নীলফামারীর ডিমলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুরে তিস্তা নদীর ডান তীরের ভাঙনকবলিত এলাকা হতে শক্তিশালী বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি প্রভাবশালী চক্র ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাকের ডগা ভাঙন এলাকার ১০০ ফুট গভীর হতে বালু উত্তোলন করছে।
তিস্তায় চতুর্থ বারের হওয়া বন্যার পানি নেমে গেছে। বন্যার পরবর্তী ডিস্তার ডানতীর এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙছে তো মাঠের পর মাঠ। তিস্তা অববাহিকা তীরবর্তী ৭টি ইউনিয়নের ১৫টি মৌজার প্রায় ১৫ হাজার একর সদ্য রোপনকৃত আমন খেত ভেঙে নদীতে চলে গেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৯টি মৌজা। চতুর্থবারের এ বন্যায় পানির প্রবাহে তিস্তা নদীর ডানতীরের ছোটখাতা মৌজার অর্ধেকোই নদীতে চলে গেছে। নতুন নদীর সৃষ্টি হয়ে সহস্রাধিক একর আমন খেতসহ আবাদী জমি এখন তিস্তা নদী। কয়েকদিন আগের ফসলি মাঠ এখন তিস্তা নদীর অথই জল। খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুর নামক স্থানে ডান তীরে এলাকায় ৪টি স্থানে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে ইমারজেন্সি কাজ শুরু করেছে। তবে এলাকাবাসী অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড আত্মঘাতী কাজ করছেন। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোর ভাঙন পয়েন্ট কমপক্ষে ৭টি শক্তিশালী বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগে ভরাট করে ভাঙন রোধে ব্যর্থ চেষ্টা করা হচ্ছে যা অনেকটাই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলছে এলাকাবাসী। এর ফলে ভাঙন রোধ তো দূরের কথা ভাঙন আরও বাড়বে। সাময়িকভাবে ভাঙন রোধ করা হলেও ভাঙন এলাকায় গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ ফাঁকা হওয়ার কারণে ভবিষ্যতে নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়ে নদীর প্রসার ঘটবে।
ডালিয়া পাউবো কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভাঙন রোধে ইমারজেন্সি ওয়ার্কের কজে জিও ব্যাগে বালু ভরাট করার জন্য তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন করার বিধান আছে।
ফসলি জমি হারিয়ে হাজারো কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছে। বন্যা কবলিত এলাকা ও ভাঙনকবলিত এলাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বন্যা কবলিত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জমা দিয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চতুর্থবারের মতো তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এর আগে ২৯ জুলাই রাতে প্রথমবার ৭ সেন্টিমিটার, ৩ আগস্ট ৪০ সেন্টিমিটার এবং ১২ আগস্ট ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুঁনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ডান তীর এলাকার ১৫টি মৌজায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য তফেল মেম্বারের বাড়ির পাশ দিয়ে নদীর একটি নতুন শাখা সৃষ্টি হয়ে সহস্রাধীক একর আবাদি জমি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে শতাধিক পরিবার গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে নিরাপদের জন্য আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেয়।
ভাঙন কবলিত এলাকায় তিস্তা নদীর তলদেশ হতে বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, জরুরি ভাঙন রোধের কাজে তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর জন্য ঠিকাদাররা দায়ী। আমি তাদেরকে নিষেধ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। দ্রুত মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হবে। অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
নীলফামারীর ডিমলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুরে তিস্তা নদীর ডান তীরের ভাঙনকবলিত এলাকা হতে শক্তিশালী বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি প্রভাবশালী চক্র ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাকের ডগা ভাঙন এলাকার ১০০ ফুট গভীর হতে বালু উত্তোলন করছে।
তিস্তায় চতুর্থ বারের হওয়া বন্যার পানি নেমে গেছে। বন্যার পরবর্তী ডিস্তার ডানতীর এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙছে তো মাঠের পর মাঠ। তিস্তা অববাহিকা তীরবর্তী ৭টি ইউনিয়নের ১৫টি মৌজার প্রায় ১৫ হাজার একর সদ্য রোপনকৃত আমন খেত ভেঙে নদীতে চলে গেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৯টি মৌজা। চতুর্থবারের এ বন্যায় পানির প্রবাহে তিস্তা নদীর ডানতীরের ছোটখাতা মৌজার অর্ধেকোই নদীতে চলে গেছে। নতুন নদীর সৃষ্টি হয়ে সহস্রাধিক একর আমন খেতসহ আবাদী জমি এখন তিস্তা নদী। কয়েকদিন আগের ফসলি মাঠ এখন তিস্তা নদীর অথই জল। খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুর নামক স্থানে ডান তীরে এলাকায় ৪টি স্থানে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে ইমারজেন্সি কাজ শুরু করেছে। তবে এলাকাবাসী অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড আত্মঘাতী কাজ করছেন। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোর ভাঙন পয়েন্ট কমপক্ষে ৭টি শক্তিশালী বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগে ভরাট করে ভাঙন রোধে ব্যর্থ চেষ্টা করা হচ্ছে যা অনেকটাই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলছে এলাকাবাসী। এর ফলে ভাঙন রোধ তো দূরের কথা ভাঙন আরও বাড়বে। সাময়িকভাবে ভাঙন রোধ করা হলেও ভাঙন এলাকায় গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ ফাঁকা হওয়ার কারণে ভবিষ্যতে নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়ে নদীর প্রসার ঘটবে।
ডালিয়া পাউবো কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভাঙন রোধে ইমারজেন্সি ওয়ার্কের কজে জিও ব্যাগে বালু ভরাট করার জন্য তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন করার বিধান আছে।
ফসলি জমি হারিয়ে হাজারো কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছে। বন্যা কবলিত এলাকা ও ভাঙনকবলিত এলাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বন্যা কবলিত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জমা দিয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চতুর্থবারের মতো তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এর আগে ২৯ জুলাই রাতে প্রথমবার ৭ সেন্টিমিটার, ৩ আগস্ট ৪০ সেন্টিমিটার এবং ১২ আগস্ট ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুঁনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ডান তীর এলাকার ১৫টি মৌজায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য তফেল মেম্বারের বাড়ির পাশ দিয়ে নদীর একটি নতুন শাখা সৃষ্টি হয়ে সহস্রাধীক একর আবাদি জমি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে শতাধিক পরিবার গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে নিরাপদের জন্য আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেয়।
ভাঙন কবলিত এলাকায় তিস্তা নদীর তলদেশ হতে বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, জরুরি ভাঙন রোধের কাজে তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর জন্য ঠিকাদাররা দায়ী। আমি তাদেরকে নিষেধ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। দ্রুত মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হবে। অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।