানেজার শ্যামল বাবু সংবাদকে বলেন, আমরা কাজটি দেরি করে বর্ষা মৌসুমে শুরু করেছি। যেগুলো সমস্যা হয়েছে সেগুলো আবার ঠিক করে দিবে হবে। এখন কি আর ওই সিস্যুয়েশন আছে কাজ করেই দিতে হবে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ওখানকার কাজ দেবে গেছে এজন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার ঠিক করে দেবে। এক বছর থাকে ঠিকাদারের ডিফেক্ট লাইবেলিটিজ প্রিয়ড। এরেমধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদার তার খরচে ঠিক করে দেবে বলেন তিনি।
পাউবোর রংপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আখিরা শাখা নদী রক্ষায় চতরা ইউনিয়নের চতরা হাট এলাকায় ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য কাজ পায় হাসিবুল হাসান নামে এক ঠিকাদার। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ফেব্রয়ারী মাসে এ কাজ শুরু হয়। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
অথচ স্থানীয়রা বলছেন, কাজ গত বছর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয়েছে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে। কাজ দেরিতে শুরু হওয়ার কারণ জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম আরোও বলেন, আসলে ওখানকার খালটি লিজ দেয়া ছিল মৎস্য অফিস থেকে সেখান থেকে লিজ ক্যান্সেল হয় এপ্রিলে। এরপর কাজটি শুরু করতে ডিলে হয়ে যায়। তবে এটি এখনও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোটনদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন শিরোনামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে আখিরার শাখা নদীর তীর সংরক্ষণে বাঁধ নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধণের কাজটি শুরু হয়।
পীরগঞ্জ (রংপুর) : আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে ধস -সংবাদ
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ধসে পড়েছে। গত সপ্তাহ থেকে বাঁধের ব্লকগুলো খসে পড়া শুরু করে। ভাঙন রোধে এখন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের কাজ, দুর্বল মনিটরিং এবং যথাযথ ডাম্পিং ছাড়া বৃষ্টির মধ্যে ব্লক বসানোর কারণে এ ধসের ঘটনা ঘটে। তাদের দাবি, প্রকল্প শুরুর পর থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
চতরা এলাকার গফুর মিয়া বলেন, এ যাবতে নদীর বাম সাইটের প্রায় ২শ মিটার ব্লক ২ বার ধসে পড়ছে এবং ঠিকাদারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গেই মেরামত করছে। নদীর পানিতে ব্লক ডাম্পিং নেই যে কারণে পানিতে ঢলে পরছে ব্লক। পাথর সিমেন্টের কাজ বাঁশ দিয়ে করা যায় না।
একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম জানান, জোড়াতালি দিয়ে করা হচ্ছে নদী সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে বর্ষা মৌসুমে। ব্লকের কাজে ওই নদীর বালুও ব্যাবহার করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু স্থানের ব্লক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও নি¤œমানের ইটের খোয়ার ওপর ব্লক বসানোর কারণে ভেঙ্গে ও দেবে যাচ্ছে।
ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে তারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই বাঁধ ধসে পড়েছে। কাজ নিম্নমানের হয়েছে বলেই এ ঘটনা ঘটেছে নদী তীরের চতরা আশয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা পরিমল চন্দ্র। তিনি বলেন, নদীর সাইড ঠিকভাবে দুরমুজ বা ফিনিশিং না করে পানির মধ্যে ব্লক বসিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার। এজন্য আমার ঘরের সামনে ব্লক ফাটল ধরেছে। নদীর বাম তীর পুরোটাই ধসে যাওয়ার ভয়ে আছি। কারণ এই সাইটের অনেক ব্লক এমনিতেই দেবে ও ফাঁকা হচ্ছে। সঠিকভাবে তদারকির অভাবে এ কাজটি খারা করা হয়েছে।
কাজটি রংপুরের হাসিবুর রহমান নামে এক ঠিকাদার পেলেও সেটি বাস্তবায়ন করছ ভরদ প্রসাদ নামে এক ঠিকাদার। ওই ঠিকাদারের ম্যানেজার শ্যামল বাবু সংবাদকে বলেন, আমরা কাজটি দেরি করে বর্ষা মৌসুমে শুরু করেছি। যেগুলো সমস্যা হয়েছে সেগুলো আবার ঠিক করে দিবে হবে। এখন কি আর ওই সিস্যুয়েশন আছে কাজ করেই দিতে হবে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ওখানকার কাজ দেবে গেছে এজন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার ঠিক করে দেবে। এক বছর থাকে ঠিকাদারের ডিফেক্ট লাইবেলিটিজ প্রিয়ড। এরেমধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদার তার খরচে ঠিক করে দেবে বলেন তিনি।
পাউবোর রংপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আখিরা শাখা নদী রক্ষায় চতরা ইউনিয়নের চতরা হাট এলাকায় ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য কাজ পায় হাসিবুল হাসান নামে এক ঠিকাদার। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ফেব্রয়ারী মাসে এ কাজ শুরু হয়। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
অথচ স্থানীয়রা বলছেন, কাজ গত বছর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয়েছে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে। কাজ দেরিতে শুরু হওয়ার কারণ জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম আরোও বলেন, আসলে ওখানকার খালটি লিজ দেয়া ছিল মৎস্য অফিস থেকে সেখান থেকে লিজ ক্যান্সেল হয় এপ্রিলে। এরপর কাজটি শুরু করতে ডিলে হয়ে যায়। তবে এটি এখনও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোটনদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন শিরোনামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে আখিরার শাখা নদীর তীর সংরক্ষণে বাঁধ নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধণের কাজটি শুরু হয়।