ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়নও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই উত্তরাঞ্চলে উয়ন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য করেছেন। সে কারণে উত্তরের মানুষ উন্নয়ন থেকে পিছেয়ে রয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে সেতুটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে তাগাদা দিয়েছি। সে কারণে সময়ের আগে এলাকার মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সেতুটি উদ্বোধন করতে পেয়ে আমরা আনন্দিত। সেতুটির নামকরণ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ করার পিছনে কারণ হচ্ছে, মওলানা ভাসানী বাংলার একজন মজলুম জননেতা। তিনি সব সময়ে মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন। নদীর পানি সুষম বণ্টনের ক্ষেত্রে ভারতের আগ্রাসনের শিকার তিস্তা পাড়ের মানুষ। মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় কুড়িগ্রামবাসী অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা যাতায়াত করতে পারবেন। সেই সঙ্গে এ এলাকার মানুষের জীবনমান এবং উন্নয়নের পথ অনেকটা সুগম হলো। এখন থেকে কৃষিপণ্য সরবরাহসহ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে। সেতু এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠলে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কুড়িগ্রামবাসীকে আর রংপুর হয়ে ঘুরে ঢাকায় যেতে হবে না। এতে ১৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে এবং সময় বাঁচবে চার ঘণ্টা। উপদেষ্টা আরও বলেন, সেতুর চিলমারী এলাকায় কিছু কাজ বাকি রয়েছে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে।
বুধবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার-কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার ‘মওলানা ভাসানী সেতুর’ (তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু) উদ্বোধন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন- প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মালেক, ডাইরেক্টর জেনারেল অব এশিয়া অপারেশনস ড. সৌউদ আইস আল সামরী, শুভেছা বক্তব্য দেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজেম আহমদ, এনসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আখতার হোসেন, গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মো. আব্দুর রহিম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. বাবুল আহমেদ।
প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণে উপদেষ্টা ফিতা কেটে উদ্বোধনের আগেই হাজার হাজার জনগণ প্রশাসনের ব্যারিকেড ভেঙে সেতুর ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর কোনোমতে ফিতে কেটে উদ্বোধন করেন। এর আগে উপদেষ্টা সৈয়দপর বিমানবন্দর হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুপুরের খাবার খান তিনি।
উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আবুল হাসান, সহকারী একান্ত সচিব মো. আয়মন হাসান রাহাত, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল আলম ভূঁইয়া রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনিছুল ওয়াহাব খান, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদ, গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস, সচিবের একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার, উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ। তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক আ.ব.ম শরিয়তুল্লাহ মাস্টার বলেন, সেতুটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত কাজের মেয়াদ রয়েছে। তার মাঝে তড়িঘড়ি করে এটি উদ্বোধনের প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া এখনও অনেক জমির মালিক ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পায়নি। তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতুটির নির্মাণকাজের সূচনা হয়।
উপজেলার পাঁচপীর বাজারস্থ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এস এ এস এর নির্বাহী পরিচালক এ বি এম নূরুল আকতার মজনু বলেন, সেতুটির নামকরণ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ করায় এলাকার অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুটির নামকরণ ‘শরিয়তুল্লাহ মাস্টার সেতু’ করার জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার- কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছে চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি টাকা।
২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের পর ২০২১ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
দ্বিতীয় বারের মতো ২০২০ সালের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়নও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই উত্তরাঞ্চলে উয়ন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য করেছেন। সে কারণে উত্তরের মানুষ উন্নয়ন থেকে পিছেয়ে রয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে সেতুটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে তাগাদা দিয়েছি। সে কারণে সময়ের আগে এলাকার মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সেতুটি উদ্বোধন করতে পেয়ে আমরা আনন্দিত। সেতুটির নামকরণ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ করার পিছনে কারণ হচ্ছে, মওলানা ভাসানী বাংলার একজন মজলুম জননেতা। তিনি সব সময়ে মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন। নদীর পানি সুষম বণ্টনের ক্ষেত্রে ভারতের আগ্রাসনের শিকার তিস্তা পাড়ের মানুষ। মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় কুড়িগ্রামবাসী অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা যাতায়াত করতে পারবেন। সেই সঙ্গে এ এলাকার মানুষের জীবনমান এবং উন্নয়নের পথ অনেকটা সুগম হলো। এখন থেকে কৃষিপণ্য সরবরাহসহ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে। সেতু এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠলে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কুড়িগ্রামবাসীকে আর রংপুর হয়ে ঘুরে ঢাকায় যেতে হবে না। এতে ১৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে এবং সময় বাঁচবে চার ঘণ্টা। উপদেষ্টা আরও বলেন, সেতুর চিলমারী এলাকায় কিছু কাজ বাকি রয়েছে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে।
বুধবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার-কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার ‘মওলানা ভাসানী সেতুর’ (তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু) উদ্বোধন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন- প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মালেক, ডাইরেক্টর জেনারেল অব এশিয়া অপারেশনস ড. সৌউদ আইস আল সামরী, শুভেছা বক্তব্য দেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজেম আহমদ, এনসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আখতার হোসেন, গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মো. আব্দুর রহিম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. বাবুল আহমেদ।
প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণে উপদেষ্টা ফিতা কেটে উদ্বোধনের আগেই হাজার হাজার জনগণ প্রশাসনের ব্যারিকেড ভেঙে সেতুর ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর কোনোমতে ফিতে কেটে উদ্বোধন করেন। এর আগে উপদেষ্টা সৈয়দপর বিমানবন্দর হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুপুরের খাবার খান তিনি।
উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আবুল হাসান, সহকারী একান্ত সচিব মো. আয়মন হাসান রাহাত, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল আলম ভূঁইয়া রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনিছুল ওয়াহাব খান, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদ, গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস, সচিবের একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার, উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ। তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক আ.ব.ম শরিয়তুল্লাহ মাস্টার বলেন, সেতুটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত কাজের মেয়াদ রয়েছে। তার মাঝে তড়িঘড়ি করে এটি উদ্বোধনের প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া এখনও অনেক জমির মালিক ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পায়নি। তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতুটির নির্মাণকাজের সূচনা হয়।
উপজেলার পাঁচপীর বাজারস্থ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এস এ এস এর নির্বাহী পরিচালক এ বি এম নূরুল আকতার মজনু বলেন, সেতুটির নামকরণ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ করায় এলাকার অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুটির নামকরণ ‘শরিয়তুল্লাহ মাস্টার সেতু’ করার জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার- কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছে চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি টাকা।
২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের পর ২০২১ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
দ্বিতীয় বারের মতো ২০২০ সালের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়।