ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মাগুরার মোহাম্মদপুর ও শ্রীপুর উপজেলার গড়াই ও মধুমতি নদী তীরের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দার অবস্থা এখন এমনই। সম্প্রতি ওই এলাকায় নদীতে বিশাল আকৃতির এক বা একাধিক কুমির দেখা দিয়েছে। এতে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে। ব্যাহত হচ্ছে নদী ঘেঁষা মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও জীবিকা।
মাগুরার গড়াই ও মধুমতি নদী পাড়ের কয়েকশো ঘাটে প্রতিদিনই গোসল করা, কাপড় কাচা, গৃহস্থলী প্রয়োজনে পানি নেয়া, মাছ মারা, বালুকোয়ারি থেকে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন কাজে ভিড় জমাতো হাজারও মানুষ।
ছোট-বড় নৌকা নিয়ে জেলেরা ব্যস্ত থাকতেন মাছ ধরায়, নদীপথ ছিল কোলাহলে ভরা। কিন্তু কুমির আতঙ্কে এখন সে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নদী পাড়ের রুই জানি, ভোলানাথপুর, পলাশবাড়িয়া, নাকোল, ঘাসিয়ারাসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে এখানকার জনসাধারণ ব্যাপকভাবে কুমির আতঙ্কে ভুগছেন।
শ্রীপুরের ঘাসিয়াড়ায় গড়াই নদীর ঘাটে স্থানীয় গৃহবধূ অঞ্জলি রানী, সুমাইয়া আক্তার, রেশমি সুলতানাসহ একাধিক গ্রামবাসী জানান, কুমিরের ভয়ে এখন আর নদীতে নামতে পারি না। সবাই আতঙ্কে আছি। নদীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময়ে বিশালাকৃতির যে কুমিরের দেখা মিলেছে ফেইসবুকের কল্যাণে সেগুলো এখন ভাইরাল। এদিকে আমরা যারা নদী পাড়ের মানুষ তারা পড়েছি বিপাকে। ভয়ে এখন আর বাচ্চাদের নিয়ে নদীতে কেউ গোসল করতে আসে না। কখন কোথায় কুমির কাকে আক্রমণ করবে এটাতো কেউ বলতে পারে না। তাই সবাই সাবধান হচ্ছে।
সম্প্রতি নদীতে বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার কুমির দেখা গেছে। এখানে কুমিরের সংখ্যা কয়টি সে সম্পর্কেও কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। ফলে ৫০ কিলোমিটারজুড়ে নদীতে এখন শুধুই নীরবতা।
মহাম্মদপুর উপজেলার এলাংখালী ব্রীজসংলগ্ন জেলে পল্লীর আদুরেই গত শনিবার দেখা গিয়েছিল বিশাল আকৃতির একটি কুমির। এরপর থেকে অধিকাংশ জেলেরা মাছ মারতে নদীতে যাচ্ছেন না বলে জানালেন মৎস্যজীবী অনিল বিশ্বাস, হাজারীলালসহ অনেকে। যাদের বড় নৌকা আছে তারা কেউ কেউ ভয়ে ভয়ে মাছ মারতে নামছেন। তবে প্রাণহানির শংকায় পারতপক্ষে কেউই পানিতে নামছেন না। তারা বলেন ‘পেটের দায়ে নদীতে নামতেই হয়। কিন্তু প্রতিদিন ভয়ে থাকি কুমির যদি হঠাৎ আক্রমণ করে বসে।’
এর ফলে নদীর ওপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। মাছ ধরা, নৌযান চলাচল, এমনকি নদী তীরবর্তী দোকানপাটেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।
এলাকাবাসী জানান , জরুরি পদক্ষেপ না নিলে এই আতঙ্ক আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। কুমির আতঙ্কে স্তব্ধ গড়াই ও মধুমতি নদীপথ। দ্রুত সমাধান না এলে নদী ঘেঁষা মানুষের জীবন-জীবিকা আরও সংকটে পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রূপক আইচ জানান, কুমির এখন অনেকটাই বিপন্ন প্রায় প্রাণী। খাদ্যের সন্ধানে অথবা পথ ভুল করে সে হয়তো লোকালয়ে চলে এসেছে। লোকালয়ে চলে আসায় এর জীবন এখন অনেকটাই সংকটাপণ্য। যেকোনো সময় জেলেদের জালে আটকে এটির জীবনহানি হতে পারে। এজন্য প্রশাসন ও জনগণ উভয়েরই সচেতন হওয়া জরুরি।
এ প্রসঙ্গে মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম জানান, ‘কয়েকদিন ধরে মাগুরার বিভিন্ন নদীতে কুমির দেখা যাওয়ার ঘটনাটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কুমির যেহেতু একটি জলজ প্রাণী।
নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা লোকালয়ে চলে আসতে পারে। সেজন্য নদী পাড়ের মানুষদের একটু সাবধানে থাকতে হবে। আমি জেলা মৎস্য বিভাগকে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। তবে কোনো কারণে কুমির যেন কেউ পিটিয়ে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা না করে সেজন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
মাগুরার মোহাম্মদপুর ও শ্রীপুর উপজেলার গড়াই ও মধুমতি নদী তীরের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দার অবস্থা এখন এমনই। সম্প্রতি ওই এলাকায় নদীতে বিশাল আকৃতির এক বা একাধিক কুমির দেখা দিয়েছে। এতে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে। ব্যাহত হচ্ছে নদী ঘেঁষা মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও জীবিকা।
মাগুরার গড়াই ও মধুমতি নদী পাড়ের কয়েকশো ঘাটে প্রতিদিনই গোসল করা, কাপড় কাচা, গৃহস্থলী প্রয়োজনে পানি নেয়া, মাছ মারা, বালুকোয়ারি থেকে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন কাজে ভিড় জমাতো হাজারও মানুষ।
ছোট-বড় নৌকা নিয়ে জেলেরা ব্যস্ত থাকতেন মাছ ধরায়, নদীপথ ছিল কোলাহলে ভরা। কিন্তু কুমির আতঙ্কে এখন সে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নদী পাড়ের রুই জানি, ভোলানাথপুর, পলাশবাড়িয়া, নাকোল, ঘাসিয়ারাসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে এখানকার জনসাধারণ ব্যাপকভাবে কুমির আতঙ্কে ভুগছেন।
শ্রীপুরের ঘাসিয়াড়ায় গড়াই নদীর ঘাটে স্থানীয় গৃহবধূ অঞ্জলি রানী, সুমাইয়া আক্তার, রেশমি সুলতানাসহ একাধিক গ্রামবাসী জানান, কুমিরের ভয়ে এখন আর নদীতে নামতে পারি না। সবাই আতঙ্কে আছি। নদীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময়ে বিশালাকৃতির যে কুমিরের দেখা মিলেছে ফেইসবুকের কল্যাণে সেগুলো এখন ভাইরাল। এদিকে আমরা যারা নদী পাড়ের মানুষ তারা পড়েছি বিপাকে। ভয়ে এখন আর বাচ্চাদের নিয়ে নদীতে কেউ গোসল করতে আসে না। কখন কোথায় কুমির কাকে আক্রমণ করবে এটাতো কেউ বলতে পারে না। তাই সবাই সাবধান হচ্ছে।
সম্প্রতি নদীতে বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার কুমির দেখা গেছে। এখানে কুমিরের সংখ্যা কয়টি সে সম্পর্কেও কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। ফলে ৫০ কিলোমিটারজুড়ে নদীতে এখন শুধুই নীরবতা।
মহাম্মদপুর উপজেলার এলাংখালী ব্রীজসংলগ্ন জেলে পল্লীর আদুরেই গত শনিবার দেখা গিয়েছিল বিশাল আকৃতির একটি কুমির। এরপর থেকে অধিকাংশ জেলেরা মাছ মারতে নদীতে যাচ্ছেন না বলে জানালেন মৎস্যজীবী অনিল বিশ্বাস, হাজারীলালসহ অনেকে। যাদের বড় নৌকা আছে তারা কেউ কেউ ভয়ে ভয়ে মাছ মারতে নামছেন। তবে প্রাণহানির শংকায় পারতপক্ষে কেউই পানিতে নামছেন না। তারা বলেন ‘পেটের দায়ে নদীতে নামতেই হয়। কিন্তু প্রতিদিন ভয়ে থাকি কুমির যদি হঠাৎ আক্রমণ করে বসে।’
এর ফলে নদীর ওপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। মাছ ধরা, নৌযান চলাচল, এমনকি নদী তীরবর্তী দোকানপাটেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।
এলাকাবাসী জানান , জরুরি পদক্ষেপ না নিলে এই আতঙ্ক আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। কুমির আতঙ্কে স্তব্ধ গড়াই ও মধুমতি নদীপথ। দ্রুত সমাধান না এলে নদী ঘেঁষা মানুষের জীবন-জীবিকা আরও সংকটে পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রূপক আইচ জানান, কুমির এখন অনেকটাই বিপন্ন প্রায় প্রাণী। খাদ্যের সন্ধানে অথবা পথ ভুল করে সে হয়তো লোকালয়ে চলে এসেছে। লোকালয়ে চলে আসায় এর জীবন এখন অনেকটাই সংকটাপণ্য। যেকোনো সময় জেলেদের জালে আটকে এটির জীবনহানি হতে পারে। এজন্য প্রশাসন ও জনগণ উভয়েরই সচেতন হওয়া জরুরি।
এ প্রসঙ্গে মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম জানান, ‘কয়েকদিন ধরে মাগুরার বিভিন্ন নদীতে কুমির দেখা যাওয়ার ঘটনাটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কুমির যেহেতু একটি জলজ প্রাণী।
নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা লোকালয়ে চলে আসতে পারে। সেজন্য নদী পাড়ের মানুষদের একটু সাবধানে থাকতে হবে। আমি জেলা মৎস্য বিভাগকে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। তবে কোনো কারণে কুমির যেন কেউ পিটিয়ে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা না করে সেজন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।