আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপরে
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আত্রাই উপজেলার প্রায় ১০হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া চলাচলের পাকা সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৮/১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। আর বৃষ্টিপাত না হলে হয়তো খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পানি কমা শুরু হবে।
জানা গেছে,একটানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। একই সাথে নদীতে বৃদ্ধি পাওয়ায় আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বন্যার পানিতে হাজার হাজার বিঘা রোপনকৃত ধান এবং বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়ে যায়। তবে এপর্যন্ত আত্রাই নদীর আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে পানির সমতল বিপদ সিমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার বিকেল থেকে বিপদ সীমা অতিক্রম করতে থাকে। শনিবার শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওই পয়েন্টে বিপদ সিমা অতিক্রম করে ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানিয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় বেশ কিছু বাড়ী-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলার পতিসর-সমসপাড়া সড়কের ৩কিলোমিটার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে ওই সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ওই এলাকার মাঝগ্রাম,হেঙ্গলকান্দি,পৈসাওতা,জগন্নাতপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছে। এছাড়া ফটকিয়া,বাঁশবাড়িয়া,বিশা,দমদত্তবাড়িয়াসহ আরো কয়েক গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছেন। নদীর স্লুইচ গেট,ব্রীজ,কালভার্ট দিয়ে হু হু করে মাঠে পানি ডুকছে। এতে কাশিয়াবাড়ী,ভোঁপাড়া,পালশা,কচুয়া,মারিয়া,নওদুলি,নৈদীঘি,মনিয়ারী,হেঙ্গলকান্দি,মাঝগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে ১০হাজার বিঘা জমির রোপনকৃত আমন ধান ও বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন জানান,তার রোপনকৃত ১৬বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে।
আত্রাই উপজেলার পালশা গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম জানান,তিনি প্রায় ৯৫বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। গত কয়েক দিনে সবগুলো ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে প্রায় ৬লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
আত্রাই উপজেলার হেঙ্গলকান্দি গ্রামের কৃষক রুবেল চৌধুরী জানান,তিনি প্রায় ২২বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলে,কিন্তু বন্যার পানিতে সবগুলো ধান ডুবে গেছে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ কুমার জানান,গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সাড়ে ১০হাজার বিঘা জমির আমন ধান ও অন্যান্য ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। মাঠে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি ঘন্টায় ফসল ডুবে যাচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান,নদ-নদীর পানি বিপদ সিমা অতিক্রম করায় বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এবং নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছে। তবে এখনো কোন বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে পরেনি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন,অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে শুক্রবার বিকেল থেকে আত্রাই নদীর পানি বিপদ সিমা অতিক্রম করতে থাকে। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে নদীর পানি সমতল বিপদ সিমার ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে আত্রাই এবং রাণীনগরে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ কাম পাকা সড়কের নান্দাইবাড়ী,রসুলপুর,লালুয়া,জগদাস,ভাঙ্গাজাঙ্গাল,বৈঠাখালি ও নন্দনালীসহ ৮/১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব চিহ্নিত স্থানগুলোতে সার্বক্ষনিক নজরদারি করা হচ্ছে। তিনি বলেন,ইতি মধ্যে শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত অনেকটায় কমেগেছে এবং উজানেও নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে ২/১দিনের মধ্যেই আত্রাই নদীর পানিও কমতে শুরু করবে বলে আসা করছেন তিনি।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন,বন্যায় দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ইতি মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আত্রাই উপজেলার কোথাও কোন বাঁধ ভেঙে যায়নি। ঝুঁকিপূর্ন এলাকা ঘুরে দেখে সার্বিক নজরদারী করা হচ্ছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপরে
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আত্রাই উপজেলার প্রায় ১০হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া চলাচলের পাকা সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৮/১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। আর বৃষ্টিপাত না হলে হয়তো খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পানি কমা শুরু হবে।
জানা গেছে,একটানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। একই সাথে নদীতে বৃদ্ধি পাওয়ায় আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বন্যার পানিতে হাজার হাজার বিঘা রোপনকৃত ধান এবং বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়ে যায়। তবে এপর্যন্ত আত্রাই নদীর আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে পানির সমতল বিপদ সিমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার বিকেল থেকে বিপদ সীমা অতিক্রম করতে থাকে। শনিবার শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওই পয়েন্টে বিপদ সিমা অতিক্রম করে ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানিয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় বেশ কিছু বাড়ী-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলার পতিসর-সমসপাড়া সড়কের ৩কিলোমিটার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে ওই সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ওই এলাকার মাঝগ্রাম,হেঙ্গলকান্দি,পৈসাওতা,জগন্নাতপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছে। এছাড়া ফটকিয়া,বাঁশবাড়িয়া,বিশা,দমদত্তবাড়িয়াসহ আরো কয়েক গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছেন। নদীর স্লুইচ গেট,ব্রীজ,কালভার্ট দিয়ে হু হু করে মাঠে পানি ডুকছে। এতে কাশিয়াবাড়ী,ভোঁপাড়া,পালশা,কচুয়া,মারিয়া,নওদুলি,নৈদীঘি,মনিয়ারী,হেঙ্গলকান্দি,মাঝগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে ১০হাজার বিঘা জমির রোপনকৃত আমন ধান ও বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন জানান,তার রোপনকৃত ১৬বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে।
আত্রাই উপজেলার পালশা গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম জানান,তিনি প্রায় ৯৫বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। গত কয়েক দিনে সবগুলো ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে প্রায় ৬লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
আত্রাই উপজেলার হেঙ্গলকান্দি গ্রামের কৃষক রুবেল চৌধুরী জানান,তিনি প্রায় ২২বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলে,কিন্তু বন্যার পানিতে সবগুলো ধান ডুবে গেছে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ কুমার জানান,গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সাড়ে ১০হাজার বিঘা জমির আমন ধান ও অন্যান্য ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। মাঠে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি ঘন্টায় ফসল ডুবে যাচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান,নদ-নদীর পানি বিপদ সিমা অতিক্রম করায় বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এবং নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পরেছে। তবে এখনো কোন বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে পরেনি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন,অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে শুক্রবার বিকেল থেকে আত্রাই নদীর পানি বিপদ সিমা অতিক্রম করতে থাকে। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে নদীর পানি সমতল বিপদ সিমার ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে আত্রাই এবং রাণীনগরে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ কাম পাকা সড়কের নান্দাইবাড়ী,রসুলপুর,লালুয়া,জগদাস,ভাঙ্গাজাঙ্গাল,বৈঠাখালি ও নন্দনালীসহ ৮/১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব চিহ্নিত স্থানগুলোতে সার্বক্ষনিক নজরদারি করা হচ্ছে। তিনি বলেন,ইতি মধ্যে শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত অনেকটায় কমেগেছে এবং উজানেও নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে ২/১দিনের মধ্যেই আত্রাই নদীর পানিও কমতে শুরু করবে বলে আসা করছেন তিনি।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন,বন্যায় দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ইতি মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আত্রাই উপজেলার কোথাও কোন বাঁধ ভেঙে যায়নি। ঝুঁকিপূর্ন এলাকা ঘুরে দেখে সার্বিক নজরদারী করা হচ্ছে।